somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মোহিতের কথা……………

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-হ্যালো,
--হুমম, কি খবর তোর?
-ভাল।
--তোর গলার স্বর কাঁপে কেন?
-কই নাহ তো !
--তুই কি আজকেও আবার . . . . .
–............................
--কথা বলিস না কেন?
-দোস্ত, অনেক try করলাম but পারলাম না ।
--মানে?
-তোর কথা মত কাল আমি নেই নাই, but না নিয়ে আর থাকতে পারলাম না। সারা গা কাঁপে। believe কর!
--বুঝলাম, তোকে যে বললাম ডাক্তারের কাছে চল, তুই তো তা
শুনছিস না।
-না, আমি যাব না।
--শুধু শুধু কেন নিজের life টা শেষ করছিস?
–............................
--কথা বলিস না কেন?
-ওকে ছাড়া বেঁচে থেকে লাভ কি বল?
--কি লাভ হবে মানে?
-দেখ, “মানুষের বাচাঁর ইচ্ছা মরে গেলে বেঁচে থাকা স্বত্তেও আত্মা মরে যায়, তখন তার বেঁচে থাকা আর না থাকার মানে একি হয়”।
--এ কথার মানে কি?
-ভুলে গেছিস? এটা তুই ই আমাকে একদিন বলেছিলি, যখন আমি বেঁচে ছিলাম, তখন তোর কথার মানে বুঝি নাই। কিন্তু এখন বুঝি।
--মোহিত, আমি তো. . . . .
-আমার আত্মা মরে গেছে, তাই আমাকে অহেতুক বাচাঁনোর চেষ্টা করিস না।
--শোন . . . . .



কেউ কি কিছু বুঝলেন? মনে হয় না। আমিই বলি। মোহিত। class 10 এ পড়ে। Drags addicted! অনেক ভাল ছাত্র ছিল। একটা ঘটনা ওর জীবন টা ওলট-পালট করে দিল। ঘটনা টা হল, ও যাকে ভালবাসতো সে ওদের ৮ মাসের সম্পর্ক ভেঙ্গে অন্য একজন কে ভালবাসলো। মোহিত অনেক বড় একটা ঝটকা খেল। অনেক ভালবাসতো মেয়েটাকে। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ওর আজ এই অবস্থা। প্রথম দিকে যখন ও ড্রাগস নিত কেউ কিছু জানত না। একটা সময়ে এসে যখন সবাই জানল, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওর পরিবার (বাবা নেই, শুধু মা) অনেক চেষ্টা করেও ওকে ফেরাতে পারেনি। ওর সব বন্ধুরা ওর কাছ থেকে সরে গেছে, নেশা নেয় বলে। একটা বারও কেউ একে মানা করার জন্য বা mental support দেয়ার জন্য ওর কাছে থাকে নি। এরাই ওর সেই বন্ধুরা, যারা ওর জীবনের অর্ধেক জায়গা জুরে ছিল।

ওকে অনেক বোঝান হল, আগের জীবনে ফিরে আসার জন্য। প্রথম দিকে একদমই রাজি হয় নি। কয়েক মাসের জোড়াজোড়ির পর রাজি হল, ড্রাগস ছারবে। কিন্তু এক দিনের জন্যও পারল না। না খেলে নাকি হাত-পা কাঁপে, ঠিক থাকতে পারে না।

আমাদের আশেপাশের অনেকের জীবন আমাদের চোখের সামনে এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অথচ আমরা সব জেনেও কিছুই করতে পারছি না। হয়ত বা করতেই চাচ্ছি না। এটাই কি বাস্তবতা?

হয়ত বা হাঁ, হয়ত না।

এটা তো এক মোহিতের কথা। এরকম শত শত মোহিত আজ বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলছে। তরুণ সমাজে এখন প্রেম না করলে বন্ধুদের সামনে “part” থাকে না। সামান্য ভাব দেখানোর জন্য যে খেলা তারা শুরু করে, অথবা যে “মোহ” কে তারা ভালবাসা ভাবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তার ফলাফল খুব খারাপ হয়। কৈশর-তারুণ্যে প্রেম করাটা কি খুব বেশি জরুরি, যখন তাদের কাছে “ভালবাসা” শব্দের মানে স্পষ্ট নয়? আর যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফলাফলটা হয় শুধুই কষ্ট পাওয়া আর জীবনের কিছু মুল্যবান সময় নষ্ট???

দ্বিতীয়ত, আজকের যুগে সবাই সর্বদা ব্যস্ত। সন্তান ভাল স্কুলে পড়বে, ভাল ফল করবে, মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করবে,- এই কথাগুলোর বাইরে অভিভাবকরা অন্য কিছু চিন্তাই করতে চায় না। যার ফলে ছেলে-মেয়েদের সাথে বাবা-মা এর বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক খুব কম দেখা যায়। এই দুরত্ব আর মানসিকতা অনেক সময় কিশোরদের ঠেলে দেয় মাদকের দিকে। যেখান থেকে হয়ত বা কখনো তাদের আর ফেরান যায় না।


এটাই হচ্ছে আমাদের তরু্ণ সমাজের বর্তমান অবস্থা। যেখানে তারা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ, এবং এই আবেগ তাদের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে। শত ব্যস্ততার মাঝে আজ এই আবেগী এবং হতাশাগ্রস্থ তরুনদের পাশে থাকার সময় কারো নেই। আজ অবহেলার কারণে ঝরে পরছে শত শত কিশোর আর তরুণ। আমরা কখন চাই না, যাদের হাতে ভবিষ্যত গড়ার দায়িত্ব তারাই নিজেদের বর্তমানকে এভাবে মাদকের কাছে সপে দিক। তাই মাদক সেবীদের ঘৃণা না করে তাদের একটু সাহায্য করুন। ভালবাসা আর সঠিক নির্দেশনাই পারবে এই পথভ্রষ্টদের ফিরিয়ে আনতে। অবহেলা, গ্লানি বা লাঞ্ছনা নয়।



১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×