উনিশশো একাত্তর
ছাড়লাম সব, ঘর-বাড়ি, ভিটেমাটি, রক্ত টগবগে-
দেশকে ডেকে মা, ছাড়লাম মায়ের কোল।
উনিশশো একাত্তর
পাক-হানাদার আমার মায়ের জ্বেলে দিল আচঁল,
গণিমতের মাল হয়ে গেল মায়ের পেটের বোন।
উনিশশো একাত্তর
রনাঙ্গনে আহত মুক্তির শুনি আর্তনাদ,
বুকপকেটে কাঁদে রক্তে ভেজা চিঠি।
উনিশশো একাত্তর
শত শত মা কেঁদে ফিরে যায় ফাঁকা হয়ে গেছে কোল,
রাজাকার সব বুক ফুলিয়ে হাঁটে রাজপথে শোন।
উনিশশো একাত্তর
ভাবিনিতো কভু দেশতো হল আমার হবেটা কি?
দেশটা ছিল সবার আগে আমাদের কথা পরে।
উনিশশো একাত্তর
মুক্তির আনন্দ পেলাম,
পেলাম স্বাধীনতা স্পর্শ করার অহংকার।
অতঃপর-
কেটে গেছে অনেক বছর,
সেই স্মৃতি আজ বিস্মৃতপ্রায়,
শুধু মাঝে মাঝে স্বপ্নে ফিরে আসা,
ক্ষনে ক্ষনে জীবন বাজী রাখা-
চোখদু’টো ভিজিয়ে যায় আড়ালে।
স্বাধীনতা – বিজয় – মুক্তি?
কোন সে অর্থ? বুকের রক্তে
অর্জন করলাম তো ঠিক,
এত মানুষের রক্তের ঋণ-
রক্ষা করতে পেরেছি কি?
ঘোলা চোখের দৃষ্টিতে,
কুয়াশাচ্ছন্ন চারিদিক,
বুঝিনা কে আসে যায়-
প্রহর গুনি আমার চলে যাওয়ার।
নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলতে ভয় পাই আজ
ওরা বলে-
দেশের আজ প্রয়োজন নেই কোন মুক্তির।।
[উৎসর্গঃ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে। যারা ছিলেন বলেই আমরা আজ এখানে...যেন গড়তে পারি তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ- এই কামনা।]
১৬ই ডিসেম্বর, ২০১০, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৩৭