somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহবু১৫৪
জীবনে সহজেই কোন কিছু পাবার আশা করাটা বোকামী। অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার হয়েই আসতে হয় কাংক্ষিত লক্ষে। এই পথ এত সোজা নয়। অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে সেই পথ চলায়। হয়তো আরো অনেক কোথিন হবে সামনের পথ টুকু। তারপর ও হার মেনে নেয়ার পক্ষে আমি নই। জয়ী যে আমাকে হতেই হবে।

বৃষ্টি ভেজা সকাল

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ৮ টার সময় একটা ক্লাস থাকলেও রাজু আজ ইউনিভার্সিটি গেল না। বৃষ্টি এর সাথে হাল্কা ঠান্ডাও পড়েছে। তাই পরিবেশটা বেশ সুন্দর লাগছে রাজুর কাছে। বাসায় আজকে তেমন কেউ নেই। বাবা অফিস চলে গিয়েছেন। মা রান্নাঘরে ব্যস্ত। তিনিও রান্না শেষ করে বাসা থেকে কি এক কাজে বের হবেন। আর বাসার অন্য সদস্যরা আসতে আসতে রাত হবে। রাজুর আজকে কোন কাজ নেই। প্রথমে ভেবেছিল সেও বের হবে ঘুড়তে। কিন্তু আকাশের অবস্থা ভাল নয় তাই সে তার সিদ্ধন্ত বদল করে বাসাতেই বসে রইল। পড়াশুনায় মন বসাতে না পেরে সে টি ভি ছাড়লো কিন্তু ডিশ লাইন নেই। ইন্টারনেট টাও এখন কাজ করছে না। নিরুপায় হয়ে সে বারান্ডায় জেয়ে বসল। অসাধারণ লাগছে আজকে চারপাশ।

বসে থাকতে থাকতে এক সময় বারান্দাতেই ঘুমিয়ে পড়ল সে। কতক্ষণ ঘুমিয়েছে সে বলতে পারল না। ঘুম ভাংল বাসার লকিং বেল এর আওয়াজ শুনে। বেশ কয়েকবার আওয়াজ হল। মা বাসায় না থাকাতে কোন উপায় না দেখে রাজু জেয়ে দরজা খুলে দিল। দরজার ওপাশে দাঁড়ানো নয়না। তাকে দেখে রাজু বেশ অবাক হল। এই সময় সাধারণত নয়না কলেজ এ যায়। কেন এখন সে এখানে আসল? এরকম সাতপাচ ভাবতে ভাবতেই নয়নাই প্রথম কথা বলল। সে জানালো আজকে তার ছুটি। তাই সে যায় নি। তাই সে রাজু এর সাথে দেখা করতে এসেছে। রাজু সব শুনে একটা হাল্কা হাসি দিয়ে নয়না কে ভিতরে আসতে বলল।

নয়না রাজুদের বাসা থেকে ৩টা বাসা দূর এ থাকে। রাজুদের পরিবারের সাথে তাদের পরিবারের যোগাযোগ টা বেশ ভাল। নয়নারা এখানে আসার পর প্রথমেই রাজুদের সাথেই আগে পরিচিত হয়েছিল। নয়নারা ৩ বোন। ২ বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন বাকি এই নয়না। সে এখন অনার্স করছে। অপুরূপ সুন্দরী বলতে যা বুঝায় সেরকম আহামরী কিছু নয় নয়না। তারপর ও রাজু যে নয়না কে পছন্দ করে মনে মনে সে কথা বাসার কেউ অথবা নয়নার বাসার কেউ জানে না। আর নয়না এর সাথে সামনা সামনি খুব একটা কথাও হয় না রাজু এর।

