somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিঃশব্দ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জীবনে কেউ যে অনুকে ভালবাসার কথা বলেনি তা নয়।কিন্তু কেউ কখনও মন ছুয়ে যায়নি।যে মন ছুয়ে গেল,অনুর কেবলি মনে হয় সে বুঝি তার নয়।প্রথমদিকে শুধু massage দেওয়াই হত।বেশিরভাগই হত পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে।তার ভাললাগাগুলোর সাথে অনুর গুলো এমনভাবে মিলে যেত যে অনু তার প্রতি খুব দ্রুত weak হয়ে যেতে লাগলো।সেও বুঝতে পারত,একদিন জানালো তার একটা অতীত আছে।অনু তার কোনো অতীত নিয়ে মাথা ঘামালো না।তাকে সে ভয়াবহভাবে ভালবেসে ফেললো।তখন অনুর term-final চলছিল,অই সময়ে একদিন massage না দিলে তার মনে হত,কি যেন করা হয়নি।এভাবেই শুরু।সে অনুর department এই পড়তো।অনুর সাথে তার প্রথম ফোনে কথা হয় কোনো এক মাসের ২৯ তারিখে,অনু তখন ভীষণ lonely.যেই তার সাথে ভাল ভাবে কথা বলত অনু তাকেই আপন করে নিত।তাকে আপন করে নিতে অনুর তাই বেশি দেরি হল না,ভাবলো,উপরওয়ালা বুঝি তার স্বপ্নের রাজপুত্র কেই পাঠিয়েছেন,তার ক্লাস হত অনুর পাশের রুমে,তার ক্লাস শেষ হলে সে তার বন্ধুদের সাথে ক্লাস এর সামনে আড্ডা দিত।আর অনু স্যার কে না শুনে অপলক দরজার এতটুকু ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে থাকতো,কখন সে আসবে,তাকে দেখে তার নয়ন জুড়িয়ে যাবে,অনু তখন স্বপ্নে ভাসতো,গাছপালা ছাড়িয়ে,ক্লাস ছাড়িয়ে,এই শহর ছাড়িয়ে সে চলে যেত সাগরের পারে,সে স্বপ্ন দেখতো,সে এলোচূলে সাগরে আধো পা ডুবিয়ে,অধোমুখে বসে আসে,তখনি তার রাজপুত্র এসে পিছন থেকে তার চোখ দু হাত দিয়ে বন্ধ করে দিলো,আর কি এক দারুন সুখ অনুর শরীর ছুইয়ে যেতে লাগলো।
অনু তাকে আদর করে ডাকতো ‘ম্যাও’ বলে।তার সাথে সব কিছুই শেয়ার করত।অনু,তাকে অনেক বিশ্বাস করত,তার কাছে মনে হত,সেই মানুষটার সবটুকুই বুঝি তার।সে কখন বাধা দিত না,অনুর সপ্ন গুলো কে সে আরো উসকে দিত,অনু তখন আনন্দে নীল আকাশ ছুয়ে ফেলত,সপ্নে হারিয়ে যেত অনেকদূর,কোন এক নদীর ধারে,ভেজা ঘাসের উপর দুজনে মিলে ছুটাছুটি করতো।সে সপ্ন গুলো তাকে বলত,আর তার চোখে ভেসে উঠত,সে আর তার মানুষটি শহীদ মিনারে বসে গল্প করছে,ঝগড়া করছে,তাকে আদর করছে বা লাইব্রেরিতে বসে একসাথে দুজনে মিলে পড়ছে,তখন সে সপ্ন গুলো কে আরও বাড়িয়ে বলত,মনে করো কোন এক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট,candle light dinner,হাতে হাত দুজনার,চোখে চোখ অপলক।অনু তখন সেই সব স্বপ্নে ভেসে যেত ।পৃথিবীটা খুব সুখের মনে হত।মাঝে মাঝে তার যখন মন খারাপ হত সে তখন অনু কে কল করত,অনেক রাত্রে,তারপর কটা রাত অনুর নির্ঘুম কাটত,সারারাত মনে হত এই বুঝি সে কল করলো,কিন্তু সে আর করতো না,তারপর কোন একদিন অপেক্ষার প্রহরে সে জানিয়ে দিল সে কাউকে ৫ বছর ধরে ভালবাসে,তার কাছে তার ভালবাসাটাই ইউনিক,অনুর সেই সময় মনে হচ্ছিল তার সব কিছু বুঝি উলটপালট হয়ে যাচছে,তার পর মনে হল,না,আমিতো তার অতীত আছে জেনেও তাকে ভালবেসেছি,এতদিন অতীতটা জানতাম না,এখন জানলাম এই যা।অনু তাকে সবকিছু শুন্য থেকে শুরু করার কথা বললো,আশায় আবার বুক বাধল,ম্যাওকে আরও গভীর ভাবে ভালবাসতে শুরু করল,facebook এর status গুলো হয়ে গেল আরও সে নির্ভর।তার নাম কোথাও দেখলেই এক অন্য রকম অনুভূতি হত ।সেই অজানা অচেনা অনুভূতির মাঝে সে খুজতো তার ম্যাও কে।
