somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃত সন্ত্রাসী কে?

১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসসালামু আলাইকুম,
ক. সারা দুনিয়ায় এখন 'সন্ত্রাসবাদ'শব্দটি নিয়া এতোই কথাবার্তা হইতেছে যে কান পাতিয়া রাখা দায় হইয়া উঠিয়াছে। বিশেষত ৯/১১-এর পর হইতে সন্ত্রাসবাদ শব্দটি সারা দুনিয়াব্যাপী ইসলামের সহিত সমার্থক করিয়া ফেলা হইতেছে। যেন ইসলাম মানেই সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক। আর মুসলমানেরা সবাই সন্ত্রাসী!!!
কথা হইতেছে অন্যায়ের প্রতিরোধ করা আর অন্যায়-আক্রমণ করা এক জিনিস নহে।এই কাজটি মুসলমানগণ করেন নাই। বরং বিশ্ব-মানবতার প্রবক্তা মার্কিন-ব্রিটিশ জোটই তাহা করিয়া আসিতেছে।সেই সাথে রহিয়াছে তাহাদের অগণন মিত্র দেশ। যাহারাও নিজেদের অন্যায় কর্মকে ঢাকিয়া রাখিবার জন্য বাঘ আসিয়াছে বাঘ আসিয়াছে--সেই কায়দায় সন্ত্রাসবাদ-সন্ত্রাসবাদ কহিয়া পার পাইবার চেষ্টা করিতেছে।
অনেকেই বুঝিয়া না-বুঝিয়া তাহাদের সহিত গলা মিলেইবার চেষ্টা করিতেছে। আমাদের ব্লগেও কেহ-কেহ বলিয়াছেন :
কেন সাধারণ মানুষকে মারবেন??? কে দিয়েছে আপনাকে অধিকার?????? প্রতিরোধ করতে পারলে আমেরিকার সৈন্যদের করুন। ইসরাইলের সৈন্যদের করুন। ট্রেনে, বাসে, থিয়েটারে, রাস্তায় বোম লাগিয়ে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ মারা কেন?
এইটা তাহারা খুউব ভালো কথা কহিয়াছেন। গৌতম বুদ্ধও এইরকম কথা শুনিলে ধন্য-ধন্য করিতেন।

খ. এইবার আমি একটু কহি। বেশি কহিবো না।
@১৯৪৫-এর ৬ আর ৯ আগস্টে যখন জাপানের পরাজয় তথা আত্মসমর্পণ সময়ের ব্যাপার মাত্র সেই সময় মার্কিন-প্রভুগণ হিরোশিমা -নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমা ফেলিয়াছিলেন। সেইখানে নিহতের সংখ্যাটি সকলেই জানেন। তাহার পরেও আপনাদিগকে একটু স্মরণ করাইয়া দিতেছি।
প্রথম চারমাসে হিরোশিমায় ১লক্ষ ৬০ হাজারের মতন আর নাগাসাকিতে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যুবরণ করিয়াছিলেন। সেই করুণ কাহিনীও সকলের জানা। এখন প্রশ্ন হইতেছে হিরোশিমা-নাগাসাকিতে নিহত সকল মানুষই যুদ্ধবাজ সৈনিক ছিলেন?
@ইন্দো-চায়না হইতে মার্কিন-প্রভুর লেজ গুটাইয়া পলায়নের কাহিনীও সচেতন কাহারো অজানা নহে।
সেইখানে প্রায় ২০ বছরের যুদ্ধে মৃতের সংখ্যাটা কতো?
