somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লোকজ গান ও আমাদের শ্রমসমাজ

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা আমাদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য অনেক কিছু করে থাকি। আদিকাল থেকে আমাদের দেশের মানুষ ভাব প্রকাশ করার জন্য গান করত, গীত করত এবং সঙ্গীত সাধনা করত। এটা এক ধরণের আদি রীতি ছিলো বলা যায়। কিন্তু এখনও তা প্রচলিত রয়েছে। আমাদের দেশের প্রায় মানুষই সঙ্গীতের ভক্ত। কেউ মরমি গান পছন্দ করে, কেউ বাউলা, আবার কেউ আধুনিক গান। আমাদের দেশের সব মানুষের মুখেই গান শুনা যায়। এর মধ্যে বেশি ভাগ মানুষই লোকগান পছন্দ করে। লোকগান হল যা লোকের মুখে মুখে প্রচারিত। মানুষের মুখের কথা, বাক্য এবং ধ্বনি বাকশিল্প নামে নামাঙ্কিত। মানুষ মুখ দিয়ে কথা বলে। কথা দিয়ে মানুষ তার নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে। কয়েকটি অর্থবোধক শব্দ মিলে একটি বাক্য তৈরী হয়। মানুষ এই বাক্যের মধ্যে নিজের ভাব প্রকাশ করে থাকে। যেমন কোন মানুষের বই কিনার প্রয়োজন হলে, সে বলবে ‘আমি লাইব্রেরীতে যাব।’ এখানে তিনটি শব্দ মিলে একটি বাক্য তৈরী হয়েছে এবং মনের ভাব ফুটে উঠেছে। মানুষ ধ্বনির সাহয্যেও মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। শিশুরা ধ্বনির মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে। যেমন- শিশুদের ক্ষুদা পেলে তারা কাঁদে। এই কান্নার সময় এক ধরনের ধ্বনি উচ্চারণ হয়। আর এই ধ্বনির মধ্যে প্রকাশিত হয় শিশুর মনের কথা। তাতে মা বোঝতে পারে শিশুর মনের ভাব। শব্দ তথা ভাষার অংশকে ধ্বনি বলে। বর্ণ এক প্রকার সংক্ষেত বা চিহ্ন, ভাষা লেখার জন্য ধ্বনি প্রকাশে এটি ব্যবহৃত হয়। যে সুন্দর করে কথা বলে থাকে বলা হয়-চারুবাক। চারুবাককে সবাই পছন্দ করে। শুধু চারুবাককে নয়, যে সুন্দর করে গান গাইতে পারে থাকেও সবাই ভালোবাসে। আর গান সুন্দর হলে সবাই পছন্দ করে এবং এ গান জনপ্রিয় হয়ে উঠে। মানুষ নিজের মনের ভাব তথা সুখ-দুঃখের কথা গানের সুরে প্রকাশ করে থাকে। একটি গানে আমরা লক্ষ্য করলে দেখতে পাবো শব্দ, বাক্য,ধ্বনি এবং সুর সবই ব্যবহার করা হয়।
এসব শিল্প সম্মতভাবে যারা ব্যবহার করতে পারে তাদেরকে শিল্পি বলা হয়। অনেকে গুণ গুণ করে গান গাইলেও সে শিল্পি নয়। যে কোন জিনিস অর্জনের জন্য শ্রম ও সাধনা করতে হয়। শিল্পী হওয়ার জন্যও একথা প্রযোজ্য। আমাদের দেশের প্রায় মানুষরনা শ্রম জীবি। তারা প্রায় শ্রমে নিয়োজিত থাকে। তারা অনেকে ইচ্ছে করলেও শিল্প সাধনায় সময় দিতে পারে না। তবে শ্রমের সময় কষ্ট ভুলতে তারা গান গেলে মনে শক্তি যোগায়। তারা শ্রমের ফাঁকে ফাঁকে সুর তুলে কিংবা গুণগুনিয়ে গান করে থাকে। তারা শ্রমের সাথে এভাবে বিনোদন যুক্ত করে। ফলে শ্রমটা তাদের কাছে আনন্দ দায়ক হয়ে উঠে। শ্রমিক শ্রেণীর মানুষরা বেশির ভাগই লোক সঙ্গীতকে পছন্দ করে থাকে। এ গানের মধ্যে তারা তাদের নিজের আত্মার ধ্বনি অনুভব করে। তারা এভাবে গান গেয়ে নিজের মনকে হালকা করে। শুধু শ্রমিকরা নয়, যে কোন অনুষ্ঠান বা বিয়েতেও নানা ধরনের গানের আয়োজন থাকে।
তবে আমি মনে করি শ্রমিকরাই এসব গানের ভক্ত বেশি এবং তারা তাদের শ্রমজীবনের সাথে তাল মিলিয়ে গান করে। তারা এ গানগুলোকে ভক্তি করে। এ গানের সাথে সুর মিলিয়ে আজ আমাদের শ্রমসমাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তারা গানের মধ্যে তাদের জীবনকে খুজে পায়। তারা গানের মধ্যে তাদের সুখ-দুঃখ প্রকাশ করে মনে শান্তি আনতে পারে। আর এই শ্রমিকদের জন্যই আমাদের এদেশ টিকে আছে এবং শ্রমিকরা কঠোর শ্রম করে আমাদের দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। আর তাই শ্রমিকরা তাদের কাজে উৎসাহিত হওয়ার জন্য আনন্দে গান গেয়ে তাদের শ্রমকে আনন্দদায়ক করে তুলে।



৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নজরুলের চিন্তার কাবা প্রাচ্য নাকি পাশ্চাত্য?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫


কাজী নজরুলের বড় বিপত্তি তিনি, না গোঁড়া ধর্মীয় লোকের কবি আর অতিমাত্রায় বামের কবি, না হোদাই প্রগতিশীলের কবি। তিনি সরাসরি মধ্যপন্থীর। অনেককেই দেখি নজরুলের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেন কাফের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিলিস্তিনিদের আত্মদান ধর্মযুদ্ধ নয়; এটি স্বাধীকারের যুদ্ধ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৬ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৬

বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা যেকোন বিষয়কে ধর্মীয় ফ্লেভার দিয়ে উপস্থাপন করে৷ ইসলামের সাথে কতটুকু সম্পৃক্ততা তার ভিত্তিতে কনভারজেন্স নির্ধারিত হয়৷ বাঙালি মুসলমানরা এক্ষেত্রে এক কাঠি ওপরে৷ পক্ষ বিপক্ষ বেছে নেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওহাবী বাতিল মতবাদের স্বরূপ উন্মোচন

লিখেছেন মীর সাখওয়াত হোসেন, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭

নজদী ওহাবীদের সম্পর্কে আলােচনা করার পূর্বে নজদ দেশ সম্পর্কে আলােকপাত করতে চাই। আরবের মক্কা নগরীর সােজা পূর্ব দিকের একটি প্রদেশের নাম নজদ । এখন উক্ত নজদ দেশটি সৌদি আরবের রাজধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×