আমি বুঝে গেছি,সারা জীবন হিমির সান্নিধ্য থেকে আমাকে বঞ্চিত থাকতে হবে।জানি,নারীর কোমলতার স্পর্শ না পেলে পুরুষের জীবন রুক্ষ হয়ে যায়।প্রেম নামের বস্তুটি আমার কপালে নেই।সবচেয়ে ভালো হতো যদি পারতাম- হিমিকে সমস্ত প্রেম উজার করে দিয়ে নিঃস্ব হতে।বিয়ে ব্যাপারটা জঘন্য।যারা বিয়ে করে ফেলে তাদের দিয়ে আর কী হবে?সেদিন বিকেলে টিএসসি'তে আমি হিমিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম-শেক্সপীয়ার পড়েছ?বলতো হ্যামলেট এর শেষ লাইনটা কি?হিমি বলতে পারেনি।আমিই বলে দেই,'অ্যান্ড দা রেস্ট ইজ সাইলেন্স'।প্রতিদিন সন্ধ্যার পর আমি কোনও না কোনো চায়ের দোকানে গিয়ে বসি।আমি চায়ের খুব ভক্ত।নানান জায়গায় ঘুরে চা খেয়েও আমি ঠিক বাসার চায়ের মতো স্বাধ পাইনি।অনেকেই মনে করে পানি ছাড়া খাঁটি দুধের মধ্যে চায়ের পাতা সেদ্ধ করে মুঠো মুঠো চিনি দিলেই বুঝি চা ভালো হয়।তবে হিমি দশ রকম চা বানাতে পারে!
একবার আমি খুব বিপদে পড়েছিলাম।কিন্তু আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেননি।রক্ষা করেছিলেন একজন মানুষ।মানুষই মানুষকে বাঁচায়,হাসায় কাদায়।মানুষ মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে,আবার মানুষই মসজিদ তৈরি করে।কিছু মানুষ খারাপ কাজ করে তার টাকা নেই বলে আর কিছু মানুষ খারাপ কাজ করে তার প্রচুর টাকা আছে বলে!আমি বাঙ্গালি।বাঙ্গালিরা ধর্ম নিয়ে মাতামাতি করে,ধর্ম সংস্কারের ব্যাপারে কেউ কিচ্ছু বললেই গেল গেল রব তোলে,কিন্তু এই বাঙ্গালিরাই ব্যাক্তি জীবনে ধর্মের প্রায় কোনও নির্দেশেই মানে না।সততা,পবিত্রতা,সেবা এই সব ব্যাপারে তারা প্রায় অধার্মিক।বাঙালিরা খুব পরের সমালোচনা করে,পরনিন্দা করে কিন্তু আত্মসমালোচনা করে না।বাইরে খুব উদার মত প্রচার করে,নিজের পরিবারের মধ্যে অতি রক্ষনশীল।খবরের কাগজে,টিভিতে তর্জন গর্জন দেখলে মনে হবে সাহসী,আসলে অত্যন্ত ভীরু।মোট কথা হলো- বাঙালিরা বাইরে যতই উদার,শিক্ষাভিমানী,রুচিশীল ভাব দেখাক,আসলে তারা ভেতরে ভেতরে ভন্ড!মুখে যা বলে নিজে তা বিশ্বাস করে না।হায় এমন ভন্ড আর কোথায় পাবো?হিমি বড় বড় চোখ করে বলল,বাঙালিদের উপর তোমার খুব রাগ দেখছি।তুমি বুঝি বাঙালি নও?আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম- নাঃ,আমিও ওদেরই একজন।আমারও এই সব দোষ আছে।
ইদানিং বাতাসে স্পস্ট একটা পরিবর্তনের গন্ধ পাচ্ছি।আসলে সব নারীরাই অসহায়।আবার ভাবী,অসহায়-দুঃখি হলে তীক্ষ্ম গলায় হাসে কি করে?কথার ভঙ্গিতে কেন এতো লাস্য জড়ানো?তবে কি সবই কৃত্রিম?বঙ্কিমচন্দের উপন্যাসে যেমন সব রমনীদের বর্ননা আছে,সেই সব মেয়েদের একনিষ্ঠতা,কোমলতা,প্রেমের গভীরতা,সেবাপরায়নতা...।আহা কি অপূর্ব সব চরিত্র।তেমন কাউকে পেলে এক্ষুনি বিয়ে করতাম।আজ মেজাজ অনেক খারাপ।সারাদিন একটার পর একটা সিগারেট টেনেছি।ভেবেছিলাম আজ একটা কবিতা লিখব কিন্তু কোনও কবিতার লাইন মাথায় আসছে না।আমি নিয়তিবাদী।এই জন্যই নিজেকে মাঝে মাঝে কাপুরুষ বলে মনে হয়।আসলে সত্য কথা বলতে কি সারা দেশটা কাপুরুষে ভরে গেছে।অনেক আগেই বিদেশী শাসকেরা আমাদের মেরুদন্ড টা ভেঙ্গে দিয়েছে।ইতালি,জার্মানি কেমন ভাবে সংবদ্ধ হয়ে উঠে দাঁড়ালো।আমেরিকানরা কি সুন্দর দেশ চালাচ্ছেন।
