ওঁ পার্থায় প্রতিবোধিতাং ভগবতা নারায়াণেন স্বয়ম্ ব্যাসেন গ্রথিতাং পুরাণমুনিনা মধ্যেমহাভারতম্।
অদ্বৈতামৃতবর্ষিণীং ভগবতীমষ্টাদশাধ্যায়িনীম্ অম্ব ত্বামনুসন্দধামি ভগবদ্গীতে ভবদ্বেষিণীম্।। ১
নমোঽস্তু তে ব্যাস বিশালবুদ্ধে ফুল্লারবিন্দায়তপত্রনেত্র।
যেন ত্বয়া ভারততৈলপূর্ণঃ প্রজ্জ্বালিতো জ্ঞানময়ঃ প্রদীপঃ।। ২
প্রপন্নপারিজাতায় তোত্রবেত্রৈকপাণয়ে।
জ্ঞানমুদ্রায় কৃষ্ণায় গীতামৃতদুহে নমঃ।। ৩
সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ।
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ।। ৪
বসুদেবসুতং দেবং কংসচাণূরমর্দনম্।
দেবকীপরমানন্দং কৃষ্ণং বন্দে জগদ্গুরুম্।। ৫
ভীষ্মদ্রোণতটা জয়দ্রথজলা গান্ধারনীলোপলা শল্যগ্রাহ্যবতী কৃপেণ বহনী কর্ণেন বেলাকুলা।
অশ্বত্থামবিকর্ণঘোরমকরা দুর্যোধনাবর্তিনী সোত্তীর্ণা খলু পাণ্ডবৈ রণনদী কৈবর্তকে কেশবে।। ৬
পারাশর্যবচঃসরোজমমলং গীতার্থগন্ধোৎকটং নানাখ্যানককেশরং হরিকথাসম্বোধনাবোধিতম্।
লোকে সজ্জনষট্পদৈরহরহঃ পেপীয়মানং মুদা ভূয়াদ্ভারতপঙ্কজং কলিমলপ্রধ্বংসি নঃ শ্রেয়সে।। ৭
মূকং করোতি বাচালং পঙ্গুং লঙ্ঘয়তে গিরিম্।
যৎকৃপা তমহং বন্দে পরমানন্দমাধবম্।। ৮
যং ব্রহ্মাবরুণেন্দ্ররুদ্রমরুতঃ স্তুন্বন্তি দিব্যৈঃ স্তবৈর্বেদৈঃ সাঙ্গপদক্রমোপনিষদৈর্গায়ন্তি যং সামগাঃ।।
ধ্যানাবস্থিত-তদ্গতেন মনসা পশ্যন্তি যং যোগিনো যস্যান্তং ন বিদুঃ সুরাসুরগণা দেবায় তস্মৈ নমঃ।। ৯
ইতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-মঙ্গলধ্যানং সমাপ্তম্।
বঙ্গানুবাদ
হে জননী ভগবদ্গীতা, সাক্ষাৎ ভগবান নারায়ণ অর্জুনের নিকট আপনাকে প্রকাশ করেছিলেন। প্রাচীন মহর্ষি ব্যাসদেব মহাভারতের ভীষ্মপর্বে আপনাকে গ্রন্থন করেন। হে অষ্টাদশ-অধ্যায়রূপিণী, অদ্বৈততত্ত্বরূপ অমৃতবর্ষণকারিনী, সংসারনাশিনী ভগবতী, আমি আপনার ধ্যান করি।। ১
হে মহাত্মা ব্যাস, আপনার নয়নযুগল প্রস্ফুটিত পদ্মপত্রের ন্যায় বিশাল ; আপনি মহাভারতরূপ তৈলপূর্ণ জ্ঞানপ্রদীপ প্রজ্জলিত করেছেন ; আপনাকে প্রণাম করি।। ২
শরণাগতের নিকট কল্পতরু, অশ্বচালনার নিমিত্ত এক হস্তে বেত্র ও লাগামধারী, গীতারূপ অমৃত দোহনকারী ও জ্ঞানমুদ্রাযুক্ত শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করি।। ৩
উপনিষদাবলি যেন গাভীসমূহ। গোপালকের নন্দন শ্রীকৃষ্ণ সেই গাভীর দোহনকর্তা। অমৃতময়ী গীতা সেই গাভীরই মহাদুগ্ধ। বৎস অর্জুন, বিবেকবান ব্যক্তিই পান করেন এই দুগ্ধ।। ৪
কংস ও চাণূর নামক দুই মহাদৈত্যের বিনাশকর্তা ; মাতা দেবকীর পরমানন্দ স্বরূপ ; বসুদেবের পুত্র জগদ্গুরু ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বন্দনা করি।। ৫
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধরূপী নদীতে ভীষ্ম ও দ্রোণ দুই তীর, জয়দ্রথ জল, গান্ধাররাজ পিছল নীল পাথর, শল্য কুমির, কৃপ খরস্রোত, কর্ণ তীরপ্লাবী তরঙ্গ, অশ্বত্থামা ও বিকর্ণ ভয়ঙ্কর দুই মকর এবং দুর্যোধন আবর্ত। সেই যুদ্ধনদী পাণ্ডবগণ নিশ্চিতরূপেই উত্তীর্ণ হন ; কারণ শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন তাঁদের কর্ণধার।। ৬
মহর্ষি পরাশরের পুত্র ব্যাসদেবের বচনরূপ সরোবরজাত ; হরিকথা প্রসঙ্গ দ্বারা বিকশিত ; নানা আখ্যানরূপী কেশরযুক্ত যে পদ্মের মধু জগতে সজ্জনরূপী ভ্রমরগণ অহরহ পান করেন, কলিকালের কলুষনাশক, গীতারূপ সুতীব্র সুগন্ধযুক্ত অমল মহাভারতরূপী সেই পদ্ম আমাদের কল্যাণের কারণ হোক।। ৭
যাঁর কৃপায় মূক হয় বাচাল, পঙ্গু লঙ্ঘন করে গিরি, সেই পরমানন্দরূপী মাধবকে বন্দনা করি আমি।। ৮
ব্রহ্মা, বরুণ, ইন্দ্র, রুদ্র ও মরুৎগণ দিব্য স্তবগানে যাঁর স্তুতি করেন, সামগায়কবৃন্দ অঙ্গ, পদক্রম ও উপনিষদযুক্ত বেদসমূহের দ্বারা যাঁর মহিমা কীর্তন করেন, ধ্যানমগ্ন যোগীগণ মন দ্বারা যাঁহাকে দর্শন করেন এবং দেবাসুরও যাঁর চরম তত্ত্ব অবগত নন, সেই পরম দেবতাকে প্রণাম করি।। ৯
শ্রীদ্ভগবদ্গীতার মঙ্গলধ্যান সমাপ্ত।