গতকাল ছিল ২৭শে ফেব্রয়ারি । ২০০৪ সালের এদিনই সময়ের সাহসী লেখক, মুক্ত চিন্তার, প্রতিবাদী লেখক হুমায়ুন আজাদ বইমেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির নগ্ন পৈশাচিক হামলার শিকার হয়েছিলেন। এ হামলায় তাকে মৃত্যুর হাত থেকে ফেরানো সম্ভব হলেও কিছুদিন পরে জার্মানীতে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন আজাদের ওপর মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি যদি সেদিন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা না চালাতো তাহলে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে যেতে পারতেন।
কেন তাকে হত্যা করা হলো কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। তার ছিল সত্য বলার অসিম সাহস। আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি। মুক্তচিন্তার হুমায়ুন আজাদ বেশ অভিমান করে হারিয়ে যান আমাদের মাঝ থেকে।
সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী মনোজাগতিক ও পৈশাচিক সূত্রে গাঁথা সে হত্যাকাণ্ড ৭১ এর বুদ্ধিজীবী হত্যার মতোই বেদনাদায়ক।
মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা আজও আমাদের ভাবিয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে সাম্প্রদায়িকা, মৌলবাদমুক্ত একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা আজো আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। বাংলার স্বাধীন মাটিতে আজো রাজাকার-আলবদরের গাড়িতে শোভা পায় লাল-সবুজের পতাকা।
বাংলার তরুণ সমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ। গণজাগরণের ঠেউ পৌছে গেছে সারা বাংলায়। দলমত নির্বিশেষে রাজাকার-আলবদরের ফাঁসির দাবীতে জেগেছে বাংলার লাখো কোটি জনতা।
প্রিয় হুমায়ুন আজাদের ওপর মৌলবাদীদের হামলার স্মৃতিকাতর এদিনে শাহবাগ আন্দোলনকে একটি পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে তারমতো একজন মহানায়কের প্রয়োজন। যে মহাননেতা, সূর্যতরুণ সন্তান বলিষ্ঠ কণ্ঠে মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ও রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে বিদ্যাজাগতিক ও মনোজাগতিক সাহস, শক্তি ও দিকনির্দেশনা দিবেন। শাহবাগ গণজাগরণের আন্দোলনকে পৌঁছে দেবেন জয়ের বন্দরে।