somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন আছি সৌদি আরবে –বিশ পর্ব

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাড়ীভাড়া সমাচার

বাংলাদেশের মতো বাড়িভাড়া নেয়া সৌদি আরবেও এখন বড় সমস্যা।কারন গত একটি বছর যাবৎ এখানেও দিনদিন বাড়িভাড়া বেড়েই যাচ্ছে।তবে আমি আজ বাড়িভাড়া নেয়ার পদ্ধতি এবং সমস্যাগুলির কথা শেয়ার করবো।

সৌদি আরবে বাড়ি তৈরী এবং ভাড়া দেয়া-নেয়ার কাজটি করেন রিয়াল এস্টেট অফিসের মাধ্যমে।যেমন কেঊ (অবশ্যই সৌদিয়ান) বাড়ি বানালে তার ডিজাইন ও প্ল্যান পাশ করানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবেন একটি রিয়াল এস্টেট অফিস আর কেউ যদি নিজের তদারকিতে বানাতে চান তবে অবশ্যই একটি কন্সালটেন্ট অফিসের মাধ্যমে তাকে ডিজাইন করে তা পাশ করিয়ে নিতে হবে।আমাদের মতো ব্যাক্তিগতভাবে রাজউকে দৌড়াতে দেয়া হবেনা।

বাড়ি বানানোর পর বেশিরভাগ বাড়ির মালিক পাচ থেকে দশ বছরের চুক্তিতে বাড়িটি ঐ রিয়াল এস্টেটে দিয়ে দেন।রিয়াল এস্টেটকে এদেশে আকারি বলে।এই আকারি অফিসই বাড়ির অস্থায়ী মালিক বনে যান।বাংলাদেশের প্রচুর লোক এই আকারি অফিসে চাকুরি করেন।বাড়ির সম্পূর্ন রক্ষনাবেক্ষন এই বাংলাদেশী ভাইয়েরাই করে থাকেন।ভাড়াটে থাকা অবস্থায় ইলেক্ট্রিসিটি বা প্লাম্বিং সমস্যার জন্য এরা সর্বদাই নিয়জিত থাকেন।

বাংলাদেশের মতো এদেশেও ব্যাচেলারদের বাসা পাওয়াটাও দুরহ ব্যাপার।ব্যাচেলার বলতে এখানে কর্মজীবি (ছাত্ররা মা-বারার সঙ্গেই থাকে) বিবাহিত এবং অবিবাহিতদেরকেই বুজানো হচ্ছে।এদের জন্য বড় বড় কোম্পানীগুলি শহর থেকে একটি দূরে ক্যাম্প বানিয়ে দেয় বা মধ্যম সারির কোম্পানীগুলি ফ্যামিলি বাসা থেকে একটু দূরে বাসা ভাড়া করে রাখে।এছাড়া ফ্রি-ভিসাতে আসা লোক নিজেরাই রুমভাড়া নিয়ে একই রুমে ৪/৫জন করে নিরাপদ এলাকাতে থাকে।

আমার দেখা একটি অভিজ্ঞতার কথা বলছি।আমার কোম্পানীর কর্মচারীদের জন্য একটি আকারি অফিস থেকে বাড়ি ভাড়া নেই ৬ মাসের চুক্তিতে।এখানে কম করে ৬ বা এক বছরের জন্য বাড়ি ভাড়া নিতে হয় এবং ভাড়াও একত্রে দিতে হয়।আমাদের লোকজন সেখান থেকেই বাসে করে কর্মস্থলে যাতায়ত শুরু করলেন।দিন দশেক পর সেখানকার ফোরম্যান ফোন করে জানালো পার্শ্ববর্তী এক সৌদি লোক এসে এই বাড়ি ছেরে অন্য জায়গায় চলে যেতে বলেছেন।আমরা আকারি অফিসে খোজ নিলাম তিনিও বললেন ঐ বাড়ি ছেরে না দিলে ঐ লোক মতুয়া(ইসলামিক ম্যাজিট্রেট) ডাকার হুমকি দিয়েছেন।তার অভিযোগ ছিল আমাদের লোকেরা বাথরুমে গোসল না করে খোলা উঠোনে সবাই খালি গায়ে গল্প ও গোসল করেন যাহা পাশের বাড়ি থেকে দেখা যায়।তাই তাদেরকে অবশ্যই এখান থেকে চলে যেতে হবে।অনেক দৌড়াদৌড়ি করে কিছুই হলোনা বাসাটা ছাড়তেই হয়েছিল।

অন্যদিকে ফ্যামিলিদের বাসা নেয়াও এদেশে আরেকটা ঝামেলার কাজ।বাসা খুজতে হলে প্রথমেই দেখতে হবে ঐ বাড়ির অন্যান্য ফ্লাটে কারা থাকেন। সৌদি থাকলে প্রথমেই বাদ।আমার এক পরিচিত বন্ধু সৌদি ফ্যামিলির প্রতিবেশী হয়েছিলেন।তার ঘড়ের ভেতর ছোট বাচ্চারা কেন হৈ চৈ করছেন দরজায় টোকা মেরে জিজ্ঞেস করতেন।অথচ তারই নিজের বাচ্চারা বাড়ি মাতিয়ে রাখতো সারাক্ষন। এ ছাড়া নিকট আত্মীয় ব্যাচলর কেন আসছে এই নিয়ে মহা ঝামেলা।আমাদের রান্না করা মসল্লার গন্ধ নিয়েও তাদের আপত্তি।তাই এতোসব ঝামেলায় কেঊ যেতেই চায়না।বন্ধুটিও বাধ্য হয়েছিল বাসাটিই ছেরে দিতে।

এইসব কারনে দেখা যায় বাংলাদেশীরা প্রতিবেশী খোঁজেন বাংলাদেশী,পাকিস্তানী,হায়দ্রাবাদি বা বোম্বের লোকদের।কেরালারা খোঁজেন কেরালা,মাদ্রাজী আর শ্রীলঙ্কানদের।পিলিপিনোরা খোঁজেন শুধুমাত্র ফিলিপিনোদেরকেই। সৌদিবাদে অন্যান্য আরবদের সঙ্গে থাকা অবশ্য অসুবিদা নেই কিন্তু মিশরীয়রা যখন মাছ পুরিয়ে খায় সেই দূর্গন্ধে আমরাতো দুরের কথা ভূতও পালিয়ে যায়।


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ২:৩৫
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×