somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববার্তা ৪: ব্রিটিশ রাজপরিবারের জন্ম বৃত্তান্ত ও উত্তরাধিকার বিতর্ক

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কিছুদিন আগে ব্রিটেনের রাজপরিবারে রাজপুত্রের জন্ম দিলেন ডাচস অব কেম্ব্রিজ কেট মিডলটন।২২ জুলাই প্যাডিংটনের সেন্ট মেরিস হাসপাতালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের জন্য নির্দিষ্ট লিন্ডো উইং এ তিনি জন্ম দিলেন পুত্র সন্তানের।সদ্য জাতের নামকরণ করা হয়েছে জর্জ আলেকজান্ডার লুই।




তিনিই বর্তমানে ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনের তৃতীয় দাবীদার।

কিছু অজানা তথ্য :-

ক) প্রাচীন কালে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের জন্ম হত বাড়িতেই, হাসপাতালে নয়। প্রিন্স উইলিয়ামই প্রথম সদস্য যিনি জন্মেছিলেন বাড়ির বাইরে কোনও হাসপাতালে,১৯৮২ সালে।
খ) রাজকুমার ও রাজকুমারীকে বাড়িতে রেখেই পড়াশুনা করানোর রীতি।এক্ষেত্রে সাধারণের সাথে মেলামেশার কোনও রীতি ছিল না। প্রিন্স চার্লস প্রথম সদস্য যিনি রাজপরিবারের প্রথম স্কুলে গিয়েছিলেন।

গ) ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের কোন পদবি নেই। পরিবর্তে তাঁরা উপাধি বহন করেন।এমন কি প্রিন্স উইলিয়াম (প্রিন্স অব কেম্ব্রিজ) যখন সেনাবাহিনীতে ছিলেন, তখনও তাকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ওয়েলস নামে ডাকা হত।
ঘ) উওরাধিকারী জন্মানোর সময় আঁতুড় ঘরে সরকারি এক প্রতিনিধির হাজির থাকার নিয়ম ছিল।এই প্রথা বহু প্রাচীন।শিশুর জন্মের সরকারি সাক্ষী থাকতেন তিনি।

ঙ) ব্রিটিশ রাজপরিবারের শিশুর জন্মের সংবাদ এক অভিনব পদ্ধতিতে দেওয়া হত।


ঘোষক ঘোষনা করতেন সরকারী ভাবে। বাকিংহাম প্যালেসের বাইরে এক কাঠের বোর্ডে শিশুর সব খুঁটিনাটি বর্ণনা লিখে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। পরবর্তীকালে রেডিও ও টেলিভিশনে খবর প্রচারিত হত। এবার খবর ছড়াল ফেসবুকে ও টুইটারে।

চ) রাজতন্ত্রে সদ্যোজাত উত্তরাধিকারীকে ‘গান স্যালুট’ দিয়ে অভিবাদন জানানোর রীতি বহু প্রাচীন ।





টাওয়ার অব লন্ডন থেকে ৬২ টি এবং ব্যকিংহ্যাম প্যালেসের অদূরে অবস্থিত গ্রিন পার্ক থেকে ২১ টি কামান দেগে ‘গান স্যালুট’ দেওয় হয়।



ছ) পূর্বে বিধি ছিলম বাজপরিবারের উওরাধীকারীর জন্মের সময় ইংল্যান্ডের স্বরাষ্ট্র সচিব উপস্থিত থাকবেন।১৯৩৬ সালে যুবরানী আলেকজান্দ্রার জন্মের সময় শেষরারের মতএই প্রথা মানা হয়। ১৯৪৮ সাল থেকে এই প্রথা উঠে যায়।
জ) রাজপরিবারের নবজাতকের জন্মের সময় নথিভুক্ত করার জন্য উপস্থিত থাকতেন ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপও। ১৮৪১ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার প্রথম সন্তান অ্যালবার্ট এডওয়ারর্ডের জন্মের সময় আর্চবিশপ উইলিয়াম হাউলি, লর্ড হোয়ানক্লিক ও লর্ড স্ট্যানলি দেরিতে এসে পৌঁছানোয় জন্মের সময় উপস্থিত থাকতে পারেননি। সেই সময় লন্ডনের বিশপ উপস্থিত ছিলেন। তিনিই সদ্যজাতের ভূমিষ্ঠ হাওয়ার সময় নথিভুক্ত করেন।

ঝ) রাজপরিবারের সদস্য জন্মানোর সময় আঁতুড় ঘরে হাজির ছিলেন যুবরাজ উইলিয়াম। কিন্তু পূর্বে এই নিয়ম ছিল না।উইলিয়াম জন্মানোর সময় প্রিন্স চার্লস প্রথা ভেঙে প্রথমবার উপস্থিত ছিলেন রানি ডায়না। শিশুর জন্মের সময় পিতার না থাকাকে কেন্দ্র করে একদা ঘটে গিয়েছিল বিপ্লবও।১৬৮৮ সালে প্রথম পুত্রসন্তান ফ্রান্সিস এডওয়ার্ড স্টুয়ার্ট জন্মানোর সময় রাজা দ্বিতীয় জেমস ইংল্যান্ডের ৪২ জন প্রথিতযশা ব্যক্তিকে দিয়ে পুত্রের জন্মের সত্যতা যাচাই করান। কারণ প্রজাদের সন্দেহ ছিল রানি মেরি অব মোডেনা আদৌ গর্ভবতী হননি।শুরু হয় বিতর্ক।সিংহাসনের উওরাধিকার নিয়ে কন্যা দ্বিতীয় মেরি ও জামাই তৃতীয় উইলিয়ামের নেতৃত্বে সংগঠিত হয় গ্লোরিয়াস রেভোলিউশন বা রক্তপাত হীন বিপ্লব।সিংহাসন হারান দ্বিতীয় জেমস। নতুন রাজা হন তৃতীয় উইলিয়াম।

ঞ) টরন্টোর সি এ টাওয়ার নায়াগ্রা জলপ্রপাত, লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারের ঝরনা ব্রিটিশ রাজপরিবারের উওরাধিকারের জন্মের মুহূর্তে সেজে ওঠে ---- ছেলে হলে হয় নীল ও মেয়ে হলে হয় গোলাপি রঙ এর।



উওরাধিকার বিতর্ক :-

মার্কিন লেখক স্টিভ বেরির বই দ্য কিংস ডিসেপশন থেকে তৈরি হল নতুন বিতর্ক।



বইয়ের প্রকাশ – টিউডর বংশের যে রানি প্রথম এলিজাবেথকে এতদিন মহান সম্রাজ্ঞী হিসাবে জেনে এসেছেন ব্রিটেনবাসী, তিনি নাকি আদতে পুরুষ।স্টিভ লিখেছেন,১৫৪৩ সালে প্লেগ থেকে বাঁচাতে বছর দশেকের ছোট্ট এলিজাবেথকে গ্লস্টারশায়ার কাউন্টির গ্রাম কটসওল্ডে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন রাজা হেনরি। বেশ কিছুদিন পরে তিনি মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এলেন। কিন্তু তার আগের দিনই মারা যান আসল এলিজাবেথ। তখনই নকল এলিজাবেথ হিসাবে একটি বাচ্চা ছেলেকে তৈরি করে রাজার সামনে আনা হয়। রাজা ভুল ধরতে পারেননি।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×