somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চামড়ার বাজারে অচলাবস্থা

২২ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চামড়ার বাজারে অচলাবস্থা

কুরবানির পশুর চামড়ার বাজারে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন এক শ্রেণীর কাঁচা চামড়া সংগ্রাহক। বেশি দামে কেনা এসব চামড়া ট্যানারি মালিকরা কিনতে রাজি না হওয়ায় গুদামে পড়ে আছে লাখ লাখ পিস চামড়া। অভিযোগ উঠেছে, বাস্তবতার সঙ্গে মিল না রেখে দাম নির্ধারণ করায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কর্তৃপ বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পরস্পরকে দোষরোপ করছেন। যে বা যাদের কারণেই হোক, বাস্তবতা হলো চামড়ার বাজারে এক অনাকাক্সিত টানাপড়েন চলছে। যদি শিগগিরই তা নিরসন করা না হয় তাহলে শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যবসায়ীরাই তিগ্রস্ত হবেন না, দেশের অন্যতম রপ্তানি খাতটিও একটি সংকটের মুখে পড়বে। কোনো কোনো সুযোগসন্ধানী অসাধু চক্র হয়তো এতে লাভবান হবে।

এ দেশে ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদে বছরের প্রায় ৪০ শতাংশ চামড়া সংগৃহীত হয়। এবার ঈদুল আজহায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার কাঁচা চামড়া কেনাবেচা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাজারে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় সে জন্য সরকার কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। গরুর চামড়ার দাম রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৪৫-৫০ টাকা। খাসির চামড়ার ক্রয়মূল্য প্রতি বর্গফুট ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তবে বেশিরভাগ ফড়িয়া ও মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী বেশি দামে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা যে দাম দিতে চান সে দামে তারা বিক্রি করতে পারছেন না। তারা বলছেন বাস্তবতা বর্জিতভাবে কম দাম নির্ধারণের ফলেই তাদের এ বিপাকে পড়তে হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এ অচলাবস্থার সৃষ্টি মৌসুমি ব্যবসায়ী ও একশ্রেণীর ট্যানারি মালিকের কারণে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কুরবানিদাতাদের কাছ থেকে কম মূল্যে চামড়া কিনেছেন। এতে কুরবানিদাতারা চামড়ার মূল্য পেয়েছেন কম। আবার এরা অনেকে চামড়া স্টক করে তা ছেড়ে না দেয়ায় ব্যবসায়ীরা যতো চামড়া পেয়েছেন তা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে কিনতে বাধ্য হয়েছেন।

অর্থাৎ এখানেও সিন্ডিকেটবাজির অভিযোগ। চামড়া ব্যবসায়ে অচলাবস্থা নিয়ে এ যাবৎ যেসব অভিযোগ এসেছে এর কোনোটাই একেবারে ভিত্তিহীন বলা যাবে না। একশ্রেণীর মৌসুমি ব্যবসায়ী ধারণার ঘাটতির কারণে বা অতিলোভে বেশি দামে চামড়া কেনেন এবং প্রতি বছরই এদের একটা অংশ বিপাকে পড়েন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাদের নিজেদের যেমন সতর্ক হওয়া প্রয়োজন, তেমনি সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে অন্যদেরও সতর্ক হওয়া উচিত। চামড়ার বাজারে অস্থিতিশীলতা রোধই কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করার উদ্দেশ্য। এটা সংশ্লিষ্ট সকল পরে সমঝোতায় করা হলে এ নিয়ে কারো অভিযোগ থাকার সুযোগ থাকে না। যে পরিস্থিতির কারণেই হোক, কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ এবার বেশি দামে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন। তারা যাতে তির শিকার না হন সেদিকটাও দেখতে হবে।

এবার কাঁচা চামড়া কেনার জন্য ট্যানারি মালিকদের অর্থাভাব নেই। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক চামড়া কেনার জন্য পর্যাপ্ত ঋণ দিয়েছে। এবার বিশ্ববাজারে চামড়ার দামও গত বছর থেকে বেশি। কাজেই সদিচ্ছা থাকলে ট্যানারি মালিকরা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পরে কাছে সহনীয় যৌক্তিক একটা দামে চামড়া কিনতে পারেন এবং এ সমঝোতা শিগরিই হওয়া উচিত।

গত অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানি করে ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। এবার আমাদের টার্গেট নিশ্চয় গত বছরের অর্জনকে ছাড়িয়ে যাওয়া। কোনো অনাকাক্সিত জটিলতা যেন একে বাধাগ্রস্ত না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে সরকার ও এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। এ জন্য জরুরি হলো চামড়া বাজারে উদ্ভূত অচলাবস্থা নিরসন এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের টানাপড়েন তৈরি না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×