somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রচলিত হ্জ-কোরবানী, তারিখ বৈধ কি?

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জানি লেখাটা বিতর্কিত। তবু এ নিয়ে আলোচনা যুক্তিতর্ক হউক। সেজন্যেই পোষ্ট দেওয়া। লেখাটি নতুনদেশ ডটকম এর চলতি সংখ্যা থেকে নেয়া।


সওকাত হোসেন পলাশ
কোরানের আলোকে প্রচলিত হজ্জ, তারিখ এবং বিশ্বব্যপী পশু হত্যা বৈধ নয়। হজ্জ অর্থ : শপথ করা; কোরবানী অর্থ: ত্যাগ করা; অর্থাৎ ত্যাগের শপথ করা। সুতরাং বছরে ১বার হালাল/হারাম অর্থে পশু হত্যার অর্থ ত্যাগের শপথ নয়!
কি ত্যাগের শপথ করবে?
- শপথ করার (হজ্জের) মাসগুলি সকলের জানা। যে কেহ ঐ মাসগুলিতে শপথ (হজ্জ) করতে চাইলে শপথে (হজ্জে) অশ্লীল যৌনাচার, অন্যায় আচরণ এবং কলহ-বিবাদ না (ত্যাগের) করার শপথ(হজ্জে) করবে। [তথ্যসুত্র: ২: ১৯৭]। অর্থাৎ লোভ, হিংসা, মোহ, ক্রোধ, মিথ্যা, অন্যায়-অত্যাচার যাবতিয় অশ্লীল স্বভাব-কর্ম ত্যাগ করার শপথ করবে।
হজ্জের তারিখ কবে?
কোরান ঘোষিত হজ্জের তারিখ জিল হজ্জ মাসের ১ থেকে ৩ তারিখের মধ্যে নির্ধারিত। কিন্তু রাজ পরিবার জেনেশুনেই ইহা প্রত্যাখ্যান করে আপন খেয়াল-খুশীমত ৯ থেকে ১২ তারিখ হজ্জের দিন-ক্ষণ পরিবর্তন করে:
[২: ১৮৯] লোকে তোমাকে নুতন চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে; বল! উহা মানুষের হজ্জের সময়-ক্ষণ নির্ধারক।
উল্লিখিত আয়াতে বর্ণিত ‘লোকে তোমাকে নুতন চাঁদ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে!’ ‘আহেল্লাত’ শব্দটি ‘আল-হেলাল’ এর বহুবচন; মাসের ১লা থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত ‘আহেল্লাত’ বলা হয় এবং ঐ সম্বন্ধেই প্রশ্ন করা হয়েছে। ‘কামার’ বা চাঁদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করেনি। উত্তরে বলা হয়েছে যে ‘আহেল্লাত’ এ মানুষের হজ্জের দিন-ক্ষণ ধার্য করা হয়েছে।
‘হেলাল’ ক্রিসেন্ট অর্থ চাঁদ নয় বরং নুতন চাঁদ; প্রতিপদ বা প্রথমা থেকে দ্বিতীয়া, তৃতীয়া পর্যন্ত ধরা হয়। আরবে আজও মাসের ১লা থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত ‘আহেল্লাত’ বলে। অতএব হজ্জের নির্দিষ্ট দিন-তারিখ মাসটির প্রথম ৩ দিন; আল্লাহর এই নির্ধারিত তারিখ খন্ডন করার শক্তি-যুক্তি বিশ্বের কারো নেই! অথচ কোরানের প্রতি বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শন করত সুন্নী য়োহাবী রাজ পরিবার নিজস্ব ৯-১২ তারিখ প্রতিষ্ঠা করে। আর বিশ্বের দেড় বিলিয়ন মুসলমানগণ তা সানন্দে অনুসরণ করছে!
পশু হত্যা হবে একমাত্র প্রাচীন গৃহের (মীনায়) সামনে, দুনিয়াব্যাপী নয়: [২২: ৩৩, ৩৪] ইহাতে তোমাদের জন্য নানাবিধ উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য; অতঃপর উহাদের স্থান প্রাচীন গৃহের নিকট।‘নির্দিষ্ট সময়ের জন্য উপকার’ অর্থে মিনায় দেশী-বিদেশী প্রচুর লোক সমাগমে পশু হত্যা খাদ্য সমস্যার সমাধান দেয়। দুনিয়াব্যাপী পশু হত্যার বিধান কোরানে নেই।
ধর্মের নামে পশু হত্যা আল্লাহ গ্রহন করে না: [২২: ৩৭] আল্লাহর নিকট উহাদের গোশত এবং রক্ত পৌঁছায় না বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।
আরবি ‘না লুন’ এর অর্থ প্রধানতঃ বখশিশ, যাকে ছোয়াব/লাভ বা পুণ্য বলা হয়; সুতরাং আয়াতে বর্ণিত ‘গোস্ত ও রক্ত আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না’র পরিবর্তে ‘ পশুর গোস্ত ও রক্তে আল্লাহর নিকট কোন বকশিস নেই’ অনুবাদটিই যথার্থ। অর্থাৎ ধর্মের নামে পশু হত্যা আল্লাহ গ্রহণ করে না, আল্লাহ তা চায় না, তার অপছন্দ হেতু তাতে কোনই ছোয়াব-লাভ নেই। আর তাকোয়া অর্থ শপথ রক্ষার মনোবল (সুত্র: ২: ৯৭)।