উত্তর হইতেছে : এক ভিয়েতনামেই মৃতের সংখ্যা ৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩০ লক্ষ ভিয়েতনামি আর কম্বোডিয়া ও লাউস--মিলিয়া ২ লক্ষ।
এইখানে লক্ষ করিবেন--- ভিয়েতনামিরা কিন্তু মার্কিন-ভূখন্ডে হামলা করে নাই। বরং মার্কিন-সৈন্যরাই সাত-সাগর পাড়ি দিয়া ভিয়েতনামে যুদ্ধ করিতে আসিয়াছিলো। উচিত শিক্ষা পাইয়া গিয়াছে। তবুও যুদ্ধের খায়েশ মেটে নাই।
@১৯৮২ সালের ১৬ হইতে ১৮ সেপ্টেম্বর--এই ২ দিনেই লেবাননের শাবরা-শাতিলা ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু-শিবিরে হামলা চালাইয়া ৩ হাজার ৫০০জন নিরীহ দেশ-হইতে বিতাড়িত ফিলিস্তিনিগণকে হত্যা করাছিলো ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের সৈন্যরা। উদ্বাস্তু-শিবিরে কিন্তু সশস্ত্র-গেরিলারা বসবাস করেন না। এইটা জানা থাকা সত্ত্বেও ইসরাইল এই হামলা চালাইতে দ্বিধা করে নাই।
@ রয়টারের খবর অনুযায়ী আর ভারতের মানবাধিকার বিশ্লেষকগণের মতে ১৯৮৯ সাল হইতে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত কাশ্মীরে মৃতের সংখ্যা ৪৭ হাজার।
যাহাদের বেশিরভাগই নিরীহ বেসামরিক মানুষ।
@ গার্ডিয়ার আর জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার হিসাব অনুযায়ী আফগানিস্তানে শুধু ২০১০ সালেই ১ হাজার ২ শত ১৭ জন নিরীহ আফগানী মার্কিন-ব্রিটিশ সৈন্যদের ড্রোন সহ অন্যান্য হামলায় নিহত হইয়াছেন। আহতের সংখ্যা ১ হাজার ৯ শত ৯৭ জন
উহাদের কেহই কিন্তু অস্ত্র হাতে যুদ্ধে নামেন নাই।
@ গাজা-য় ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর হইতে ১৮ জানুয়ারি ২০০৯---এই ২২ দিনের বোমা-হামলায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪ শত ১৭ জন। অবশ্য ইসরাইলের পক্ষেও নিরীহ বেসামরিক মানুষ নিহত হইয়াছে।
তাহাদের সংখ্যা কতো?
উত্তর হইতেছে ১৩ জন।
# এইবার হে শ্রদ্ধেয় ব্লগারগণ
আপনারাই জবাব দিন প্রকৃত সন্ত্রাসবাদী কাহারা?
যুদ্ধের অনেক কৌশল রহিয়াছে। মার্কিন-ব্রিটিশ-ইসরাইলের সহিত সম্মুখ যুদ্ধে জয়ী হওয়া অসম্ভব একটি বিষয়। এইটা বাস্তব্।আর এই বাস্তবতাকে স্বীকার করিয়াই প্রতিরোধকামীগণ তাহাদের কৌশল পাল্টাইয়া থাকেন। যুদ্ধের কোনো নির্দিষ্ট কৌশল নাই।
অথচ আমরা যখন মার্কিন-ব্রিটিশ-ইসরাইলের বেসামরিক মানুষদের প্রতি দরদ দেখাইয়া থাকি একটিবারের জন্যও ইরাকি নারী-শিশুদের দূর্ভাগ্যের কথা ভাবি না। সকল ইরাকি নিশ্চয় সাদ্দামের হোসেনের মতন যুদ্ধবাজ নহে। তাহাদের সকলেই অস্ত্র হাতে নিয়া মার্কিন-ব্রিটিশ সৈন্যদের তাড়া করেন নাই।
হে শ্রদ্ধেয় ব্লগারগণ আসুন আমরা সকলেই চিন্তা করিতে শিখি।যে যেভাবে পারি এই যুদ্ধবাজ মার্কিন-ব্রিটিশ শক্তিকে প্রতিহত করি।উহাদের হাত হইতে শুধু ইরাক বা আফগানিস্তান নহে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও নিরাপদ নহে।
পরম করুণাময় আমাদিগকে সহজ সরল শান্তির পথে অগ্রসর হইবার তাওফিক দিন।
সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×