somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একশ বছর আগের লেখক পরিচিতি...

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রেখোমা দাসেরে মনে...

"দাঁড়াও পথিক বর
জন্ম যদি তব বঙ্গে!
তিষ্ট ক্ষণকাল!"

এ উক্তিটি লেখা আছে মধুকবি - মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্হান ও তাঁর পৈত্রিক নিবাস যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সাগরদাড়িঁ গ্রামে তাঁর মুর্তিতে এবং কলকাতায় তাঁর সমাধিস্হলে । মহাকবি মাইকেলের জন্ম ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে । প্রায় ১২টি ভাষা জানা মধুসূদন ইংরেজি ভাষায় অন্ধ হয়ে , ইংরেজি সংস্কৃতিতে প্রীতি হয়ে পরিবারের শত বাধাঁ সত্ত্বেও খ্রিস্টধর্ম গ্রহন করে চলে গিয়েছিলেন সুদূর ইংল্যান্ডে । তিনি ছিলেন জমিদার পুত্র । জন্মলগ্নের সময় থেকেই অভাব কাকে বলে বোঝেননি । বরং দুহাত ভরে খরচ করেছেন নিজের জন্য এবং বন্ধু বান্ধবের জন্য । প্রথম জীবনে তিনি বাংলা ভাষা সহ্য করতে পারতেননা । তাই তিনি সাহিত্য জীবন শুরু করেছিলেন ইংরেজি কাব্যগ্রন্হ " দি ক্যাপটিভ লেডি " রচনার মধ্য দিয়ে । তিনি ভেবেছিলেন এটি আভিজাত্যের লক্ষণ । অবশ্য পরবর্তী সময়ে জীবনের বিচিত্র কষ্টকর অভিজ্ঞতায় পাশ্চাত্য জীবন যাপনের প্রতি মোহাবিষ্ট মধুকবির এই ভুল ভেঙ্গেছিলো । আর এই ভুল ভাঙ্গাতে সাহায্য করেছিলেন আরেক মানবতাবাদী বিখ্যাত লেখক, সমাজ সংস্কারক, বীর সিংহের সিংহ পুরুষ , বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । ১৮৫৯ সালে প্রথম নাটক 'শর্মিষ্ঠা' রচনার মধ্য দিয়ে তাঁর বাংলা সাহিত্য জগতে অনুপ্রবেশ । ১৮৬০ সালে মাত্র দুটি প্রহসন 'একেই কি বলে সভ্যতা' এবং 'বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ' লিখেই বাংলা প্রহসনকে নিয়ে যান সার্থকতার শীর্ষে । একই বছর 'তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য' দিয়ে তাঁর মহাকাব্যের যাত্রা শুরু । এর পরের বছর অর্থাত ১৮৬১ সালে লিখলেন বাংলা সাহিত্যের অমর মহাকাব্য 'মেঘনাদ বধ' কাব্য । এ মহাকাব্যের মাধ্যমেই তিনি সর্বপ্রথম প্রচলিত মহাকাব্য রচনার ধারাকে ভেঙ্গে দু:সাহসের পরিচয় দেন । এখানেই তিনিই প্রথম বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন । সর্বোপরি এ কাব্যেই তিনি প্রথা ভেঙ্গে রাবণের মতো রাক্ষসরাজকে নায়ক বানিয়ে সবার চোথের জল ঝরিয়েছেন । আর রাম - লক্ষণকে উপস্হাপন করেছেন ঘৃণিত কাপুরুষ ব্যক্তি রূপে । বাংলা সনেটের প্রবর্তক মধুকবি পত্রকাব্যেও দেখিয়েছেন পারঙ্গমতার পরিচয় । এই প্রথম বাংলা সাহিত্যে নারীরা তাদের সনাতন পৌরাণিক আশ্রম ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজ অধিকারের কথা , ক্ষোভের কথা , প্রেমের কথা উচ্চকিত কন্ঠে ঘোষণা দিয়েছে মধুসূদনের 'বীরাঙ্গনা' কাব্যে । ১৮/১৯ বছর বয়সেই হিন্দু ফিমেলস বিষয়ে একটি রচনা প্রতিযোগিতায় তিনি লেখেন , "নারীকে হতে হবে আদর্শ জননী ও গৃহিণী । হতে হবে কুসংস্কার মুক্ত । নারী শুধু ভোগের সামগ্রী নয় , সমাজের পালয়ত্রী ও শিক্ষাদাত্রী ।" এক কথায় বীরাঙ্গনা নারী মুক্তির কাব্য । বলা যায়, মধুসদূন যে রচনাতেই হাত দিয়েছেন সে রচনাতেই ফলেছে সাহিত্যের স্বর্ণফসল ।বিদ্যাসাগর সমাজে নারী মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন আর সে কাজটিই মধুসূদন করেছেন তাঁর সাহিত্যে । আর এ প্রগতির পথেই হেঁটেছিলেন বেগম রোকেয়া । এছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্য গ্রন্থ হলো --- চতুর্দশপদী কবিতাবলি । মধুসূদনের ছদ্মনাম 'টিমোথি টেনপোয়েম' । এই নামে তিনি মাদ্রাজ সার্কুলেটর পত্রিকায় লিখতেন । বাংলা সাহিত্যের সর্বাধুনিক সার্থক মধুকবি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮৭৩ সালে খুবই অযত্নে অবহেলায় কলকাতায় মৃত্যুবরন করেন । এখানে উল্লেখ্য যে, মাইকেল মধুসূদনের সর্বশেষ বংশধর সুদূর ইংল্যান্ডের টেনিস সেনসেশন 'লিয়েন্ডার পেজ' । দেখতে অবিকল মধুসূদন !!!!!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×