somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাটেক্সপো নাইট

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা আমার এক ফ্রেনড তার শরিরের সমস্ত রাগ ঢেলে লিখেছিলেন। আমার পড়ে খুব ভালো লেগেছে। তাই মনে করলাম শেআর করি।

২৫ নভেম্বর রাতে চীন-মৈত্রী সম্মেলনে আয়োজিত বাটেক্সপো নাইট। অনুষ্ঠানের শুরু কলকাতাইয়া দিদি মোনালি ঠাকুরের ‘যারা যারা টাচ মি...কিস মি’ গানটি দিয়ে। বিদেশি ক্রেতাদের চমৎকারভাবে একটি ‘মেসেজ’ পৌছে দেয়া হল শুরুতেই। সাদামুখো ইউরোপীয়ান আর লালমুখো আমেরিকানরা হিন্দি না বুঝলেও টাচ মি/ কিস মি তো বোঝে নিশ্চয়ই। এরপর অনেকগুলো চটুল হিন্দি সিনেমার গান গাওয়ার ফাঁকে বাংলায় নিজের অনুভূতি শেয়ার করে দিদি বাংলা ভাষাকে চরম সম্মান দেখান!

আ মরি বাংলা ভাষা!

এরপর “ইয়া আলি” গান গেয়ে জুবিন গার্গ উপস্থিত দর্শকদের শিরক্‌ যা আল্লাহর দৃষ্টিতে সবচেয়ে গর্হিত অপরাধ, তা শিক্ষা দেন। সুন্দরী ললনাদের ক্রোড়ে শুয়ে ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলি (রা.) কে ডেকে বলা হচ্ছে - ইয়া আলি আমাদের মদদ কর। আমরা যেন এবার অনেক টাকার অর্ডার পাই বায়ারদের কাছ থেকে।

মাভৈঃ ! মাভৈঃ !!

অতঃপর নানা জুটি পরিবেশিত ‘আইটেম সং’। তাতে কি দেখানো হয়? বাজারের (পড়ুন বলিউড বাজার) মেয়েদের কিছু বাজারের ছেলেদের সাথে উদ্দাম নাচানাচি আর গা ঘষাঘষি। এই জিনিস ‘গীতমালা’ শিরোনামে সিডি আকারে রাস্তার ধারে বিক্রি হয়। বেচার সময় পুলিশকে ঘুষ দিতে হয় কুটপাথের হকারটাকে। আর যখন গীতমালা লাইভ দেখানো হয় অডিটোরিয়ামে তখন বাইরে পুলিশের বড়দা RAB কুত্তা হাতে পাহারা দেয়।

বুঝলে হে ফুটপাথের পর্ন সিডিওয়ালা, তোমাদের যদি অনেক টাকা থাকতো, তোমরা যদি পর্ন সিনেমা বানিয়ে বাইরে রপ্তানি করতে পারতে, তোমাদের যদি ‘বিপিএমইএ - বাংলাদেশ গার্মেন্টস, থুক্কু, পর্ন ম্যানুফাকচারার এন্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশন’ থাকতো তাহলে তোমাদের নাইটের খবরও আমরা ‘প্রথম আলোতে’ ছাপাতাম। শিরোনাম দিতাম - “চোখ ধাঁধানো রাত”। ফিচারটা আগের পাতায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটার খবরটাকে ব্যঙ্গ করে হাসতো।

এই না হলে বদলে দেওয়া?

এরপর ফ্যাশন শো। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক দিয়ে বাঙ্গালীনিদের না-ঢাকা তনু দেখিয়ে বিজিএমইএ বিদেশীদের সস্তা দামে খাসা মাল বিক্রি করতে চেয়েছে। ৫৬ কোটি টাকার ফরমায়েশ পেয়েছেও তারা।

ব্রাভো! ব্রাভো!!

আমি জানি আবার আরেক জন কেউ আমাকে কষে ফান্ডামেন্টালিস্ট-টেরোরিস্ট বলে গালি দিয়ে বলবে, “নালায়েক! তুই বুঝিস না এটা বিদেশিদের পরার জন্য, আমাদের মা-বোনদের জন্য না।”

আমি আসলেই বুঝিনা। আমি যেটা নিজের জন্য চাইনা সেটা অন্যের জন্য চাইব এটা তো ইসলাম আমাকে শেখায়নি। এটা ইহুদি-হিন্দুদের বৈশিষ্ট্য। ইন্ডিয়ানরা সীমান্তে শ’য়ে শ’য়ে কারখানাতে ফেন্সিডিল তৈরী করে বাংলাদেশে পাচার করে, নিজেরা খায়না। ইহুদিরা মনে করে তারা ছাড়া অন্য যে কোন কাউকে ঠকানো শুধু জায়েজই না বরং ঠকানো উচিত যায়। কর্পোরেট জগতের সব শোষণ, সব বাটপারী ইহুদিদের আবিষ্কার।

