somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শয়তান

১২ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে প্রায় ৪০-৫০ বৎসর আগে ভারতীয় বিজ্ঞানী শ্রী চন্দ্রশেখর একটি সিম্পোজিয়ামে ব্ল্যাকহোলের সম্ভাব্যতার বিষয়ে প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। তখন এডিংটনের মত বড় বিজ্ঞানী হো হো করে হেসে তাকে পাগল আখ্যা দিয়েছিলেন।

আমরা 'শয়তান' সম্পর্কে অবগত আছি। বিজ্ঞান একে প্রামাণিক অবস্থানে এনে দাঁড় করাতে সক্ষম নয়। ইসলামে শয়তানের বিবেচনাটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক ইমানদারকে তা শর্তহীনভাবে বিশ্বাস করতেই হবে। এখানে বিশ্বাসের উপাদানটিকে বাদ দিলে আজকের পেক্ষাপটেও আমরা জানি না শয়তান আছে কি নেই। বিজ্ঞান সচেতন যে কোন ব্যাক্তির নিকট শয়তানের বিবেচনাটি একটি সন্দেহপূর্ণ বিষয়। এই সন্দেহটি আরো ঘনীভূত হয় যখন শয়তান উর্দ্ধালোকের সংবাদ শুনতে গেলে তাকে উল্কার 'মিসাইল' দ্বারা বিতারনের প্রস্তাব পেশ করা হয় কিংবা বিদ্রোহী শয়তান হতে আকাশ ও পৃথিবীকে রক্ষা করার কথা বলা হয়।

অন্ততঃ একটি কথা আমরা সন্দেহাতীত ভাবেই বলতে পারি যে, জ্ঞানার্জনের সর্বশেষ সীমায় পৌঁছানোর সনদ যেহেতু আমাদের হাতে নেই, সেহেতু যে বিষয়টি একটি বিশ্বাসের বিস্তৃতি নিয়ে বিরাজমান তাকে ঢালাওভাবে অস্বীকার করা যৌক্তিকতা বিবর্জিত। আজ আমরা যেখানে পদার্থবিদ্যার সাথে অধিবিদ্যার (Metaphysics) এর সম্পর্ক স্থাপন করতে সমর্থ নই, সেখানে হয়তোবা আগামী দিনগুলোতে বিজ্ঞানের এই দুইশাখা পরস্পরের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে। সে ক্ষেত্রে আজ আমরা পদার্থবিদ্যার জ্ঞাত আইন-কানুন দিয়ে যেখানে 'শয়তান' সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে সমর্থ নই, সেদিন হয়তোবা এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা মিলবে। আমরা যা প্রস্তাব করতে চাই তা হল, একজন পদার্থবিদ যেন আজকের প্রেক্ষাপটে শয়তানের অবস্থানটিকে ব্যাখ্যাশূণ্যতার কারনে একেবারে বাতিল করে না দেন, হয়তোবা সেক্ষেত্রে বিজ্ঞানী এডিংটন যেমন ব্ল্যাকহোল নিয়ে লজ্জিত হয়েছেন তেমনি তাকেও বিজ্ঞানী এডিংটনের মত একইভাব লজ্জিত হওয়া লাগতে পারে।


