somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুরসির উৎখাত সেনা অভ্যুত্থানে মিশরের সেনা সরকারের বিরুদ্ধে ম্যাককেইনের কড়া বিবৃতি

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিশরের সেনা সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন কায়রো সফররত যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর ও সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জন ম্যাককেইন এবং সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক সিনেট কমিটির প্রভাবশালী এই দুই সদস্য মিশরের ইতিহাসে প্রথম অবাধ নির্বাচনে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থানকে ‌‘সেনা অভ্যুত্থান বা ক্যু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেছেন।

ম্যাককেইন হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন, মিশর এখন সর্বাত্মক রক্তপাতের দ্বারপ্রান্তে।

মঙ্গলবার মিশরের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি, অন্তর্বর্তী ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এল বারাদেই এবং অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল-বেবলাউই’র সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাককেইন বলেন, ‘ মিশরে এখন যারা ক্ষমতায় তারা নির্বাচিত নয়। যারা নির্বাচিত ছিলেন তারা এখন জেলে। এই অবস্থা গ্রহণযোগ্য নয়।’

অন্যদিকে মার্কিন টেলিভিশন স্টেশন সিবিএসকে ম্যাককেইন বলেন, ‘হায় ঈশ্বর, আমি জানতাম না মিশরের অবস্থা এতো খারাপ। এই লোকগুলো সর্বাত্মক রক্তপাত থেকে মাত্র কয়েক দিন বা সপ্তাহ দূরে।’

মিশর ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মুরসিকে উৎখাত ছিল সেনা অভ্যুত্থান
ম্যাককেইন ও গ্রাহাম বলেছেন, মিশরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির উৎখাত ছিল সেনা অভ্যুত্থান বা ক্যু দেয়া।

মার্কিন প্রশাসনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কর্তারা এই প্রথম মিশরের সেনা অভ্যুত্থানকে অভ্যুত্থান হিসেবে প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন।

এখন পর্যন্ত ওবামা প্রশাসন মিশরের অভ্যুত্থানকে ক্যু বলে স্বীকার করেনি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে কোনো দেশে সেনা অভ্যুত্থান হলে সেখানে সামরিক সহায়তা দিতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র।

মিশরের সেনাবাহিনীকে বছরে ১৩০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

গত ৩ জুলাই বিক্ষোভের অজুহাতে ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরেরও কম সময়ের মাথায় মুরসিকে উৎখাত করে মিশরে ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ হিসেবে খ্যাত সেনাবাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের পর আটক ব্রাদারহড নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে ম্যাককেইন ও গ্রাহাম বলেন, ‘আমরা রাজবন্ধিদের মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে আপনি প্রত্যেকের সঙ্গে বসতে এবং আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু যিনি কারাবন্দি তার সঙ্গে আলোচনা অসম্ভব।’

মিশরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে বলেও হুঁশিয়ার করে দেন গ্রাহাম ও ম্যাককেইন।

তারা বলেন, ‘কংগ্রেসের কেউ কেউ চান সম্পর্ক খারাপ হোক। কেউ চান অর্থ সহায়তা বাতিল করতে। সত্যি কথা বলতে কি সম্পর্কের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হলো আমরা এমন মিশরকে সমর্থন করতে পারি না যেটি গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করছে না।’

বিদেশি মধ্যস্থতায় নাখোশ
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী এই দুই সিনেটরের, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির রাজনৈতিক সংকট নিরসনে যাদের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাই কায়রো পাঠিয়েছেন, এই কড়া অবস্থানে নাখোশ হয়েছে মিশরের সেনা সমর্থিত সরকার।

অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মনসুরের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, বিদেশি চাপ সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

ব্রাদারহুডের কঠোর আন্দোলনের ফলে সম্প্রতি সেনা সমর্থিত সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরাল হয়েছে, যার সর্বশেষ নজির ম্যাককেইন ও গ্রাহামের কড়া ভাষায় সমালোচনা।

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারের কূটনীতিকরা সংকট সমাধানে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

মনসুরের উপদেষ্টা আহমেদ এল-মুসলিমানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদেশি চাপ আন্তর্জাতিক মান অতিক্রম করেছে।’

ম্যাককেইন মুরসির উৎখাতকে সেনা অভ্যুত্থান বলে যে মন্তব্য করেছেন তার সমলোচনা করে তিনি বলেন, ‘ম্যাককেইন তথ্য বিকৃত করেছেন। তার বিবৃতির বিষয়বস্তু গ্রহণযোগ্য নয়।’

এদিকে, মিশরের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত আল-আহরাম পত্রিকা জানিয়েছে, সরকার যে কোনো ঘোষণা করতে পারে যে বিদেশি মধ্যস্ততা সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।

মুরসিকে উৎখাতের পর থেকেই চরম রাজনৈতিক সংকটে নিপতিত হয়েছে মিশর। মুরসি সমর্থকরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। কায়রোর তিনটি স্থানে মুরসি সমর্থকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় রাজধানী শহর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় নিরস্ত্র মুরসি সমর্থকদের ওপর দুদফা গণহত্যা চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে প্রায় ৩০০ লোক নিহত হয়। কিন্তু এরপরও মনোবল ভাঙ্গেনি মুরসি সমর্থক ও ব্রাদারহুড কর্মীদের। তারা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×