ছোটবেলা থেকেই বাবা-মার কাছে জ্ঞানী লোকের প্রশংসা শুনতাম। তাই সবার মত বড়লোক হবার বদলে ভাবতাম, জ্ঞানী হব। জ্ঞানী হবার একটা তরীকা জানতাম, নো দাইসেলফ, নিজেকে জান। ভাবতাম, আমি বুঝি নিজেকে জানি। কিন্তু আমার মনটাকে কখনো খুঁজে পাইনি। বুঝিওনি যে, আমি পাইনি। ভাবতাম, ব্রেনের ভিতরের চিন্তাগুলোই বুঝি মন।
আমার পিঠাপিঠি ছোট ভাইটা যখন ভালো সুযোগ পেয়ে বিদেশে পড়তে গেলো, আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কি একটা যেন ঠিক ছিলনা। কোথায় যেন একটা কিছু দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছিলো। যেদিন আমাকে ক্যাপ্টেন হতে দেয়া হবেনা জানানো হয়েছিল, সেদিনও আমার মুখ মলিন হয়নি। কিন্তু বহুদিনের সহকর্মী বন্ধু যখন চাকরীতে ইস্তফা দেয় দূরে চলে যাবার জন্য, আমি খুব খুশি হই তার ভবিষ্যত সাফল্যে। কিন্তু আমার মাঝে কোথায় একটা যেন কেউ মারা যায়। আমি বুঝি না কি হয়, আমার যুক্তিতে এতে আমার খুশিতে বাতাসে ভাসার কথা। আমি মনে-প্রাণে যাদের সাফল্য কামনা করেছি, তাদের সাফল্যে আমার প্রত্যাশিত আচরণ আমি পাই না। সদা হাস্যময় আমি চুপ হয়ে যাই। আপনা-আপনি একটা গানের কথা মনে পড়ে, চলে যায় যদি কেউ বাধঁন ছিড়ে, কাঁদিস কেন মন... অযৌক্তিক আচরণ করার কারণ তবে এই মন। হায়, দুনিয়ার লোক যারা আমারে ব্যাপক জ্ঞানী বলত, আর্মিতে থাকার সময় যারা আমারে ব্লাডি ইন্টেলেকচু্য়াল বলত, তারা কি জানত, আমি নিজেরে জানতে পারি নাই। আমার মনটাকেই কখনো খুঁজে পাই নাই।