সে বুঝত,কিছু বলতনা,মাঝে মাঝে অকারণে অনুকে ঝাড়ি মারত,অনু তখন খুব কষ্ট পেত,কিছুদিন হয়ত contact রাখত না,তারপর আবার কথা বলত।কথা হত শুধু week-end গুলোতে,অনু সব সময় তাদের দুজনার পড়াশুনার ব্যাপারে সিরিয়াস ছিল।এভাবেই চলছিল,একদিন বুঝিবা ঝড় এল,ফ্রেন্ডদের মাঝে ঝামেলা হল,কিছুটা তাকে জড়িয়েই,অনুর তখন শুধু মনে হতে লাগল,আমি কাকে বিশ্বাস করেছি,সেতো আমার সবকিছুই জানতো,আমি তো আমার সব টুকু দিয়েই তাকে ভালবেসেছিলাম,অনুর স্বপ্ন গুলো চুরমার হয়ে যেতে লাগল,তাকে অবিশ্বাস করতে পারছে না,আবার ফ্রেন্ড যা বলছে তাও সত্য।ক্লাস শেষে তাকে কল করল,সে কিছুতেই স্বীকার করল না,সে আরও বলল কতিপয় নারীর জন্য পুরো নারীরাই নাকি nasty হয়ে গেছে,সে খুবই ভুল করেছে যে সে তার সাথে contact রেখেছে,পরে তাকে sms dilo,in last few months relation all but sudden I have learnt that u can disbelieved ur belovedone,I never disbelieve any person,so I believe u,although my hearts not belong to u.অনুর মনে হতে লাগ্ল সেত আমার পুর কথাটা শুনতে পারতো,বুঝার চেষ্টা ত করতে পারত অই সময় আমার কেমন লেগেছে,সারারাত তার কানের কাছে বাজতে লাগলো,’although my hearts not belong to u,সে অনুর দুঃসময়ে এসে পাশে দাঁড়ালো না,অনুর কষটের কথা শুনে বললো,তোমার মন খারাপ হতেই পারে,sms এর কথা বলতেই সে বলল এই কথা একজন ছাড়া আর সবার ক্ষেত্রেই সত্য,অনুর মনে হতে লাগল এতদিনের স্বপ্ন দেখানো সব
কিছহু কি তবে সাজানো ছিল?তার স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে যেতে লাগলো,স্বপ্নের বৃষ্টি শুকিয়ে আসতে লাগলো,তার চারপাশ ক্রমশঃ যন্ত্রনাময় হয়ে গেল ,এলোচূলে আল-আধারিতে সেই মেয়েটি একা সাগরের পাড়ে দাড়িয়ে রইল।তার স্বপ্নের সংসারের বাবুরা বাবা ছাড়া হয়ে গেল,রাতের পর রাত ঠান্ডায় শীতের মধ্যে মশার কামড়ে দাড়িয়ে থাকা রাত গুলো,ভয়াবহ কন্টকময় হইয়ে ফিরে আসতে লাগলো,অনু অসুস্থ হয়ে গেল ।ভালবাসা তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খেতে লাগলো,কাউকে ওর সাথে কথা বলতে দেখলেই খুব কষ্ট হয়,খুব কান্না পায়, কষ্টগুলো গলার কাছে আটকে থাকে,অনু পড়াশুনা ছেড়ে দেয়,যে কখন ক্লাস মিস দিত না ,সেই মেয়ে,তার ক্লাস করতে একদম ভাল লাগে না,পরীক্ষা দেয় না,সে বুঝতে পারে সে পিছিয়ে যাচ্ছে,তারপরেও জীবনটা তার কাছে অর্থহীন লাগে।কিচছু ভাল লাগে না,মাঝে মাঝে suicide করার কথাও ভাবে,রুমমেটরা বুঝতে পারে,কিন্তু তার যে কিচ্ছু করার নেই,সে জানে সে কিচ্ছু করতে পারবে না,তার স্বপ্ন গুলো,সুখস্মৃতি গুলো দূঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে,যন্ত্রণা গুলো বেড়ে যায়,নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করে,কিন্তু সে বুঝতে পারে না,সে আসলে কি চাচ্ছে,তাকে ভুলতে?নাকি তার স্বপ্ন গুলো জড়িয়ে ধরে বাঁচতে,এই আশায় যে একদিন সে ফিরে আসবে,ভালবাসবে!।নাহ,সে কিচ্ছু জানেনা,শুধু একটি জিনিসই জানে,ম্যাও কে সে অনেক ভালবাসে,অনেক,সে ভালবাসা শুধুই নিঃশব্দ ভালবাসা।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×