ডাইমেনশন জগতের এক একটি সংযোগ এক একটি অনন্ত বিস্তৃতি যোগ করে দেয়। মনে করুন আমরা এমন একটি জগতের মানুষ যেখানে শুধুমাত্র দুইটি ডাইমেনশন কার্যক্ষম আছে, আমাদের এই কল্পিত জগতে শুধুমাত্র দৈর্ঘ ও প্রস্থ এই দুটি ডাইমেনশন কার্যক্ষম আছে। এমন একটি জগতে আমাদের মত জীবন কখনোই সম্ভব হত না। সেখানে সমস্ত জীবের (অদৌ যদি থাকত) আকৃতি কেবল মুদ্রিত ছবির মত হত। এই জগতে কোনো প্রাণীর বংশবিস্তার, প্রেম ও অনন্দ বলে কিছু থাকত না। এখন আমরা যদি এই জগতের সাথে আরও একটি ডাইমেনশন যোগ করে দেই, তখনই এই জগতে নদী, পর্বত, সমুদ্র, গাছ-পালা ও সকল জড় পদার্থের উদ্ভব সম্ভব হবে। কিন্তু শুধুমাত্র এই তিন ডাইমেনশনের জগতের সৃষ্টরা এক অদ্ভুদ দশায় পতিত হবে। তিন ডাইমেনশনের এই জগতে কোন প্রকার জীবের অস্তিত্ব সৃষ্টি করা সম্ভব নয় বা হলেও জন্মের পরপরই তা স্থির ও স্থবির হয়ে পড়বে। যতক্ষন পর্যন্ত না সময়ের ডাইমেনশন যোগ দেয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে জন্ম-মৃত্যু, হ্রাস-বৃদ্ধি, আশা, সুখ, উপভোগ, স্থায়িত্ব ইত্যাদি অসংখ্য অতি জরুরী বিবেচনাগুলিকে কার্যক্ষম করা সম্ভব হবে না। সুতরাং আমরা দেখতে পাই, এক একটি ডাইমেনশন এক একটি মহাবিস্তৃতিকে সৃষ্টিতে বিরাজ করার সুযোগ করে দেয়। এক একটি ডাইমেনশন এক একটি মহাজগতকে আড়াল করে রাখে। অর্থাৎ প্রতিটি ডাইমেনশন জুড়ে দেয়ার সাথে সাথে সৃষ্টির ধারণ-পরিধি অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পায়। গুরুতর কোন সংবাদ না হলেও ফলাফল অবশ্যই গুরুতর এমন একটি তথ্য হল - অনেক নিম্নশ্রেণীর কীটপতঙ্গরা তাদের দৃষ্টিতে বস্তুর আকৃতিকে কেবলমাত্র দুটি ডাইমেনশনে প্রত্যাক্ষ করে, তারা যা দেখে সব কিছু ছবির মতো দেখে। এবং তারা সময়ের অতি প্রয়োজনীয় ডাইমেনশনটি সম্পর্কে মোটেই সচেতন নয়। এই নিম্নশ্রেণীর কীটপতঙ্গদের কোনো পদার্থবিজ্ঞানী (যদি থেকে থাকে) সময়ের ডাইমেনশনটিকে কেবল অস্বীকারই করবে না, তারা একটি সম্প্রসারনশীল মহাবিশ্বের কোনো সম্ভাবনা কোনোখানেই দেখতে সক্ষম হবে না। তাদের দর্শনের এই সীমাবদ্ধতা মহাবিশ্বের বিশালতাকে মথ্যা পর্যবসিত করবে।

শয়তানের প্রসঙ্গটি এমনই কোনো 'ডাইমেনশনাল হাইড আঊটে'র জগতের জ্ঞান কিনা আমরা জানি না। বলা দরকার, বিজ্ঞানীগণ আজ সুদৃঢ় প্রত্যয়ে সৃষ্টিতে মোট এগারটি ডাইমেনশনের কথা বলে যাচ্ছেন। তাদের ধারণা, এই ডাইমেনশনগুলি নিজেদের মধ্যে অর্ন্তমুখী ভাঁজে এবং জটিল পদার্থবিদ্যার নিয়মকানুন সৃষ্টি করে বিরাজমান। এরা ঘটনা, স্থান, কাল, পদার্থ ও তার দর্শককে আমাদের দৃষ্টির আড়ালে রাখতে সক্ষম। এমনি কোন ডাইমেনশনাল ট্রিকের জগতে শয়তানের (জ্বীন এবং ফেরেস্তাও) অবস্থানের বিবেচনাটি আমরা গ্রহণ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারি বটে তবে তাকে অস্বীকার করার কোন উপায় আমাদের নেই।
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×