somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় ভন্ডামীতে কে সেরা?? কেন সেরা?? আসুন একটু জানার চেষ্টা করি।(উতসর্গ বাকশালী ও নাস্তিক)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। সবাইকে নতুন বর্ষের শুভেচ্ছা। আমি ভালো নেই কারন আমার প্রিয় জন্ম ভুমি ভালো নেই। আর কয়েকদিন পরেই বাকশালী ফ্যাসিস্ট সরকার তার দুই বছর পুর্তি উদযাপন করবে।

আজকে আমি বাকশালী সরকারের কয়েকটি ভন্ড দিক তুলে ধরবো। দেখুন- আওয়ামীলীগ নামে যে রাজনৈতিক দল আছে তারা নিজেদেরকে ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার দাবী করে। তারা সব সময়েই সংখ্যা লঘুদের পক্ষের স্বার্থ রক্ষা কারী দল বলে দাবী করে। অসম্প্রদায়িক আর সেকুলারিস্ট বলে দাবী করে। কিন্তু এই ভন্ডামী কেন?

আমি মনে করি আওয়ামীলীগ সবচাইতে সাম্প্রদায়িক দল। বিএনপি, জামাত, খেলাফত মজলিশ, ইসিলামিক ঐক্যজোট, ইসলামীক তরীকত সহ যতো ধরনের রাজনৈতিক দল আছে সব গুলো রাজনৈতিক দল গুলোর চাইতেও গোড়া ধর্মীয় দল।

আওয়ামীলীগ ধর্ম নিরপেক্ষ দাবী করে কেন?- দেখুন এখানে একটি সুক্ষ ভাবে চিন্তা করলে কিন্তু এখানে ধর্মের কথাটিই চলে আসে। ধর্ম কথাটি আছে বলেই ধর্ম নিরপেক্ষ কথা টি আসছে। যেখানে জামাত-বিএনপি সহ অন্য ডানপন্থি দলগুলো সরা সরি ঘোষনা দিয়েই নিজেদেরকে ইসলাম পন্থি দল হিসেবে ঘোষনা করেছে , সেখানে আওয়ামীলীগ নিজেদেরকে ধর্ম নিরপেক্ষ দাবী করে এক্সট্রা সুবিধা আদায় করছে।
এক্সট্রা সুবিধা কি ? হ্যা এক্সট্রা সুবিধা অনেক আছে। দেখুন সংখ্যা লঘু বলতে আমরা কাদেরকে বুঝি? হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ইত্যাদি অন্য ধর্মীদের। যেখানে ডানপন্থি দলগুলো নিজেদেরকে ইসলামীক ডিক্লেয়ার করেছে সেখানে সংখ্যা লঘুরা কাদেরকে ভোট দিবে? হ্যা আওয়ামিলীগকে। আপনি কি ভাবছেন কোনো হিন্দু ভোটার,জামাতকে বা খিলাফত মজলিশকে ভোট দিবে? কখনোই না।আর এই সুবিধাটাই নিচ্ছে আওয়ামীলীগ।
দেখুন-বিএনপি,জামাত সহ অন্য ইসলামিক দলগুলো কিন্তু কখনোই বলেনী তারা ক্ষমতায় গেলে সংখ্যা লঘুদের দেশ থেকে লাত্থি মেরে বের করে দিবে। তারাও বলেছে সকল নাগরিকের সুন্দর সহাবস্থানের কথা। কিন্তু সেকুলারিজমের কথা বলেই আওয়ামিলীগ এক্সট্রা ভোট কামিয়ে নিচ্ছে।

দেখুন সেকুলারিস্ট দল সব দেশেই আছে- যে কোনো দেশেই সংখ্যা লঘুরা ভয়-ভীতির মধ্যে বসবাস করে।যেমন ভারতে মুসলিমরা সংখ্যা লঘু, তারা বিজেপি বা শিব সেনা কে ভোট দেয় না কারন সেই উগ্র দল গুলো ক্ষমতায় গেলে তাদের উপরে ধারালো খড়্গ নেমে আসবে। তার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা ভারতীয় মুসলিম সংখ্যা লঘুদের হয়েছে।

আওয়ামিলীগ কেন ভন্ডামী করে?- করার অনেক কারন ও আছে। দেখুন শতকরা ৯০% মুসলিম ভোটারের দেশ বাংলাদেশে হিন্দু দের ভোটে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। তাই আওয়ামীলীগ কেও ইসলাম পন্থি দলের বেশ ধারন করতে হয়। আর সে জন্য তারা অনেক ইসলামীক শো-ডাউন করে, যেটা জামাত-বিএনপি কেও হার মানবে।

আচ্ছা বলেন তো, আওয়ামিলীগের নির্বাচনী প্রচারনা কোথা থেকে শুরু হয়?

