somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা-৩

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাকাত না দেয়ার পরকালীন শাস্তি ঃ
যাকাত না দেয়ার পরকালীন শাস্তি যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে সে বিষয়ে কুরআনের একটি আয়াত এবং একটি হাদীস উল্লেখ করাই যথেষ্ট মনে করছি।
আলাহ তায়ালা বলেন ঃ "যারা সোনা-রুপা (অর্থ-সম্পদ) পুঞ্জিভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদের যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সু-সংবাদ দাও! এমন একদিন আসবে যেদিন সেসব সোনা রূপা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দিয়ে তাদের মুখ-মন্ডল, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে এবং বলা হবে, এই হলো তোমাদের সেসব অর্থ-সম্পদ যা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। অতএব এখন জমা করে রাখা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ করো।" সূরা তাওবা-৩৪-৩৫

হাদীসটি হলো-"হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহ যাকে অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন, সে যদি সেই অর্থ-সম্পদের যাকাত প্রদান না করে, তবে তা কিয়ামতের দিন একটি বিষধর অজগরের রূপ ধারণ করবে। যার দু'চোখের উপর দু'টি কালো চিহ্ন থাকবে। সে বলবে-আমিই তোমার অর্থ-সম্পদ, আমিই তোমার সঞ্চয়। এতটুকু বলার পর নবী করীম (সাঃ) নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করলেন-যারা আলাহর দেয়া অর্থ- সম্পদে কার্পন্য করে, তারা যেন মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল, বরং এটা তাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ। তারা যে অর্থ-সম্পদ নিয়ে কার্পন্য করছে তাই কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ি হবে, (সূরা-আল ইমরান-১৮০)।” বুখারী

যাকাত সম্পদ বৃদ্ধি করে ঃ
যাকাত দিলে মানুষের সম্পদ কমে না, বরং বাড়ে। যারা গভীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর নির্দেশ মতো তাঁর পথে ব্যয় করেন, পরম করুনাময় আল্লাহ এর বিনিময়ে কেবল পরকালে নয়, দুনিয়াতেও ব্যাপক বরকত, স্বচ্ছলতা ও উন্নতি দান করেন।
যেমন আলাহ বলেন-"আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তোমরা যে যাকাত দাও, মূলত যাকাত দানকারী সম্পদ বৃদ্ধি করে।” সূরা রুম-৩৯

অন্যত্র বলা হয়েছে-"যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের খরচের দৃষ্টান্ত হচ্ছে একটি শষ্য বীজের মতো, যে বীজ থেকে সাতটি শীষ বের হয় এবং প্রত্যেকটি শীষে হয় একশটি দানা। আলাহ যার আমলকে চান এভাবেই বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহতো সীমাহীন ব্যাপকতার অধিকারী, জ্ঞানী।" সূরা বাকারা-২৬১

এভাবে আল্লাহ যাকাত প্রদানকারীদেরকে অনেক অনেক শুভ সংবাদ দিয়েছেন।


যাকাত আদায় ইসলামী সরকারের দায়িত্ব ঃ
যাকাত আদায় করা ইসলামী রাষ্ট্রের সরকারের অপরিহার্য দায়িত্ব। এ সম্পর্কে আল্লাহ কুরআনে বলেন-"তারা হচ্ছে সেই সব লোক, যাদেরকে আমি রাষ্ট্র ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত ব্যাবস্থা চালু করবে, মানুষকে সৎকাজের আদেশ করবে এবং অন্যায়-অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।" সূরা হজ্জ-৪১

আলাহ আরও বলেন- "হে নবী, তাদের সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করে তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করো।" সূরা তাওবা-১০৩

এ আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূলে করীমকে (সাঃ) মুসলমানদেরকে স্বতন্ত্র ও ব্যক্তিগতভাবে যাকাত দান করতে বলা হয়নি।
এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় মুসলমানদের রাষ্ট্রপ্রধান বা ঈমাম সকলের নিকট থেকে যাকাত আদায় করবে এবং সমষ্টিগতভাবে তা খরচ করবে।
একটি হাদীসেও নবী করীম (সাঃ) একথাই বলেছেন।

তিনি বলেন-"তোমাদের বিত্তবানদের থেকে যাকাত আদায় করে তোমাদের দরিদ্রদের মধ্যে তা বন্টন করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি।"

হুজুর (সাঃ) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনদের আমলে ইসলামী সরকার কর্তৃক যাকাত আদায় করে তা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বন্টন করা হতো।
বর্তমানে যেহেতু ইসলামী রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠিত নেই এমতাবস্থায় আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যে সকল সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে সে সকল ইসলামী সংগঠন অথবা অন্তত ব্যক্তিগতভাবে যাকাত আদায় করে কুরআন নির্ধারিত খাতসমূহে তা বন্টনের ব্যবস্থা করাই যাকাত আদায়ের সর্ব্বোত্তম পন্থা হতে পারে।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীবাদ, ইসলাম এবং আইয়ামে জাহেলিয়া: ঐতিহাসিক ও আধুনিক প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪



আইয়ামে জাহিলিয়াত (আরবি: ‏جَاهِلِيَّة‎) একটি ইসলামিক ধারণা যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী আরবের যুগকে বোঝায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সময়কাল ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×