আমাদের সমাজে প্রচলিত কিছু ভিত্তিহীন কথা।যেগুলো কুসংস্কার নামে পরিচিত। এসব ভিত্তিহীন কথার কিছু অংশ তুলে ধরলাম।যেগুলো বিশ্বাস করার যৌক্তিকতা নেই।আপনাদের কারও জানা থাকলে যোগ করতে পারেন।
যেমন:
খাওয়ার সময় সালাম দেয়া যায় না।খাওয়ার সময় সালাম দেয়া যাবে না বলে কোন হাদীস নেই।তবে খাওয়ার সময় সালামের উত্তর দেয়ার ক্ষেত্র্রে খাবার গলায় আটকে যেতে পারে বা বিষম আসতে পারে তাই আমরা তা থেকে বিরত থাকার কথা বলি।তবে তা কোন হাদীস বা হুকুম নয়।
শনিবার ও মঙ্গলবারে বাশ কাটা যাবে না।আমি ভেবে পাই না এ কথার উপর মানুষ আমল করে কিভাবে।কারণ এর কোন যৌক্তিকতা নেই।আর এদিন যদি কোন মানুষ মারা যায় তবে কি তাকে বিনা বাশেঁ কবর দিবে নাকি।
বৃহষ্পতিবারে গরুর গোশত কাটা যাবে না।এটা কেমন কথা মানুষের খাদ্য কোনদিন ভক্ষণ করবে তা কি দিন ঠিক করে।আচ্ছা যদি বৃহষ্পতিবারে কুরবানী হয় তাহলে কি তার পরদিন কুরবানী করবে।
জুমআ”র খুতবার সময় নামায পড়া যাবে না। এ সময় যে নামায পড়া যায় তা স্পষ্ট বুখারী,মুসলিম ও মিশকাত শরীফে আ্ছে।এ ব্যাপারে নিচের লিংকটিতে ক্লিক করুন।
দাড়ির প্রত্যেকটিতে সত্তর হাজার ফেরেশতা আছে।এ ব্যাপারে আমার হাদীস নজরে পড়ে নি।আর কারও পড়লে তা জানাবেন।তবে দাড়ি রাখার আবশ্যকতা হাদীসে আছে।এটির ফযীলতও বর্ণিত আছে।আর ফযীলত তৈরী করার প্রয়োজন নেই।
দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র।–আল হাদীস।এভাবে লেখাটি উল্লেখ থাকে।কথাটি সুন্দর হলেও তা মোটেও হাদীস নয়।
নেককার মানুষদের নেক-আমলসমূহ ওলীদের জন্য পাপ বলে গণ্য।–হাদীস। এটিও উপরোক্তের মতো।এটা হাদীস নয়। আর এটির কোন ভিত্তি নেই।
স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত।–হাদীস।অথচ েএটি কোনরূপ হাদীসেই নেই।কেউ এটা হাদীস বলে চালিয়েছে।
অমুক দিনে সহবাস করা হারাম, অমুক মাসে বিয়ে করা নিষেধ, অমুক বারে জন্ম নেয়া শিশু ভাগ্যবান---ইত্যাদি ইত্যাদি এসব কথার কোন ভিত্তি নেই।এসব বিশ্বাস করতো মদীনার ইয়াহুদীরা।তাদের কথার প্রতিবাদে আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ২২৩নং আয়াত নাযিল করেন।
অবিবাহিতের ৭০রাকআত অপেক্ষা হতে বিবাহিতের দুই রাকআত উত্তম।–এটা একেবারে বাজে কথা আর বানোয়াট হাদীস তো দূরের কথা ভিত্তিহীন।
লাল দস্তর খানে খাওয়া সুন্নাত।এ রকম কথা শুনা গেলেও এরুপ কোন হাদীস নেই যে দস্তর খানায় খেতে রাসূল (সা উত্সাহিত করেছেন।বা এমনটি নিয়মিত করেছেন। তবে নাবী কারীম সা: কখনও কখনও তা ব্যবহার করেছেন।তবে তা ছাড়া তিনি খেতে নিষেধ করেছেন বা গুরুত্ব দিয়েছেন তা নয়।আসলে তিনি দস্তরখানাকে পাত্র হিসেবে ব্যবহার করতেন।
আংটি বা পাথরের গুনাগুন নিয়ে যেসব কথা প্রচলিত তার সবই ভিত্তিহীন।
পাগড়ীসহ নামাযে দশহাজার নেকী আছে।–হাদীস।এটি কোন হাদীস নয়। পাগড়ি পরে নামায আদায়ের ফযীলত নিয়ে যেসব হাদীস দেখা যায় তার সবই জাল ও বানোয়াট হাদীস।
রাসুলুল্লাহ সা: মাথায় একটি উচু পাচভাগে বিভক্ত টুপি পড়তেন।এটি একটি গ্রন্থে উল্লেখ থাকলেও তার সনদ বানোয়াট ও জাল।তাই এর কোন ভিত্তি নেই।
রাত্রে আয়নায় মুখ দেখা যাবে না, ভাঙ্গা চিরুনী দেখা যাবে না।হাটতে হাটতে খিলাল করলে এমন ঘটে এসব সবই ভিত্তিহীন কথা।
পাজামা পাঞ্জাবী ইসলামী পোশাক। এ ধারণা যারা পোষণ করেন তারা ভুল করেন।কারণ নামের অর্থ দেখে বুঝা যায় যে, পাঞ্জাবী কথাটি এসেছে পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে। ইসলামী পোষাকের সম্পর্কে ধারণা আমি পরবর্তী ব্লগে লিখব ইনশাআল্লাহ।
মসজিদ আল্লাহর ঘর এবং মাদ্রাসা নাবীর ঘর।–মাদ্রাসা নাবীর ঘর এ ব্যাপারে কোন হাদীস নেই।আর মাদ্রাসা শব্দটির ব্যবহার ইসলামের প্রথম দুই শতাব্দীতে ছিল না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৮:৫৭