খুব ছোট বেলায় আব্বার বদলীর দরুন লাকসাম থেকে আরামবাগে (মতিঝিল এর সন্নিকটে -প্রাক্তন মধুমিতা মিষ্টির দোকানের গলি) নতুন বাড়িতে উঠলাম।
নুতন পরিবেশে সব কেমন যেন অচেনা লাগতে শুরু করলো ।
বিশেষ করে লাকসামে থাকা কালীন পাড়ার বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলা, আড়ি আড়ি খেলা (তখন এই খেলা ছিল বাচ্ছাদের খুবই প্রিয় কিন্তু মান -অভিমানের খেলা), কানামাছি খেলা, স্কুল শেষে বন্ধুদের সাথে পরের গাছের আম -ডাব- বড়ই ইত্যাদি চুরি করে খাওয়া ছিল আমাদের নিত্য অভ্যাস।
যাই হোক ঢাকায় এলাম সম্পূর্ন নতুন পরিবেশে কিন্তু সবই যেন অচেনা, তার উপর বাবা আবার ভর্তি করে দিলেন শান্তিনগরের ইংলিস মিডিয়াম স্কুলে । একে অচেনা সব মানুষগুলো তার উপর আবার পড়াশুনার চাপ । মোটেই ভাল লাগছিল না । আবার পাড়ার ছেলেদের সাথে ও মানিয়ে চলা ছিল খুবই কষ্টকর তারপর্ও ধীরে ধীরে নতুনদেরসাথে মানিয়ে চলতে শুরু করলাম।
এরই মধ্যে টুকটাক খোজ নিতে প্রায় প্রতিদিনই বাসায় আসতো পাশের বাড়ির আন্টি ।
একদিন সেই আন্টি আমায় পাঠালো তেহারী আনতে ।
এখন তেহারী কি জিনিস তা আমি জানতাম না !!!!!!!!!!!
*****তাই প্রথমে গেলাম মুদি দোকানে, গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তেহারী আছে কিনা ,
লোকটা উত্তর দিলো না কিন্তু উপায় বাতলে দিলো না ।
এরপর গেলাম পাশের কনফেকশনারীর দোকানে সেখানে লোকটা না বললো না হা বললো কিছুই বোঝা গেল না ।
গেলাম ডিপার্টমন্টোল শপ রাস হেলথ কেয়ারে (ভাবলাম এটি বোধহয় আচার জাতীয় খাবার হবে তাই ঐজায়গায় গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই লোকটি উত্তর দিলো না, তবে জোকস করার সুরে বললেন যে, এখান থেকে ঠিক তিন দোকান পরে পাবে ঐ বস্তুটি)
অবশেষে সেই তিন দোকান পরে গিয়ে দেখি একটি রেষ্টুরেন্ট, (যেহেতু তিন দোকানে গিয়ে ধোকা খেলাম তাই ভয়ে ভয়ে)
সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, " ভাই তেহারী পাওয়া যাবে"
লোকটি সম্বস্বরে জবাব দিলো কয় প্যাকেট লাগবে ।
তখন সাথে সাথে স্বস্তির সাথে জবার দিলাম ৫ প্যাকেট ।
ঘটনাটি পরে যখন সবার সাথে শেয়ার করলাম , তখন বাড়িওয়ালী জানতে পেরে একদনি আমায় নিয়ে চললো ঘুরতে আর ঢাকার বাহারী জিনিসরে সগ্ঙে পরিচয় করিয়ে দিলো ।
এর পর ২০ বছর গড়িয়ে চললো এখন আর সেই মানুষ গুলো ও নেই কিন্তু রয়ে গেছে অতীতের সেই দিনগুলো ।
আজও সেদিনের সেই ঘটনা মনে পড়লে মনের অজান্তে একা একা হেসে ফেলি।
*********একদিন পর সামুর বন্ধুদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করলাম*******