somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার রুপকথার গল্প

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডাক্তার যেদিন জানালেন চার মাস বেড রেস্ট আর তারপর যাবতীয় ভ্রমণ নিষিদ্ধ, শুধুই বাসায় থেকে বিশ্রাম নিতে হবে পুরো নয়মাস সেদিন সামনের দিনগুলি নিয়ে কোনও ভাবনাই মাথায় আসেনি। মনে হলো এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে স্বাভাবিক ব্যাপার। এমনই তো হবার কথা। পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপহার পেতে হলে এইটুকু কষ্ট সহ্য তো করতেই হবে। এবার আর কোন ভুল নয়। স্কুল থেকে এক বছর ছুটি পেতেও তেমন ঝামেলা হলনা। অতঃপর শুরু হল আমার অপেক্ষার পালা।

প্রথম চারমাস শুধুই বিছানা সঙ্গী। টিভি দেখতে অসহ্য লাগত। বই পড়লে গা গুলিয়ে উঠত। সময় কাটত শুধু ঘরের ছাদ আর দরজা জানালার পর্দার ভাঁজে চোখ রেখে। কিন্তু তবু কি সময় কাটত? এ যেন জোর করে ঠেলে ঠেলে সময় পার করে দেয়া। এর মাঝে আরও বেশি অসুস্হ হয়ে হসপিটালেও যেতে হল দুবার। তবুও যেন সময় যায়না। মাঝে মাঝে মনে হয় এ বছরই যেন নয় মাস অনেক বেশি সময় নিয়ে যাচ্ছে। আমার প্রিয় ক্ষেত্রগুলো যেমন সামু,ফেসবুক এগুলো থেকেও অনেক দুরে চলে গেলাম কারণ কম্পিউটারের সামনে বসলে মাথা ঘুরতে থাকে। এত কস্টের মাঝেও শান্তির পরশ পেতাম তখনই যখন চোখ বুজলেই একটি স্বর্গীয় হাসি দেখতে পেতাম। জানিনা সে কেমন হবে। কি রুপেই বা সে আসবে আমার কাছে। সে কি হবে আমার আদরের রাজপুত্র নাকি আহ্লাদী কোন রাজকন্যা।কেমন হবে সে দেখতে? ছোট্ট ছোট্ট পা দিয়ে যখন সে লাথি মারত বুঝতাম বেশ দস্যিই হবে আমার দেবদূত অথবা পরীটা। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না।

অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হল। আমার এই ছোট্ট ঘর আলো করে এল আমার রাজকন্যা, আমার ছোট্ট পরী। আধো ঘুম আধো জাগরণের মাঝে যখন ওকে প্রথম দেখি সে অনুভূতি প্রকাশ করার চেস্টাই আর করছিনা। কোন মা ই বা কবে পেরেছে তার প্রথম মা হবার অনুভূতি যথার্থভাবে কলমে ফুটিয়ে তুলতে? আমিও পারব না। শুধু এটাই জানি আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহারটি এখন আমার কোলে।


আমার মত একজন অতি ক্ষুদ্র মানুষ কে এত সুখ দেওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার সীমা নেই। শুধু ভয় হয় এই ইভ টিজিং এর সমাজে আমার মেয়েটাকে আমি সব ধরনের বিপদ থেকে আগলে রাখতে পারব তো? দেখতে দেখতে পাঁচ মাসে পা দিল আমার রুপকথা। এভাবেই একদিন পায়ে পায়ে পাঁচ,দশ,পনের,বিশ করে এগিয়ে যাবে সে। তখনও কি সমাজটা এরকমই থাকবে? একটুও কি পাল্টাবে না? জানিনা।

এই পাঁচ মাসের মত ওর বাঁকি জীবনটাও যেন এমনই আদর এমনই যত্নে কেটে যায়,সবরকম অনিস্ট থেকে ও যেন নিজেকে রক্ষা করতে পারে সৃষ্টিকর্তার কাছে এখন এটাই আমার একমাত্র চাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:০৫
৪৬টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×