somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ছিঃনেমা টাইপ ডিজ্যুস প্রেম-ছ্যাঁকা-বিয়ের গল্প (টাইটেল হয় না এমন পঁচা একটা গল্প)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলেটা হা হা করে অট্ট হাসি ছাড়ে ওপাশের কথা শুনে।
"ছাগলের মতন হাসিস কেনো?" বিরক্তি ভেসে আসে ওপাশে মেয়াটার গলায়, "ঠিক পাঁচ মিনিট, আমাকে বিয়ে করবি কিনা সেটা হ্যাঁ কি না তে বল!" - চরমপত্র পাঠায় মেয়েটা।

"শোন" - একটু তরল গলায় বলে ছেলেটা, "আগেরবারে তোকে ঠিক এই কথাটাই জিজ্ঞেষ করেছিলাম, জবাবে ঊলুবনে মুক্তা আর সেই মুক্তার হার হয়ে বাঁদরের গলায় উঠানো- কিছু বাকি রেখেছিলি?"

"ফাজলামি করিস না!" - ধমক, রাগ, অধৈর্য্য একসাথে ছুড়ে মারে মেয়েটা ফোনে, "ঠিক ঠাক বল।"

"আমার জবাব আমি জানি, তুই আবার ফসকাবি নাতো?" - জানতে চায় ছেলেটা।

"ধ্যাৎ!" - বিরক্তিতে জবাব দেয় মেয়েটা, "রাজী কি না বল, সময় নেই।"

"আমি তো সেই কবে থেকেই রাজী, খালি তুই ই কি দেখেছিলি তোর এক্স-বয়ফ্রেন্ডের মধ্যে কে জানে! এবারে তো প্রমান পেলি যা বলেছিলাম, শালা একটা প্লেবয়!" - বলে ছেলেটা, তারপর ত্রস্ত আরো কিছু শব্দ জোড়ে- "আগে দেখা কর, এসব হুট করে নেবার সিদ্ধান্ত না রে, কোথায় আসবো? এখন কৈ তুই?"

"আমি রাস্তায়," জানায় মেয়েটা, "শোন, তোর বাসায় যাবো, সেখানেই কথা হবে, খালা আবার বকবে না তো?"

"মা ডাকা অভ্যেস কর" ফোঁড়ন কাটে ছেলেটা, "নাহ, বকবে কেন? তোকে পছন্দ করে মা, জানিসই তো।"

"ঠিক আছে, তুই অফিস থেকে বেরো" তাড়া দেয় মেয়েটা, "আমি ঘন্টা খানেকে পৌঁছোবো"। - লাইন কাটে।

ফোন রাখার পরে হঠাৎ করেই রক্ত ঝলকে ওঠে বুকের মধ্যে, সেই কবে থেকে ও মেয়েটাকে পছন্দ করে, চায়, এমনকি ওর পরিবারও পছন্দ করে মেয়েটাকে। মেয়ের পরিবারও আপত্তি করবে না, জানে ভালোই।

মেয়েটা ওর খালাতো বোন। সেও জনে ছেলেটা ওকে পছন্দ করে, তবে পাত্তা দেয় না, একবার সোজা বলে ফেলেছিলো, "এই, বিয়ে করবি আমাকে?"

জবাবে মেয়েটা ওকে টাশ টাশ কিছু কথা শুনিয়ে দিয়েছিলো, ঊলুবনে মুক্তো, বাঁদরের গলায় মুক্তোর মালা - এসব। পরে জেনেছে, কলেজের এক সিনিয়ারের সাথে এফেয়ার আছে মেয়েটার।
সেটা ব্রেকআপ হবার পরে ভেবেছিলো আবার প্রপোজ করবে, তবে বিশদ জানার পরে আর সাহস করে নি, কারম মেয়েটাই পুরোনো সম্পর্কটা ভেঙেছিলো, ইউনিতে গিয়ে আরেক বড়ভাইয়ের প্রেমে পড়ে।

যাকগে, ওর অবশ্য কোনো দিকে তাকানো হয়নি পরে আর, স্বভাবে লাজুক, কিছুটা অমিশুকও আছে ছেলেটা। আর চাকরীতে ঢুকে অফিস নিয়েই ব্যাস্ত - সময় কোথায় মানুষ খুঁজে, তাকে যাচাই বাছাই করে প্রেমে পড়তে?

আজকের এই আচমকা ফোনটা পেয়ে এসব একের পর এক চোখের সামনে ভেসে উঠলো ছেলেটার। "জরুরী পারিবারিক কাজ" - বলে অফিস থেকে কেটে পড়লো।

বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সোজা ছাদে, দুজনে।

ঘন্টা দুই অনেক কথা, মূলতঃ মেয়াটাই ঝাল ঝাড়লো প্রাক্তন "অবিশ্বাসী" প্রেমিকের ওপর। ছেলেটা একবার ভেবেছিলো খোঁচা মেরে মেয়েটার সেই পুরোনো ব্রেকআপ, বিনা নোটিশে একজনকে ফেলে আরেকজনের কাছে চলে যাওয়াটা তুলবে, পরে আর টানেনি, যাক না! যা যাবার তা গেছে! আর বয়েসও ছিলো কম! তার'চে আগামীকালের চিন্তাই ভালো বরং।

এবারে একটু ধাক্কা খেলো ছেলেটা, কালই বিয়ে করতে হবে, যেভাবেই হোক, পারিবারিক ভাবে কাজি ডেকে কবুল অথবা নিজেরা কাজি অফিসে যাওয়া - কালই চাই! এই তড়িঘড়ির কারন, সেই "ধোঁকাবাজ" প্রাক্তন প্রেমিক, তার নাকি পরশু বিয়ে, ওকে বলে এসেছে মেয়েটা, কালই বিয়ে করে ছাড়বে - সেই কথা রাখতেই হবে, হবেই হবে!