লন্ডন আমেরিকাতে প্রচুর বাঙালি আছে।তাদের বেশ কিছু সমিতি আছে।তারা প্রায়ই সভা সমিতি ডেকে,লেখক-গায়ক-নায়কদের সংবর্ধনা দেয়।আত্মমর্যাদা জ্ঞান না থাকলে কোনো জাতি কি বড় হতে পারে?কিন্তু সত্যিকার যারা দেশের মুখোজ্জলকারী তাদের সংবধর্না দেওয়ার কেউ নেই।আমাদের দেশ দরিদ্র বলে পৃথিবীর অন্যদেশ গুলো যে কত অবজ্ঞা করে,তা কি বাঙালিরা বোঝে না?সত্যি কথা বলতে কি দরিদ্র দেশের মানুষের মুখে বড় বড় কথা মানায় না।আমি ফুটবল খেলা খুব পছন্দ করি।তার কারণ তাতে লাথির বদলে লাথি দেওয়া যায়।আঘাতের বদলে প্রত্যাঘাতে বিশ্বাসী।এখনও আমাদের অনেক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হবে,আর লড়াই করার ফলে অনেক আত্মমর্যাদাবোধ জাগবে।বড় কোনও ত্যাগ স্বীকার না করলে কখনও বড় ধরনের শক্তি আয়ত্ব করা যায় না।
আমি ছোটবেলায় কী একটি দৃশ্য দেখেছিলাম,বলি- তখন আমি অনেক ছোট।আমাদের পাশের বাসায় থাকত একটি একান্নবর্তী পরিবার।বাড়ি ভরতি অনেক লোকজন।একদিন বাইরের দিকে একটি ঘরে কী নিয়ে যেন কয়েক জনের মধ্যে প্রবল বাগবিতন্ডা হচ্ছিল।আমি এমনিতে খুব কম কথা বলি।বেশির ভাগ সময়ই চুপচাপ থাকি।উত্তেজিত বা ক্রুদ্ধ হলে খুব জোরে হৈচৈ করি।পাশের বাড়ির হৈচৈ শুনে আমি কৌতুহলী হয়ে সেই ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দেই।দেখি কী,দুইটা মেয়েকে চেয়ারের সাথে বেঁধে রেখেছে,তাদের গায়ে কোন কাপড় নেই।তাদের চোখে মুখে এক আকাশ আতংক।সেদিন আমি ভয়ে শিউরে উঠেছিলাম।এখন এই মধ্য রাত্রে কোথায় যেন গান বাজছে- "এই মানুষে সেই মানুষ আছে/কত মুনি ঋষি চার যুগ ধরে/তারে বেড়াচ্ছে খুঁজে/জলে যেমন চাঁদ দেখা যায়/ধরতে গেলে কে হাতে পায়..."।
জীবন বয়ে চলেছে প্রতিদিনের নিয়মে।মানুষের প্রতিদিনের ঘুম আর শেষ ঘুম কি এক হতে পারে?আমার প্রিয় মানুষ গুলি সব সময় আমার হৃদয়েই থাকে।অনেক দূরে থাকলেও তাদের খুব কাছে অনুভব করি।কিন্তু মজার ব্যাপার হলো- বড় গাছের ছায়া ছোট গাছ গুলোকে বাড়তে দেয় না।আর তাদের জায়গা করে দেওয়ার জন্যই আমাকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়।যখন আমি ঢাকার বাইরে দূরে কোথাও যাই,রাস্তার দু'ধারের চাষের জমি গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকি।এ ফসল দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না যে এ দেশে ভয়াবহ খাদ্যাভাব।দেশের কথা বাদ দিয়ে আমি নিজের কথা ভাবি,আমি কত ভীতু আর লাজুক।ভীতু আর লাজুক ছেলেরাই দেশের শত্রুদের ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারে।
(ইচ্ছা ছিল লেখাটার নাম দিব খোলা জানালা।মেজাজ খুব খারাপ তাই লেখাটার নাম দিলাম বন্ধ জানালা।)
আলোচিত ব্লগ
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন