somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মগের মুল্লুকের বাজার!

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মগের মুল্লুকের বাজার!

বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কোনো কার্যকারণ ছাড়াই। এক লাফে লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। সয়াবিনের অযৌক্তিক দাম বাড়া নিয়ে একটি মানবাধিকার সংগঠনের রিট আবেদনের পরিপ্রেেিত হাইকোর্ট মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে এবং সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার বাণিজ্যমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক খান (অব.) মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের ডেকে বেশ কঠিনভাবে শাসিয়ে দেন। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দেশটা মগের মুল্লুক নয়, আপনারা ব্যবসা নয় মুনাফা করছেন’। বৈঠকে খুচরা সয়াবিনের মূল্য ৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯১ টাকা করা হয় এবং আগামী রোববার বোতলজাত ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। এসবের ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দেখার অপোয় আমরা।

শুধু ভোজ্যতেল নয়, প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়েই বাজারে চলছে নৈরাজ্য। চাল-চিনি সবকিছুরই দাম বিনা নোটিশে যখন তখন বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম গত সপ্তাহে অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, দেশের একেক জায়গায় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। এখন রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৬ থেকে ১০২ টাকা কেজি দরে। এক মাস আগেও এর দাম ছিল ৯০ থেকে ৯২ টাকা। ভোজ্যতেলের এরকম দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সবসময়ই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কথা বলে থাকেন। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় নাকি আমাদের বাজারে দাম কমই আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি দামে কেনা তেল নাকি আরো বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু আমদানিকারকদের এ তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

স¤প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক তাদের রিপোর্টে দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বাড়েনি বরং কমেছে। সে হিসেবে দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম কমার কথা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ ব্যবসায়ী কারসাজিতেই ইচ্ছেমাফিক দাম বাড়ানো হচ্ছে। বলাই বাহুল্য, আমাদের দেশে সয়াবিন তেলের চাহিদা ব্যাপক। অর্থাৎ এটা একটি প্রধান আমদানি পণ্য। ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটবাজি ও অসাধুতা কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ীর পকেট ভারী করলেও ক্রেতাসাধারণের ওপর ভয়াবহ বিরূপ প্রভাব ফেলছে। মহাজোটের সরকার মতা গ্রহণের পর থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটবাজি বন্ধ করা, টিসিবিকে সক্রিয় করাসহ নানা উদ্যোগের কথাই বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তার সামান্যই ফল দেখা গেছে। সর্বশেষ বাণিজ্যমন্ত্রী বাজার নৈরাজ্যের জন্য দায়ী করলেন ব্যবসায়ীদের দ্বারা ডিও (সরবরাহ আদেশ) পদ্ধতি সঠিকভাবে ব্যবহার না হওয়াকে। ডিও প্রথার পরিবর্তে ডিলার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হলেও এ সংক্রান্ত কোনো অগ্রগতি জানা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। স¤প্রতি তেল-চিনির বাজার দেখে এরকমই মনে হয়। কিন্তু এটা দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না। স¤প্রতি একটি রিট আবেদনের প্রেেিত হাইকোর্ট সরকারের কাছে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এতে করে মন্ত্রণালয়ের টনক যে নড়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সোমবারের তৎপরতাই তার প্রমাণ। জানা গেছে মন্ত্রীর ডাকে প্রতিষ্ঠিত আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা নিজেরা না গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছেন। এটা তাদের নেতিবাচক মনোভাবেরই প্রকাশ। তবে মন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে, এতে নিশ্চয়ই উভয়প একটা যৌক্তিক জায়গায় পৌঁছতে পেরেছেন।

বাজার-নৈরাজ্যের প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রীর কঠোর অবস্থান অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অতীতের আমাদের অভিজ্ঞতা হলো শুধু হুমকি-ধামকি তেমন কোনো ফল দেয় না। এর জন্য দরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে, সিন্ডিকেটবাজি রোধে উপযুক্ত কৌশল ও পদপে গ্রহণ এবং সার্বণিক বাজার মনিটরিং।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×