গতকাল রাতে দেয়া একটি রিয়েল লাইফ জোক এর অভূতপূর্ব পাঠক সাড়া পেয়ে আজ আরেকটি রিয়েল লাইফ জোক দিচ্ছি। তবে এটা আসলে জোক নয়। একটা ঘটনা। যেমন হাস্যোদ্দীপক তেমনি কিঞ্চিত মর্মান্তিকও।
ঘটনার স্থানঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল। সময়ঃ গভীর রাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় অনেক রুমেই ছাত্ররা রান্না করে থাকে। সে রাতেও ঐ রুমে রান্না-বান্না শেষে খাওয়া-দাওয়া সেরে ছাত্ররা সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছে। একজন বাইরের অতিথিও ছিল, যে কখনো ঢাবির হলের খাটগুলোয় বোধ হয় ঘুমায়নি। প্রতিটা খাটেই ডাবলিং করে শোয়া হয়েছে। রাতে ঘুমাবার আগে সব থালা-বাসন-হাড়ি-পাতিলগুলো একত্র করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো রাখা হয়েছিল খাটের পাশেই, খাটের নিচে রাখা হয়নি। তাও আবার সেই অতিথি খাটের যে পাশে ঘুমিয়েছে সেই পাশেই। গভীর রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে তখন অতিথি ব্যাটা খাট থেকে সোজা পতিত হল থালা-বাসনগুলোর মাঝখানে। পড়ার সাথে সাথে একদিকে যেমন বিকট শব্দ হল, তেমনি ঐ ব্যাটাও দিল বিকট চিৎকার।
সবাই-ই কেবল ঘুম পড়েছে এই অবস্থা। সুতরাং এই বিকট শব্দে তাদের সবার ঘুম ভেঙে গেল। সব বাতি নিভানো। তাই তারা বুঝতে পারল না যে আসলে কী হয়েছে। কিন্তু খুব দুর্যোগময় কিছু হয়েছে এরকম আচ করে তারাও সবাই বিকট শব্দে চীৎকার শুরু করল। ভেবে দেখুন- একটা অন্ধকার রুমে ৭-৮ জন ছেলে বিকট শব্দে চীৎকার করছে তো করছেই। কোন থামাথামির লক্ষণ নেই। কী পরিস্থিতি!
এরই মাঝে এক ছেলে করেছে মর্মান্তিক কাণ্ড। সে ঘুম থেকে জেগেই কোন কিছু বুঝতে না পেরে দিয়েছে দৌঁড়। গন্তব্য অজানা। দৌঁড় দিয়ে ওয়াল পর্যন্ত পৌঁছেই সে নিউটনের তৃতীয় সূত্রের বাস্তব প্রয়োগে পিছনে ফিরে আসল। এবং জ্ঞান হারাল। কিন্তু তার অন্যান্য রুমমেটটের মধ্যে এমন কোন হুশ ছিল না যে তাদেরই এক বন্ধু চিৎপটাং হয়ে শুয়ে আছে।
সারা হল জুড়ে হুলস্থুল পড়ে গেল। অন্যান্য রুমের ছেলেরা এসে দরজা ধাক্কিয়ে তাদের হুশ ফিরাল। হুশ ফিরাল সেই ছাত্রটিরও।
জানিনা আপনারা মজা পেলেন কীনা। আমি ঘটনার সাক্ষী ছিলাম না। ছিল আমার চাকুরী জীবনের এক রুমমেট। তবে আমি যখনই তাদের এই দৃশ্যের কথা মনে করি আমার বেদম হাসি পায়। :>
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪১