প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নিবন্ধনহীন কিন্ডারগার্টেন এবং ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলের কোনো পরিসংখ্যান নেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর কিংবা বোর্ডে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের তথ্যমতে, সারাদেশে ৭০-৮০ হাজার কিন্ডারগার্টেন ও ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলের কার্যক্রম চালু আছে। এসব কারা চালাচ্ছেন, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কী, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের নামে কী শেখানো হচ্ছে, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতার চেতনাপরিপন্থী কারিকুলামে পাঠদান করানো হচ্ছে কি না তাও দেখভালের কেউ নেই। ইংরেজি-মাধ্যম স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনের নিবন্ধন নেওয়া সম্পর্কে ঢাকা আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফাহিমা খাতুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলগুলো দেশে বসে বিদেশি শিক্ষার ব্যবসা করলেও বেশির ভাগই শিক্ষা বোর্ড থেকে নিবন্ধন নিয়ে থাকে।
মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং এর আঞ্চলিক কার্যালয় হতে নামকাওয়াস্তে অনুমোদন নিয়ে কিন্ডারগার্টেন ও ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলগুলো শিক্ষার নামে বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিবন্ধনও নেই। দোতলা বাড়ি, শনের ঘর কিংবা ছাদের ওপর ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে কিন্ডারগার্টেন। শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতাকে প্রাধান্য না দিয়ে আত্মীয়তাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, নয়তো কম বেতনে স্বল্পশিক্ষিত লোকজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে। খাতায় প্রতিষ্ঠানের নাম বসিয়ে, পেন্সিল, কলম, রাবার, এমনকি দর্জির দোকানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেনগুলোতে পোশাকের বাণিজ্যও করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অঘোষিতভাবে তৈরি করা হয়েছে এক ধরনের বিশেষ স্টেশনারি দোকান। শিক্ষার্থীদের এসব দোকান থেকে শিক্ষার যাবতীয় উপকরণ কিনতে বাধ্য করা হয়।
কিন্ডারগার্টেন ও ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলগুলোর শিক্ষার নামে বাণিজ্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রেহানা আখতার জানান, ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলাকাটা সেশন ফি আদায় করে। তা ছাড়া সারাদেশে যে যার মতো করেই কিন্ডারগার্টেন গড়ে তুলছে। এসবের জন্য একটি সরকারি নীতিমালা থাকা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ সকাল ৯:৩০