somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্জন বর্জনের রাজনীতি,কালো বেড়াল ও সংসদীয় গণতন্ত্র--ষ্ট্রেইট টক

০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাদ দেন শেখ হাসিনা আর খালেদার জিয়ার কথা। জ্বি, বলছি তাদের প্রতিদিনকার রাজনৈতিক বক্তৃতার কথা। এগুলো নিয়ে আলোচনা করলে নিজের মাথার চুল নিজেকেই ছিড়তে হবে। তার থেকে বরং চলুন দেখি অনেক নিন্দা কুড়ালেও কিছু কিছু রাজনীতিক কিছু কিছু সময় কি সব বাস্তব সত্য ও প্রকৃত দেশপ্রেমিকের মতো কথা বলেছেন, বলেছেন সাহসী বীরের মতো। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একেবারে প্রথম দিকে সৈয়দ আশরাফ বলেছিলেন, আমাদের দেশের সরকারের মেয়াদ হওয়া উচিত চার বছরের। এটা এত বাস্তব এবং যুক্তিসংগত যে সাথে সাথে বলেছিলাম এ ধরনের লোকেরই এ মু্হুর্তে বাংলাদেশের রাজনীতির হাল ধরা উচিত। কানাডা, আমেরিকার মতো দেশে সরকারের মেয়াদ চার বছরের। আর আমাদের বাংলাদেশে পাঁচ বছরের। ওখানে যে সব অযোগ্য লোক নানা ম্যাকানিজম করে পার্লামেন্টের মেম্বার হয়ে সেটাকে পুঁজি করে নিজে পাঁচ বছরের জন্য হয়ে যান রাজা তা এখানে আলোচনার বিষয় নয়। বিষয়টা হলো, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এমনকি তত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে হলেও পরাজিত দল সেটা মেনে নিতে পারেন না। নুতন সরকারের একেবারে শপথ গ্রহণের দিন থেকে শুরু করেন চক্রান্ত, অস্হির হয়ে পরেন কি করে পার করবেন আগামি পাঁচটি বছর,শুরু করেন আন্দোলনের নামে ভাংচুর, হরতাল। আশা, আহারে, পাঁচ বছরের একটি দিন আগেও যদি সরকারকে ফেলে দেয়া যায়! এসব দিক বিবেচনা করলে চারবছর খুবই বাস্তব টার্ম বাংলাদেশের জন্য। বিরোধি দল অতটা অস্হির হবেন না। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয় ক্ষতিও অনেক কম হবে। অনেকে নির্বাচনী ব্যায়ের কথা বলবেন, আহারে গরীব দেশে এত তাড়াতাড়ি ইলেকশন দিলে কত কোটি টাকা খরচ হবে! তাদেরকে বলি, যে টাকা পলিটিশিয়ান, আমলারা প্রতিবছর চুরি করে তার তুলনায় একটা জাতীয় নির্বাচনের খরচ কি সত্যিই খুব বেশী? শুধুমাত্র একবছর গাড়ী পোড়ানোয় যে লোকসান হয়, হরতালে যে লোকসান হয়, আমার মনে হয় সেই টাকা দিয়েই কয়েকটা নির্বাচন করে ফেলা যায়। চার বছর পর পর নির্বাচন দিলে কি কি উপকার আর অপকার হতে পারে সেটা নিয়ে আর একটা লেখায় আলোচনা করার আশা রাখি। তবে রাজা রাণী, যুবরাজদের যে খুব কম সময়ের মধ্যে আবারও জনগণের কাছে ফিরে যেতে হবে, তাদের কাছে ভোট ভিক্ষা করতে হবে, হাত পা ফাটা, গায়ে দুর্গন্ধযুক্ত খেটে খাওয়া কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষগুলোর কাছে যেয়ে নাকে মুখে রুমাল চেপে হলেও তাদের করুণা ভিক্ষা করতে হবে সেটাই বা কম কিসে? গণতন্ত্রের জন্য,দেশের উন্নয়নের জন্য তারাতো সেটা করবেনই!