আমরা, নামে মাত্র মুসলিমরা আজ এদের অনুসরণ করছি। আমরা এমন পোশাক বানাচ্ছি যা নাকি আমরা পড়বোনা, বিদেশীরা পড়বে। সেই পোশাক আমাদের দেশী এবং ইন্ডিয়ান মডেল সহকারে দেখানোর জন্যই এত আয়োজন। আচ্ছা ওই রাতে ক’জন বিদেশী ছিল আর ক’জন দেশী ছিল? বিদেশীরাই যদি মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে এ দেশে এই অনুষ্ঠান করার মানে কী?

ধন্যবাদ সরকারকে। প্রতিবার শেরাটনের বলরুমে যে নোঙরামিটা হত তা আরো বড় পরিসরে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করায়। ধন্যবাদ সরকারকে পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে ঈদের আগে সাহায্য করায়। ফকির-ফকিরনী গুলোকে নতুন কাঠামোতে বেতন আর ঈদের বোনাস দেয়া লাগেনি দেখেই তো এত গর্জিয়াস একটা আয়োজন করা গেছে।

স্পেশাল থ্যাঙ্কস দেব আমি ইসলামি ব্যাংককে। সাধারণ সুদি ব্যাংক এই অনুষ্ঠানকে সমর্থন করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ইসলামি শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত এই দাবী করে যখন মুসলমানের বাচ্চারা এমন জঘন্য একটা আয়োজনের কো-টাইটেল স্পন্সর হয় তখন আমার মুখে একদলা থুথু বেশী আসে। আর কত টাকা দরকার এদের? আর কত ধর্ম বিক্রি করবি এরা? আর কত আল্লাহর দুশমনদের পা চাটবে? পা চেটে কুকুর হাড় পায়, সম্মান পায়না।

এই বাংলার মেয়ে প্রীতিলতা সারা শরীর শাড়িতে ঢেকে ব্রিটিশ বানিয়াদের তাড়াতে অস্ত্র ধরেছিলেন। আজ সেই বাংলার মেয়েরা প্রমোদিনী হয়ে সারা শরীর খুলে বিদেশি বানিয়াদের বিনোদিত করছে। ৭১- এ যারা আমাদের মা-বোনদের পাকিদের হাতে আমোদ-ফুর্তি করতে তুলে দিয়েছিল তাদের আমরা গাল দেই রাজাকার বলে। বিজিএমইএর মাথাদের অবশ্য তা বলার স্পর্ধা রাখিনা। দেশী দেহ দিয়ে বিদেশী প্রভুর মনোরঞ্জন করা হয়েছে তো কী হয়েছে? আপসে তো হয়েছে। মডেলদের এবং বিদেশি ক্রেতাদের ‘সফরসঙ্গিনী’দের উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেয়া হয়েছে বটে।

হে গার্মেন্টস কর্মী বোন, তুমি সেলাই মেশিনে রক্ত পানি না করে যদি একটু শরীর বেচতে শিখতে!

শুরুতে ফিরে যাই। বিভিন্ন অপমানসূচক কথা বলার পরে আমার সেই ছোটভাই একটা চমৎকার প্রার্থনা করেছিল আমার জন্য - আমি যেন ‘আমার’ হেভেনে যাই যাতে ওর সাথে কখনো আমার দেখা না হয়। আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়েছিলাম। আবু জাহল্‌ বদরের যুদ্ধের আগে কাবা ঘর ধরে আল্লাহর কাছে দু’আ করেছিল যেন যারা সত্যের উপর আছে তারা জেতে। আল্লাহ তার দু’আ কবুল করে নিয়েছিলেন, মক্কা থেকে আসা কাফিরদের দলটা খুব খারাপ ভাবে হেরে গিয়েছিল আর আবু জাহল্‌ মারা পড়েছিল।

আল্লাহ, তোমার তৈরি করা মানুষ নামের এই রোবটদের মধ্যে যদি মানবিকতাবোধের ছিটেফোটা থেকে থাকে তবে তাদের তুমি একটু চোখ খুলে দুনিয়াটা দেখার ক্ষমতা দাও। চীন মৈত্রীর চোখ ধাঁধানো রাতের রোশনাই লাগা চোখগুলো যেন একবার আগারগাঁও বস্তির ছেড়া-ত্যানা পড়া ফকিরনী আর তার ন্যাংটা ছেলেটাকে দেখার মত করে দেখতে পায়।

দোহাই আল্লাহ তোমার, মাত্র একটাবার দেখতে দাও।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×