somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তগদ্যঃ অনাগত বৃষ্টি ও আলস্যের চিঠি

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. তুমি পারবে না রঙ্গনা?
তুমি যাবে রঙ্গনা আমাদের বাড়ি? স্নেহময়ী রূপ নিয়ে ফুটে রইবে তুমি। তোমাকে কখনো ছিঁড়বো না। ব্যথা দেবো না। খরা থেকে বাঁচাবো, আলো দেবো, খেতে দেব জল। শুধু বিকেলের আলোয় যখন আমাদের বাড়িতে বিষন্ন একটা সুর বয়ে যয় গ্রামোফোনে, আল্লারাখার তবলা আশাহত মানুষগুলোর পিঠ চাপড়ে দেয়, তখন সময় পেলে পুষ্প ফুটিয়ে দিও আগত চড়ুইগুলো যেন হেসে ওঠে কিচ কিচ করে। পারবে না রঙ্গনা? পারবে না?

রিমঝিম ক্যাফে
হিমেলদের সঙ্গে রিমঝিম ক্যাফেতে বসে গল্প করতাম। ক্যাফের নামটা শুনলেই বৃষ্টি মনে হয়। ছাতা মাথায় কিশোর হয়ে যেমন বৃষ্টি দেখেছি। হিমেল বলতো বৃষ্টি হলো দেবীর চোখের জল। দেবীরা কি তাহলে কাঁদে? দেবীর কি মন খারাপ হয়? অনেক দিন হলো আড্ডাটা ভেঙে গেছে। পথ ভুলে বরফভিলায় যেতে একটা একটা কানা গলি দিয়ে পথ থেমে গেছে নোনা ধরা দালানে, কতগুলো অপরিচিত লোক স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে থাকে, রং ওঠা সাইনবোর্ডে ছেঁড়া ডাকটিকেটের মত লেখা রিমঝিম ক্যাফে।

ছুটি
তরতাজা ঘণ্টাগুলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে কর্মজীবি মানুষের। দ্বিপ্রহরে রোদের কোণ বদলে যায়। প্রতিবেশী জলপাই রোদে শুকোতে দিতে এলে জিভে জল আসতো এমন রোদে । কড়া নজরে থাকায় যেমন রসনা নিবৃত হতো না। আজকে কর্মজীবি রোদ ঘণ্টা মেপে খেতে দেয়। দুপুরের ভর্তা ভাজি সেরে, পিঞ্জিরায় ঢুকে যেতে কারো কি ভাল লাগে? ঘণ্টা বাজে, কিন্তু তখনও বাড়তি কাজের অনুনয়। সন্ধ্যা হারিয়ে বিষণ্ণ রাত্রিতে বাড়ি উড়ে আসতে মন চায় তাদের। ওরা নেমে আসে পথে; ছুটতে ছুটতে স্থলচারী বাসের উঠে পড়ে আর তখনই বাড়ি ফেরা স্বপ্নটা প্রকট হয়। বছরে দু তিনটা উৎসবে লুডোর দান উল্টে যাবে। বাড়ি ফিরে যাবার সময় ঘাসের উপর ছুটে উঠোনে এসে দেখবে বাঁশঝাড় নেচে উঠছে। কালো গাভী খড়ের পুঞ্জি থেকে মাতৃস্তনের মত খড় টেনে নিলে পুকুরের দিকে স্যাণ্ডেল পা বাড়াবে। ইটের ঢেলায় জুতো ডুবিয়ে পরিত্রান চেয়ে যায় বোতামের মানুষ, হঠাৎ বায়োস্কোপের মত অন্য রাজ্যে আসতেই উঠোন ডাকে তাকে। কালো বউ উৎসবের মত চাল কোটে, ন্যাংটো বাচ্চা মাটি কাদা করে। যদিও সেই বিলাসী রাখাল নেই তবু কচি কলাপাতায় ডালে মেঘের ফোঁটার মত গ্রামত্যাগী মানুষ সারা বছরের অপেক্ষা সঞ্চয় করে রাখে । এখনো কিছু নিজের থাকে বলে মেঘগুলো ফিরে আসে নীল উঠোনে, ঘুড়ি উড়তে উড়তে সন্ধ্যায় নেমে আসে। ঘণ্টা বাজতেই ছুটি শেষে পরিচয়পত্রের ঠিকানায় ঢুকে পড়ে মানুষ। তারপর কলম পিষতে পিষতে ঘাম ঝরায়।

মায়া
মায়া এত তোর জন্য, এই রেশমী চুড়ি, এই কপালের টিপ, আকাশের সব টুকু বৃষ্টি এক সাথে যেন চোখে এসে পড়ে। মায়া এত তোর জন্য শর্ষের ক্ষেত, দিকে দিকে হলুদ রঙ ছড়িয়েছে, বসন্তের এত রঙ নেই, বৈশাখের এত ঝড় নেই, নদীগুলো সব এক হয়ে বয়ে যায় তোর দিকে,
মায়া, আমার দুষ্টু মেঘের ছায়া মনের জমিতে।

সে যে বসে আছে একা একা
ছবির মত সে। চুলগুলো গড়িয়ে পড়ছে ডান থেকে বামে। ইচ্ছে হবে সরিয়ে দিয়ে সিঁথির চুল এক গোছা, গড়িয়ে পড়ুক কপালে। দুটো কান ভরে আছে তারায়। মেয়েটির গয়না নেই। কানে অধুনা গয়নার মত বড় রিং নেই। গাঢ় অন্ধকার তার চোখে। বাঁকা চোখে ভাসিয়ে দিতে কেউ কি তাকে পরিয়ে দেবে গাঢ় কাল পেন্সিল? উপত্যকার মত উঠে গেছে তার সূচারু নাক। দু পাশে পর্বতের ভাঁজ। ধনুকের মত উপরের ঠোঁট একটু বেঁকে আছে হৃদপিন্ডের মতো, এক্ষুনি সে হেসে দেবে। হাসতেই নিচের পুরুষ্ঠু কাল ঠোঁট ভারসহ নেমে আসবে গভীরে । মেয়েটির আঙুলগুলো বড়, স্পষ্ট পাখির ডানার মত চোখে চেয়ে থাকে। হাত এগিয়ে দিলে এক হাতের নখে রঙ, অন্য হাত খালি। ধরে আছে নিজের চিবুক। আর কি যেন চেয়ে দেখছে আনমনা। উদাসিনী এক যতদূর চোখ যায় শুধুই চেয়ে থাকে।


--
ড্রাফট ১.৫
লেখালেখিটা আনন্দের জন্য, এসব খসড়া কাগজের অনুশীলন।
আপডেট: সবগুলো প্যারা আলাদা, এ জন্য আলাদা শিরোনাম যোগ করে দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×