হ্যা সিলেটের শাহজালাল (রঃ) এর মাজার থেকে। হাজার হাজার আওয়ামী সমর্থক আর নেতা কর্মী ঢাকা থেকে বিশাল গাড়ী বহর নিয়ে সিলেটে মাজারে গিতে উল্লাস করে দোয়া দরুদ পাঠ করে নির্বাচনে বিসমিল্লাহ করে। আওয়ামী চেয়ারপার্সন ম্যাডাম হাসিনা যখন বঙ্গ বন্ধুর মাজারে যায় তখন বিশাল গাড়ী বহর আর হুজুর বাহিনী নিয়ে টুঙ্গী পারায় যায় তখন কোথায় থাকে ধর্ম নিরপেক্ষতার বুলি?

আচ্ছা বলেন তো ফতোয়া বাজদের সাথে কে চুক্তি করেছিলো? ফতোয়া কে কারা রাস্ট্রীয় ভাবে পৃষ্ঠ পোষকতা দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলো??

হ্যা এই আওয়ামিলীগ। মনে আছে আব্দুল জলীলের কথা?? যাক মনে করিয়ে দিতে চাইনা। রাস্ট্রীয় ভাবে ফতোয়া কার্যকর করার অঙ্গীকার দিয়েছিলো এই আওয়ামিলীগ। এই বিংশ শতাব্দি তে এসে, চুরির জন্য হাত কেটে ফেলা, চাবুক দিয়ে পিটানো, শিরোচ্ছেদ করা এই সব আইনের বাস্তব প্রয়োগ আমাদের কে নিজের চোখের দেখার সুযোগ হতো। আমাদের হাইকোর্টের পাশা পাশী আরেকটি প্যারালাল ভয়ংকর বিচার ব্যাবস্থা গড়ে উঠতো। এর পরেও আওয়ামিলীগ সেকুলার হয় কি ভাবে?

আচ্ছা এবার আসি ওলামালীগ গঠনের ব্যাপারে। দেখুন কথার খাতিরেই ধরে নিলাম আওয়ামিলীগ তার পরেও ধর্ম নিরেপেক্ষ দল। তাহলে নিরপেক্ষতা বজায় না রেখে ওলামা লীগগঠন করলো কেনো?? নির্বাচনের আগে কথা উঠেছিলো আওয়ামিলীগ সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ উঠিয়ে দিবে। কিন্তু আওয়ামিলীগ(সেকুলারিস্ট) সেই আশংকা দূর করার জন্য ধর্মীয় দলগুলোর সাথে চুক্তি করে নিশ্চয়তা দিলো কোনো ইসলাম বিরোধী আইন প্রনয়ন করা হবে না। ছবি তে দেখুন।





সেকুলারিস্ট আওয়ামিলীগের আরেকটি নমুনা দেখুন- ওদের ওয়েব সাইট শুরুই হয়েছেঃ




সাইটের ডান পাশে ক্লীক করলে ডাউনলোড লিঙ্কে ফাইলে দেখতে পাবেন, প্রথম প্যারাতেই আছে নিজেদের কে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে দাবী করে ধর্ম নিরেপেক্ষ দাবী করেছে। আচ্ছা মেনে নিলাম তোমরা অসাম্প্রদায়িক, তাহলে বলুন তো সংসদ অধিবেশন শুরু হয় কুরয়ান তেলাওয়াত এর মাধ্যমে শুরু হয় কেন? আচ্ছা তাও মেনে নিলাম। কিন্তু বলুন তো নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য কুরআন তেলাওয়াত এর পরে পবিত্র গীতা বা বাইবেল পাঠ করা হচ্ছে না কেন? আচ্ছা তাও মেনে নিলাম ধরে নিচ্ছি সময় খুব স্বল্প, কিন্তু আওয়ামী সংসদরা ফালতু কথা বলে অধিবেশনে সময় নস্ট করে কেন? মাগরীবের আজানের জন্য আর নামাজের জন্য সংসদে বিশাল সময়ের জন্য বিরতি দেয়া হয় কেন?