উপসংহার:
প্রচলিত হজ্জ হারাম-হালাল পার্থক্য বিহীন ধনীদের সাময়িক আমোদ-প্রমোদের অনুষ্ঠান হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত এবং তাদেরই বেহেস্ত প্রাপ্তির ধারণা বিজড়িত অনুষ্ঠান; কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠ গরীবদের বছরে এক টুকরা মাংস প্রাপ্তি ছাড়া বেহেস্তের আসা-ভরসা নেই! এমন সাম্প্রদায়িক পাক্ষপাতদুষ্ট ধনীদের আমোদ-ফুর্তির আইন কোরানে নেই। অবশ্য গরীবদের শান্তনার জন্য মৌলবাদ পূর্ব থেকেই মহানবির নামে একটি আপত্তিকর অশ্লীল হাদছি রচনা করে রেখেছে যে:
‘যাদের পশু কোরবানী করার সামর্থ নেই, অর্থাৎ গরীব অসমর্থগণ নির্ধারিত ১০ দিন ধরে রাখা নখ, চুল, গোঁফ ও যৌন লোম চেঁছে ফেল্লে পশু কোরবানীর সমান ছোয়াব পাবে।’ (তথ্যসুত্র: আবু দাউদ, ১০ম খন্ড, প্রকাশক: বাং. তাজ কোং লি:; হাদিছ নং- ২৭৮০, পৃ: ৭৩৫)।
অর্থাত প্রেসিডেন্ট-মন্ত্রি, রাজা-বাদশা, মওলানা, গাউস-কুতুব, ব্যবসায়ী, পীর-কেব্লা প্রভৃতি পাক/নাপাক ধনাঢ্যগণ হাজার/লক্ষ টাকা দিয়ে যে পশুটি কোরবানী করলো তার আনুপাতিক ছোয়াব তাদেরই দুয়ারে ভুখা-নাঙ্গা এক টুকরা গোস্ত প্রার্থীর চেঁছে ফেলা নখ-চুল আর যৌন লোমের সমান! কোরান বহির্ভূত প্রচলিত শরিয়ত ইসলামকে কোথায় নামিয়েছে! তা জ্ঞানীদের ভেবে দেখার সময় সমাসন্ন।
সওকাত হোসেন পলাশ।সেক্রেটারী জেনারেল, ইয়ং মুসলিম সোসাইটি( ভদ্র যুব সংস্থা),টরন্টো

Click This Link


৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×