somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পতনের শুরুটা কি এ ভাবেই হয়?

২৭ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মাঝে মাঝে আমাদের তথাকথিত লেখকদের লেখা পড়ে হতাশ হতে হয়। তারা যা লেখেন, তার অনেকটাই মনে হয় তাদের নিজেদের কথা নয়। তারা যা লেখেন, তার অনেকটাই হয়ে থাকে তাদের নেত্রীদের মন জয় করার জন্য। আর কিছু পত্রিকা আছে, যারা দুই পক্ষকে সামাল দিতে যেয়ে তাদের নিজেদের পরিচ্য় ভুলে যেয়ে অন্য পরিচয়ে পরিচিত হয়েছে।

আমি খুব নির্দিষ্ট করে প্রথম আলো-র কথাই বলব। প্রথম আলোর সম্পাদক একজন পুরানো কমুনিষ্ট্। এই পরিচয়ের চেয়ে তার কাছে এখন ক্যাপিটালিস্ট পরিচিয়টাই অনেক বড় হয়ে দেখা দিয়েছে মনে হচ্ছে। কিন্তু তার পত্রিকায় যারা কাজ করে, তাদের বেশীর ভাগই পুরানো কমুনিস্ট। এখন হয় তো পালের বাতাস অন্য দিক থেকে এসে লাগাতে তাদের নৌকার পাল সেই দিকে সেট করা আছে। কিন্তু তারা বিপদের সময়ে তাদের সেই কমুনিস্ট রূপটা বের করতে কিন্তু ভোলেন না।

প্রথম আলো অনেক দিন ধরেই আমাদের মিশিয়া জগৎকে নাড়া দিয়ে আসছে। এটাই স্বাভাবিক। এককালে ইত্তেফাক যখন চালু পত্রিকা ছিল, সে সময়ে কেউ কি ভেবেছিল যে ইত্তেফাকের একটা করূণ পরিণতি হবে। সে দিক থেকে বিচার করলে পশ্চিমবাংলার আনন্দবাজার এখনও ভাল ভাবেই টিকে আছে। তাদের ব্যবসা অনেক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হয় তো প্রথম আলো, আনন্দবাজারের সেই গুণাগুণকে সামনে রেখেই চলতে চাচ্ছে।

কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকার মূল আদর্শ হচ্ছে কংগ্রেসের আদর্শ। তারা সেই আদর্শকে ধারন করে তাদের সম্পাদকীয় নীতি মেনে চলে। আমাদের প্রথম আলোর হয়ত দাপ্তরিক ভাবে কিছু কিছু নিয়ম কানুন আছে, কিন্তু মনে হয় না তাদের কোন আদর্শ আছে। তারা কখনও আওয়ামী লীগের জন্য কেঁদে কেটে অস্থির হয়, কখনও কখনও জাতীয়তাবাদী শক্তির নিমজ্জনে অশ্রু বিসর্জন দিয়ে থাকে।

এই যে দুই পক্ষকে সামাল দেয়ার চাল, এইটাকেই প্রথম আলোর কর্তাব্যক্তিরা তাদের নিরপেক্ষতা বলে চালিয়ে দিতে চায়। কিন্তু নিরপেক্ষতা কিন্তু দুই পক্ষকে সামাল দেবার কৌশলের ভেতরে নিহিত নয়। নিরপেক্ষতা হল কোন পক্ষে না যেয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করা। যেটা এক সময়ে যায়যায়দিন নামের একটা সাপ্তাহিক পত্রিকার কাছ থেকে বাংলাদেশ শিখেছে। কিন্তু এক পর্যায়ে দেশের সব কিছু দুই দলের ভেতরে ভাগ হয়ে যাওয়ায় যায়যায়দিন-ও শেষ পর্যন্ত একটি দলের পক্ষে চলে যায়। তখনও যায়যায়দিনের পাতায় বিরোধী পক্ষের খবর অন্তত প্রথম আলোর চেয়ে ভাল করেই উপস্থাপন করা হত।

প্রথম আলো সমন্ধে এই সব কথা লেখার কারন হল, প্রথম আলো গেল এক যুগ ধরে বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় পরিণত হয়েছে। ইত্তেফাকের পরে যে শূন্যস্থান ছিল তা তারা পূরণ করেছে। তাই তাদের কাছে ইত্তেফাকের সেই নিরপেক্ষতা আশা করা যায়। দুঃখের কথা হল, প্রথম আলো এমন কি ইত্তেফাকের মতও নিরপেক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।

মধ্যবিত্তের সামনে এখন প্রথম আলো ছাড়া আর কোন বিকল্প নাই। তারা গত এক যুগ ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে পরিমান অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে, সেই অনুপ্রবেশ ঘটাতে নতুন প্রকাশিত হওয়া সমকাল, যুগান্তর বা কালের কন্ঠ-কে অনেক দিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। প্রতিযোগীতার বাজারে মানুষ তাদের প্রয়োজনানুসারে দ্রব্য ক্রয় করে। তাই প্রথম আলো-ও তাদের গ্রহন যোগ্যতা বাড়াতে সচেষ্ট থাকবে, আর অন্যরাও তাদের যোগ্যতার পরিচয় তুলে ধরতে চাইবে।

কালের কন্ঠ পড়ে আরাম পাওয়া যায় না বলেই এখনও প্রচুর পাঠক প্রথম আলোতে আটকে আছেন। পাঠ যোগ্যতা পেলে একদিন প্রথম আলো থেকে পাঠকরা যে কালের কন্ঠে হিযরত করবেন না, তার কোন গ্যারান্টি আমি বা আপনি দিতে পারেন না। এখন প্রথম আলোর অনেক পাতায় এত বিজ্ঞাপন থাকে যে তা আমাদের অহর্নিশ ইত্তেফাকের কথা মনে করিয়ে দেয়। আর কালের কন্ঠের কাঁচা সম্পাদনার কাজ এগারো – বারো বছর আগেকার প্রথম আলোকেই মনে করিয়ে দেয়।

প্রথম আলোর সমালোচনা, দেশের কথা নিয়ে আলোচনা, কোন প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি প্রথম আলো প্রকাশ করে না, তার বড় সাক্ষী আমি। তারা চায় সেলিব্রেটিরাই খালি তাদের পেপারে লিখুক, অন্যদের জন্য সে দুয়ার তারা বন্ধ করে রেখেছে। বোধহয় হারিয়ে যাবার প্রথম লক্ষন এটাই। পতনের শুরুটা কি এ ভাবেই হয়?
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×