"হুম" - একটু ভাবে ছেলেটা, "চল বরং কাজি অফিসেই যাই, নাইলে একদিনে সম্ভব হবে না, দুজনেই দুবাড়ির একমাত্র ছেলে/মেয়ে, সবাই চাইবে ধুমধাম করতে, সেটা অনেক সময়ের ব্যাপার। তুই কি কালই চলে আসবি? নাকি যাষ্ট বিয়ে করে রাখবো আমরা, পরে তোলাতুলি-অনুষ্ঠান?"

"নাহ, কালই চলে আসবো" বলে মেয়েটা জেদি কন্ঠে, "ওকে আমি দেখিয়ে দেব।"

"পাগলামি...." বলে ওঠে ছেলেটা।

"চুপ!" ফুঁসে ওঠে মেয়েটা, "কাল সকালে বের হবো বাসা থেকে, বাকি তোর কাজ, আমি এসাপ সবাইকে জানাতে চাই আমি বিয়ে করে ফেলেছি, বুঝলি? আমি এখন ভাগি, মা কোত্থেকে এক বুইড়া বেটা ধরে এনেছে, সন্ধায় দেখতে আসবে আমাকে, যাইরে।"

"দেখিস, আবার ঝুলে পড়িস না" - টিপ্পনি কাটে ছেলেটা, "আমিতো বিয়ের আগেই বিপত্নিক হবো"

"আরে নাহ!" - মেয়েটা বলে বিরক্তি নিয়ে একরাস, "মা অনেক ঝামেলা করে রাজি করিয়েছে, যাষ্ট ওদের নাকি কথা দিয়ে ফেলেছে, দেখতে আসবে, আমি বলেছি বিয়ে করবো না, তবে মা যেহেতু বলে ফেলছে, তাই আরকি।"

"ঠিক আছে" কথার শেষ টানে ছেলেটা, "চল বেরোই।"

মোড়ে গিয়ে সিএনজি খুঁজে দেয়, তারপর পরিচিত বন্ধুদের ফোন করতে থাকে, কাজি, রিসিপশন, গোক নিজেরা বিয়ে, একটু ভালো কোন রেস্টুরেন্টে বসতে হবে বৌ আর বন্ধুদের নিয়ে, একটা মাইক্রো আর একটা কার - এইসব টুকটাক।

তবে এসব ভাবনা মাঝে মাঝেই তাল হারাচ্ছিলো, নীচে নামবার সময় সিঁড়ি ঘরে, হঠাৎই ওকে জাপটে ধরে সোজা ঠোঁটের ওপর একটা চুমু এঁকে দিয়েছে আজ মেয়েটা। - এটা কেমন যেনো মাদকতায় ডুবিয়ে দিচ্ছে ওকে।

সেই রাতেই, রাতের খাবার পরে এলো খবরটা, খালা খুব খুশি হয়ে জানিয়েছেন ওর মাকে, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলো একটু আগে। যারা দেখতে এসেছিলো, তাদেরতো মেয়ে পছন্দই ছিলো, মেয়েরও পছন্দ হয়ে গেলো ছেলে, তাই কাজি এনে বিয়ে সারা। মেয়ে নিয়ে গেছে জামাই। এরপর বিশদ ফিরিস্তি, তারপর কবে কি প্রোগ্রাম করা যায়, যতোই যা হোক, আনুষ্ঠানিকতা চাই ই চাই কিছু, কোন কম্যুনিটি সেন্টার ভালো হয় -এসব।

ফোন করবে? নাহ! ওরা নতুন বৌ-জামাই, আজকেই ফোন করা ঠিক হবে না। একটা এসএমএস করে ও মেয়েটাকে, শুধুমাত্র তিনটে জিজ্ঞাসাবোধক চিহ্ন।

তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপচাপ একটা ডিভিডি নিয়ে বসে যায়, কমেডি মুভি একটা। রাতে ঘুম হবে না, জানে।

পরদিন একটা এসএমএস আসে বেলা করে, "স্যরি, তোর ক্যারিয়ার কেবল শুরু, আর ও অলরেডি এমএনসিতে টপ লেভেলে। এই পাত্র হাতছাড়া করার মত বোকামি করা ঠিক মনে হয় নি। ভালো থাকিস। মাফ করে দিস।"

"আই হেইট গার্লস!" - জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বিড়বিড় করে মন্তব্য করে ছেলেটা।

তারপর কাজে ডুবে যেতে চেষ্টা করে...


বিশেষ নোটিশ: কুড়ি মিনিটে এই বাংলা ছিঃনেমা টাইপ ডিজ্যুস প্রেম-ছ্যাঁকা-বিয়ের গল্প লিখছি খালি মেজাজ খারাপ কৈরা, এক শাহরুখের আগমন নিয়া ব্লগে যা শুরু হৈছে, সেইটারে একটু ব্রেক দিবার জন্যেই এই ফাউল গল্প। কারো ভালো না লাগলে মাইনাসটা শাহরুখরে দিয়েন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৭
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×