জনপ্রিয় অভিনেত্রী, আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তারানা হালিম আজ বলেছেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সংসদ বর্জনের অপসংস্কৃতি বা রেওয়াজ থেকে বের হয়ে আসা দরকার এবং এটা আওয়ামী লীগকেই শুরু করতে হবে। চমৎকার বলেছেন তিনি। কারণ এ অপকর্মটাতো আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়েই করছে ধারাবাহিকভাবে, বছরের পর বছর। হাতে পায়ে ধরে জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হবার পর আর সংসদে যায় না। কারণ দল যায় না, সে একা একা কিভাবে যাবে! এক্ষেত্রে যে কাজটা আসলে করা দরকার তা হলো, সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া ও কথা বলার অধিকার অর্জন করা এবং প্রতিষ্ঠা করা। তাহলেই একমাত্র দলীয় কুচক্রান্তের কারণে যদি সংসদ বর্জন হয়, ব্যাক্তিগত বুদ্ধি বিবেচনা, জনস্বার্থ বিবেচনা করে সাংসদ একা হলেও নির্ভয়ে সংসদে যোগদান করতে পারবে এবং নিজ এলাকার ভোটারদের আমানতের খেয়ানত হবে না, তাদের খেদমত অব্যাহত থাকবে। কারণ জনগণ যখন ভোট দেয় তখন কিন্তু নানান ধরনের প্রমিজ করিয়ে নেয় তারা। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি, রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত যে নির্বাচনেই আপনি ভোট চাইতে যান না কেন, মানুষের দাবীগুলো কিন্তু একই নেচারের। যারা নিজে নির্বাচন করেছেন বা সাথে থাকেন তারা বুঝবেন আমি কি বলতে চাইছি। বাজান, আমার স্কুলডার উন্নয়ন চাই! ভাইজান, আমার গ্রামের রাস্তাডা ঠিক কইরা দিতে অইবো! ইত্যাদি....। সুতরাং তারানা হালিম যুক্তিসংগত কথাই বলেছেন। তবে তাঁর এ যুক্তি তাঁর নেত্রী কতখানি গুরুত্ব দিবেন সে ব্যাপারে পাঠকের সাথে আমিও সন্দিহান। তবুওতো তিনি বলেছেন সাহস করে, এভাবে একে একে দলের অনেকেই সাহসী হয়ে উঠলেই পরিবর্তনের নুতন সূর্য্য পূর্ব দিগন্তে ঊদিত হবে।
সুরঞ্জিত বাবু এ সরকারের আমলে অনেক বিতর্কিত একজন মানুষ। তার �কালো বিড়াল� তকমা নিয়ে অন্য একদিন আলোচনা করার ইচ্ছে রাখি। তবে সর্বশেষ যে স্ট্যান্ড তিনি নিয়েছেন সেটা প্রশংসার যোগ্য। উনারা দীর্ঘদিন যাবত বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। বিশেষ করে র্যা বের সেই ক্রসফায়ারের আসাঢ়ে গল্পের বিরুদ্ধে উনাদের একটা অবস্হান ছিল। পুরো দলেরই ছিল কিন্তু সেটা বিএনপির আমলে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের অনেকেই মুখে কুলুপ এটে বসেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যাকান্ডের আসামী আরেক যুবলীগ নেতা তারেককে ক্রসফায়ার করায় সুরঞ্জিত বাবু মুখ খুলেছেন। তিনি এটার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, দলের অন্য কেউ বলেছেন বলে আমি শুনি নাই কিংবা দেখি নাই। এক্ষেত্রে অবশ্যই সুরঞ্জিত বাবু বাহবা পেতে পারেন। আমার কথা হলো আমরা বিভিন্ন কারণে একটা বিশেষ দলের সাথে সম্পৃক্ত হতেই পারি কিন্তু দুই চারজন নেতা নেত্রী ছাড়া লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থকতো কোন সুবিধা পান না। তবে এরাই কিন্তু দলকে ক্ষমতায় আনতে মূল ভুমিকা পালন করেন। তাহলে এই লক্ষ লক্ষ মানুষগুলো কেন দলীয় ডান্ডাবেড়ীর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাবে না, তারা কেন দেশকে দলের নেতা-নেত্রীর চেয়ে উর্ধ্বে তুলে ধরতে পারবেন না? দল যখন ভুল করবে নেতা-নেত্রী যখন ভুল করবে তখন তারা কেন রুখে দাড়াবেন না? তারা কেন প্রতিবাদ করবেন না? বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ এ প্রতিবাদ না করার কারণেই, মুখ না খোলার কারণেই দলীয় কর্তারা এমন আস্কারা পেয়ে যান, লুটপাট, দুর্ণীতি, খুন রাহাজানি করতে করতে দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে যান যেখান থেকে আর ফিরে আসার উপায় থাকে না। পয়েন্ট অব নো রিটার্নে চলে যান। আর তার খেসারত কিন্তু দিতে হয় দলের নিবেদিতপ্রাণ লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থক তথা দেশের আপামর জনগণকে। তাদের গাড়ী ভাংচুর হয়, সম্পদ বিনষ্ট নয়, অফিসে যেতে পারেন না, কামাই রোজগার বন্ধ হয়। হরতাল অবরোধে শুনেছেন কখনো কোন নেতা নেত্রীর দামি গাড়ী ভাঙচুর হয়েছে? তাদের গাড়ী কিন্তু ওই দিন ভেলভেট কাপড়ে মুড়িয়ে বাসার সুরক্ষিত গ্যারাজে নিরাপদে রেখে দেয়া হয়। - See more at: Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×