somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ রাসেল হাওলাদার
আমি একজন সাধারন boy | তবে হ্যাঁ একটু বেশিই সাধারন....... ভালোবাসি নিজের পরিবারকে,ভালোলাগে শিশুদেরকে, ভালোবাসি প্রকৃতিকে, ভালোবাসি পথের নাম না জানা ফুল,কখনওবা ভালোলাগে পথের শিশুদের.........

আজ ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ১৮তম কালো দিবস

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সোমবার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ১৮তম কালো দিবস। মুসলিম উম্মাহর আরেকটি বেদনাবহ দিন। এই দিবসটি ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশধারী কট্টর হিন্দু মৌলবাদী ভারতের প্রকৃত চেহারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরে।
এবার এমন এক সময়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে, যখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট বাবরী মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫শ' বছর পর মসজিদের ভূমিকে দ্বি-খন্ডিত করে এক ভাগ রামমন্দিরের বলে বিভক্ত রায় দিয়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। ভারতীয় আদালতের একতরফা রায় কেবল ভারতের মুসলমানই নয়; গোটা বিশ্বের মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়েছে। অথচ এক বছর আগেও দেশটির লিবারহান কমিশন তার রিপোর্টে বলেছে, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ছিল নিখুঁত। এর জন্য তৎকালীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতা ও পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী, আরেক বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি এবং সাবেক বিজেপি সভাপতি মুরলি মনোহর যোশীকে দায়ী করা হয়। ১৭ বছরে বিভিন্ন সরকার নানা অজুহাতে ৪৮ বার লিবারহান কমিশনের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ১৯৯২ সালের আজকের দিনে ভারতের কংগ্রেস ক্ষমতাসীন থাকাকালে উগ্রবাদী হিন্দুরা উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা শহরে অবস্থিত ষোড়শ শতকের এই অনুপম মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শনটি ধ্বংস করে। হিন্দু শাস্ত্রীয় রামের জন্মস্থান ও মন্দিরের স্থলে সম্রাট বাবর মসজিদ নির্মাণ করেছেন মর্মে হাস্যকর অভিযোগ এনে কংগ্রেস সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই নিন্দিত ধ্বংসকান্ড সংঘটিত হয়। ভারতের প্রথম মোঘল সম্রাট বাবর ১৫২৮ সালে অযোধ্যা শহরে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। কিন্তু উনিশ শতকের গোড়া থেকেই নেতৃস্থানীয় হিন্দুরা তদস্থলে রামমন্দির ছিল বলে প্রোপাগান্ডা চালাতে থাকে। অব্যাহত প্রচারণার বদৌলতে অবস্থা এমন হয়, ১৯৪০ সালের পর থেকে সাধারণ হিন্দুরা বাবরী মসজিদের জায়গায় আগে রামের জন্মস্থানের স্মৃতিবাহী রামমন্দির ছিল বলে মনে করতে থাকে।
বিভিন্ন সময়ে মৌলবাদী হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে চুরমার করতে উদ্যত হলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে কট্টর হিন্দুবাদী কংগ্রেস সরকারের মদদে উগ্র হিন্দুরা এলাহাবাদ হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই এই অমার্জনীয় অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়। সেদিন মুম্বাই, আহমেদাবাদ, বেনারস এবং জয়পুরসহ বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষয়ী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় দু'সহস্রাধিক মুসলমান শাহাদাত বরণ করেন। এ ঘটনায় সরকারকে বিবাদী করে মামলা পর্যন্ত হয়। ভারত সরকার মামলার রায় নিজেদের পক্ষে নিতে সর্বশক্তি প্রয়োগ ও সর্বকৌশল অবলম্বন করে।
প্রত্নবিশারদরা বাবরী মসজিদের স্থলে রামমন্দির থাকার দাবিকে বরাবরই ‘মনগড়া' ও ‘হাস্যকর' অভিহিত করে। ঐতিহাসিক সত্যকে ভারতের কট্টর হিন্দুবাদী সরকার কখনোই আমলে নেয়নি। বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার দশদিন পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও ঘটনা তদন্তে লিবারহান কমিশন গঠন করলেও তাকে প্রভাবিত করার ব্যর্থ চেষ্টা অব্যাহত ছিল।লিবারহান কমিশনের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার বিচারে পরিচালিত তদন্ত কার্যক্রমের রিপোর্ট গত বছরের ৩০ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে দাখিল করা হলেও সরকার তা প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকে। ঐ সময় লিবারহান কমিশনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ধ্বংসের সরকারি ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস করে দিলে সমগ্র ভারতে তুমুল হৈ চৈ পড়ে যায়।
সেই লিবারহান কমিশনের রিপোর্টকে পায়ে দলে ও মুসলমানদের আবেদন খারিজ করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক হতবুদ্ধিকর রায় দেয়। ঐ রায়ে বাবরী মসজিদের জমি রামজন্মভূমির দাবিদারদের দেয়া হয়েছে। উক্ত রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, মুসলমানরা বাবরী মসজিদ এলাকার এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করতে পারে। অন্যদিকে, মসজিদের জায়গায় ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) রাম মন্দির নির্মাণের ইঙ্গিত দিয়েছে। এতে হয়তো আবারো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উদ্ভব হতে পারে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×