আজকে এভাবে নয়না কে দেখে ভিতরে আসার কথা বলতেই যেন ভুলে গেল রাজু। পরে যখন খেয়াল হল তখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে নিল নয়নার কাছে। ভিতরে এসে বসতে বলল নয়নাকে। নয়না ভিতরে এসেই রাজু এর আম্মা কই সেটা জিজ্ঞেস করল। রাজু জানালো বাসায় নেই। এ ভাবে করে চলে আসাটা ভাল দেখাচ্ছে না বিধায় নয়না চলে যাওয়ার জন্য উঠল। রাজু তাকে যেতে মানা করল আর বলল কোন সমস্যা নেই। সময়টা কাটছিল না। এখন ভাল কাটবে আশা করছি।এই বলে নয়নার সাথে রাজু গল্পে মেতে উঠল।

গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। বাহিরে এখন ও বৃষ্টি হচ্ছে। তাই নয়না যেতেও পারছে না বাড়িতে। কন কনে একটা ঠান্ডা হাওয়া বইছে চারপাশে। এ সময় নয়না বারান্দায় জেয়ে রেলিং এর বাহিরে হাত দিয়ে বৃষ্টি ছুয়ে দেখতে লাগল। রাজু জ়েয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে পলকহীন চোখ এ তাকিয়ে রইল নয়নার দিকে। নয়না প্রকৃতির মাঝে যেন মিশে যাচ্ছে। বৃষ্টি প্রতিটা ফোটায় যেন তার হাতের ছোয়া পেয়ে আরো তুমুল বেগে ঝড়তে চাইছে। রাজু ও বাহিরে হাত দিয়ে বৃষ্টির ফোটা ছুয়ে দেখতে লাগল। হঠাৎ রাজু হাতে বৃষ্টির পানি নিয়ে নয়না এর দিকে ছুড়ে মারল।

নয়না এটা খুব একটা পছন্দ করল বলে মনে হল না। তাই রাজু তার ভুল বুঝতে পেরে বারান্দা থেকে সরে আসল। কিন্তু কি মনে করে জানি কিছুক্ষণ পর আবার বারান্দায় যেয়ে নয়নার এক হাত ধরে বসল রাজু। নয়না অবাক হয়ে ফিরে তাকাল রাজুর দিকে। নয়না কিছু বলতে যাবে তখনই রাজু বলে বসলো তোমাকে ভালবাসি। ঘটনার আকঃশীকতায় ২ জন যেন পাথর হয়ে কিছুক্ষন ২ জনের দিকে তাকিয়ে থাকল। নয়না কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেল। রাজু মাথা হেট করে বসে থাকল অনেকক্ষন। নিজের কাছেই তার এখন খারাপ লাগছে। কেন সে এভাবে নয়না কে বলতে গেল তার মনের কথা। কি দরকার ছিল?? নাই বা বলতো সে!

মাথা উঠিয়ে যখন সোফা থেকে উঠতে যাবে তখনই একটা কাগজ দেখতে পেল টেবিল এ রাজু। খুলে দেখে সেটা রাজু এর চিঠি। আর লিখেছে নয়না। কিন্তু নয়না তাকে সামনা সামনি দেয় নি। চিঠি তে নয়না যা লিখেছে সেটার সারমর্ম হচ্ছে রাজুকে নয়না পছন্দ করতো কিন্তু কোনদিনন বলতেও পারে নি। আর এ দিকে রাজু কখনও নয়নার কাছে তার মনে কি আছে সেটা প্রকাশ করে নি। তাই তাদের মধ্যে সম্পর্ক তা তৈরি হয় নি। তাই রাজুকে কাপুরুষ হিসেবে আক্ষায়িত করল। আর তার আজকে রাজুর বাসায় আসার কারণ হল যে নয়নার আগামী সপ্তাহে প্রবাশী এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু নয়নাকে রাজু মনের কথা বলতে পারেনি সেহেতু নয়না একরকম ধরেই নিয়েছিল যে সে আর কিছু বলবে না। তাই নয়না শেষ বিদায় নিতে এসেছিল রাজু এর কাছ থেকে।

আর রাজু এমনই এক সময় এ কথা নয়না কে বলল যখন আর ফেরার কোন পথ নাই।

বাহিরে বৃষ্টির বেগ বেড়ে যাচ্ছে আর সাথে বাড়ছে রাজুর বেড়ে যাচ্ছে রাজুর চোখের পানির অবিরাম স্রোতধারা।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×