somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুয়েটীয় ফাইট এবং তার প্রকারভেদ

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

fight শব্দটি ইংরেজি ভাষার একটি অতি পরিচিত শব্দ। যার অর্থ আমরা সবাই জানি। মারামারি বা প্রতিযোগিতা টাইপ কিছু বুঝাতে শব্দটা ব্যবহার করা হয়। আমিও তাই জানতাম আজ থেকে প্রায় বছর দুয়েক আগ পর্যন্ত। কিন্তু বুয়েটের হল জীবনে প্রবেশ করার পর এই শব্দটার সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রয়োগের সাথে পরিচিত হলাম। এবং আজকাল আসল অর্থের চাইতে এই বিশেষ অর্থগুলোই বেশি ব্যবহার করি। জানিনা অন্য কোথাও এই অর্থগুলো ব্যবহৃত হয় কিনা। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথেও একটু শেয়ার করি।:P:P

এখন পর্যন্ত ৩ প্রকার(যতদূর মনে পড়ছে এই মুহূর্তে) ফাইটের নামকরণ করা হয়েছে। তবে কোনোটির সাথেই মারামারি/কাটাকাটি জাতীয় কোনো ব্যাপার-স্যাপার জড়িত নেই:D!!! আপাতত এই ৩ টিই জানাই। পরে সুযোগ পেলে অথবা নতুন কোন ফাইটের কথা জানতে পারলে সাত্থে সাত্থে আপ্লোডিয়ে দিবো;)

প্রথমেই আসবে ফোনফাইটের কথা। ফাইট সমাজে বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে এই ফাইট। বয়ফ্রেন্ড ও গার্লফ্রেন্ডের মধ্যে(কিংবা উড বি বি,এফ-জি,এফ) ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুঠোফোনে যে আজাইরা আলাপ চলে তাকেই ফোনফাইট শিরোনামে আখ্যায়িত করা হয়। যদিও আজাইরা লিখে দিলাম তবে যারা এই ফাইট দিয়ে থাকে তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ফাইট কোন কারণে বন্ধ থাকলে তাদের বদহজম সহ অন্যান্য গুরুতর শারীরিক গোলযোগ হয় বলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে।:P:P
তেমন কোন সময় বাঁধা না থাকলেও দেখা গ্যাছে মধ্যরাত্রির পরই এই ফাইট বেশি দেওয়া হয়। এই সময় হলের বিভিন্ন রুমের সামনের করিডরে ফাইটার রা তাদের অত্যাধুনিক এল,এম,জি থুক্কু মুঠোফোন গুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন বারান্দার গ্রিল ঘেঁষে। কেউ কেউ আবার মাঠেও নেমে পড়েন(হলের মাঠ)। আর বাসায় থাকলে বিভিন্ন সুনিপুণ পন্থা অবলম্বন করে পরিবারের সকলের দৃষ্টি এড়িয়ে এবং কারো বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক না ঘটিয়ে ফাইটার রা তাদের কার্যসিদ্ধি করেন।এবং এই ফাইট চলাকালীন সময়ে তাঁরা আইন্সটাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের কিছুটা হলেও প্রয়োগ দেখতে পান। কখন যে সময় পার হয়ে যায়!!!
সমীক্ষায় দেখা গ্যাছে এসময় ফাইটার রা তাদের ভয়েসের ডেসিবেল লেভেল প্রায় শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনেন। লেখকের তাই মাঝে মাঝে মনে হয়, তারা নিজেরা নিজেদের কথা শুনতে পান তো!! লেখক তার কয়েকজন ফাইটার বন্ধুর ফাইট চলাকালীন সময়ের কথোপকথন কৌতুহল বশতঃ শোনার চেষ্টা করতে গিয়ে তাদের মুখের কাছে প্রায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে কানের পর্দা স্থাপন করেও ব্যর্থ হয়েছেন!!! তবে এসময় তাদের মুখে সাধারনতঃ মিটিমিটি হাসি খেলা করতে দেখা যায়। তবে এর ব্যতিক্রম যে ঘটেনা তাও নয়। যেমন আমার এক বদরাগী বন্ধু প্রায়ই হলের মাঠে গভীর রাতে টর্চ জ্বালিয়ে তার মোবাইলের বিভিন্ন অংশ খুঁজে বেড়ায়, যা সে নিজেই এর খানিকক্ষণ আগে ছুঁড়ে মেরেছিল। কারণটা সচেতন পাঠক বুঝে নিন।:P
এই ফাইটের ক্ষেত্রে কোন ভেদাভেদ নেই যে কেউ এই ফাইট দিতে পারে। তবে মাঝে মাঝে এইটি যখন প্রতিদিন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার মত আবশ্যিক কাজে পরিণত হয় তখন অনেকে কিছুটা বিরক্ত বোধ করে।

এবার দ্বিতীয় ফাইট। এটিকে শুধু ফাইট ই বলা হয় তবে পার্থক্য করার জন্য আমি এর নাম দিয়েছি শিক্ষাফাইট। মূলত কয়েকজন মিলে একত্র হয়ে কোপানো লেভেলের পড়াশোনা করা কে শিক্ষাফাইট বলা হয়। একটু আঁতেল টাইপের পোলাপান এটি বেশি দিয়ে থাকলেও পরিক্ষার আগে প্রায় সবাই ই অন্তঃত একবার এটি দিয়ে থাকে।এটি করা যেতে পারে হলের কোনো সুবিধাজনক রুমে কিংবা লাইব্রেরিতে। তবে ফাইটে বিপরীত লিঙ্গের কেউ অন্তর্ভুক্ত হলে লাইব্রেরিই ভরসা। সাধারণতঃ ৩/৪ জন দরকার এই ফাইট সঠিক ভাবে দেওয়ার জন্য। এজন্য আগে থেকে প্ল্যান করা হয় যে কি কি নিয়ে আলোচনা হবে, কে কোন বই,চোথা সাথে আনবে। এই শিক্ষাফাইটের কারণে ফাইট ক্ষেত্রের আশেপাশের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়।:P

তৃতীয় ফাইটটি হল মুভিফাইট। কয়েকজন মিলে একসাথে বসে কোন একটি মুভি দেখা এবং মুভি দেখাকালীন সময়ে ব্যাপক কেওয়াজ করা এই ফাইটের বৈশিষ্ট্য।সবসময়েই চললেও সাধারণত টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার প্রতিটি পরীক্ষার শেষে এই ফাইট খুব আয়োজন করে দেওয়া হয়। আর প্রত্যেক ফাইটার একেকজন বড়সড় মুভি সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হয়। সব মিলিয়ে সেই মাপের মজা হয়।:D:D

তো এই গেলো ফাইট বিষয়ক আলাপ আলোচনা!! ভবিষ্যতে নতুন কোন টার্মিনোলজি পাওয়া গেলে তা নিয়ে আবার বকবক করব নিশ্চয়ই!!!

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×