আওয়ামী সভানেত্রী হজ্জ্বে যাওয়ার পরে মাথায় স্কার্ফ পড়ে অনেক দিন মিডিয়াতে শো-করেন, হাতে তসবি থাকে তাও অনেক মিডিয়াতে আসে। আওয়ামী লীগের বেশীর ভাগ নেতার নামের সাথে আলহাজ অমুক/তমুক লাগানো হয় কেনো? বায়তুল মোকাররম মসজিদে তাদের নিজেদের দলীয় হুজুর নিয়োগ দেয়া হয় কেনো?মসজিদের ভিতরে মারা মারি করে কেনো ?

দেশের বেশীর ভাগ মসজিদ কমিটিতে সভাপতি হলেন আওয়ামিলীগ নেতারা। আবার হাস্যকর ভাবে হিন্দুদের পুজার অনুষ্ঠান উদ্ধোধন করেন এই দলের মন্ত্রীরা, উনারা সেই সকল অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে বলেন, আওয়ামিলীগ একটি উদার অসাম্প্রদায়িক গনতান্ত্রিক দল। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ অবাক নয়নে সেই নেতাদের কথা শুনে আর মন খুশী করে। অন্য দিকে ওলামা লীগ চুপচাপ খেলা দেখে।

আচ্ছা রমজান মাস আসলেই খেয়াল করেছেন? সারা বছর যে সব আওয়ামী চ্যানেল গুলোতে উদ্দাম নাচ-গান-বাদ্য শুরু হয় রমজান শুরু হলেই কেমন যেনো ইসলামিক মাইন্ডেড হয়ে যায়। জাস্ট ফর ওয়ান মানথ। টিভিতে শুরু করে গজল, কুরআন তেলাওয়াত, সব গুলো চ্যানেল আজান প্রচার শুরু করে।চালু করে ইসলামিক সয়াল ও জওয়াব অনুষ্ঠান ।অথচ সারা বছর ওই চ্যানেল গুলোতে কখনোই আজানের ধ্বনি শুনা যায় নি। সংবাদ উপস্থাপিকা, শো-গার্লরা মাথায় স্কার্ফ ওড়না দিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে হাজির হয়। এই সব ভন্ডামীতে আওয়ামি চ্যানেল গুলোই এগিয়ে।

আরো কিছু বিষয় খেয়াল করেছেন??

ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল ও পুষ্পার্ঘ অর্পন, মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, নিরবতা পালন। এই গুলী কি ইসলামিক? তখন ওলামা লীগ থাকে কোথায়? আওয়ামিলীগের সেই সব হজ করে আসা হাজী সাহেব নেতারা কি ভাবে এই সব করেন? ওহহহহ!! আচ্ছা তারা তো অসাম্প্রদায়িক সেকুলারিস্ট। শুধু জামাতিরাই কাফের, ভন্ড, মুরতাদ, ধর্ম ব্যাবসায়ী।

দেখুন রাজনীতি মানে হলো দেশের সেবা করা উন্নতি করা। তাই ধর্ম বিষয় টিকে প্রাধান্য না দিয়ে, উচিত ছিলো অন্য ধরনের স্লোগান দেয়া। যেমন ঃ “উন্নতি আর সমৃদ্ধি”, “ প্রগতি আর ঐক্য” , “ উতপাদন , উন্নয়ন আর উদ্দৃত্ত” কিন্তু সেই ধারাতে না গিয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মীয় ভন্ডামীতে গিয়েছে। আবার কারন ও আছে, ৯৯.৯৯ % মানুষ ধর্মকে মানে। আল্লাহ, খোদা, ইশ্বরকে মানে। না খেয়ে থাকলেও ধর্মের সামান্যতম ক্ষতি হোক এটা কেউই মেনে নিবে না। আর রাজনৈতিক দল গুলো এর পুরো সুবিধাই নিচ্ছে।

প্রিয় ব্লগার ভাইয়ে রা। কে বড় ধর্ম ব্যাবসায়ী, ভন্ড, প্রতারক তা বিচারের ভার আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম।
আরো অনেক কিছু লিখার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে, তাই অনেক কিছু তুলে ধরার ইচ্ছা থাকলেও দিতে পারলাম না।

পোস্ট শেষ।

৩২টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×