ব্যবসা, চাকরি আর ভোগান্তির আশঙ্কায় ঈদের আগে বাড়ি যেতে না পারলেও ঈদের পরদিন অনেকেই রাজধানী ছাড়ছেন নাড়ির টানে, বাড়ির দিকে।
Published : 10 Aug 2013, 02:29 PM
শনিবার সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অনেকে পরিবারের সঙ্গে বন্ধু-বান্ধবদেরও সঙ্গে নিয়েছেন ঈদ আনন্দকে পূর্ণতা দিতে।
সকাল সাড়ে ১১টা পযর্ন্ত ১৫টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে চাঁদপুর ও বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আর একই সময়ে সদরঘাটে আসেছে ৪২টি লঞ্চ। ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতে বেশ ভিড় থাকলে, ফিরিতি লঞ্চে যাত্রী ছিল একেবারেই হাতেগোনা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) এর পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) মাহমুদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের দিনের তুলনায় শনিবার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার যাত্রীর চাপ বেশি।”
বোগদাদিয়া-৫ লঞ্চের যাত্রী মাহমুদুর হাসান যাবেন চাঁদপুরের মোমেনপুরে। বাসায় মা-বাবা ছাড়াও রয়েছে ভাই-ভাবী।
ঈদের পর কেন রওয়ানা দিলেন জানতে চাইলে মাহমুদুর জানান, তিনি একটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক। ঈদের দিন রোগীর চাপ থাকে। তাই কর্তৃপক্ষ ঈদের দিন ক্লিনিক খোলা ও সেবার মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। এসব কারণেই ঈদের আগে আর বাড়ি যেতে পারেননি।
“ঈদের পরদিন সবাইকে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে সবাই অপেক্ষা করে আছে।”
তবে মিতালী-২ লঞ্চের যাত্রী নাহিদ যাচ্ছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বন্ধু শফিকের বাড়ি বেড়াতে। বন্ধু শফিক পুরান ঢাকায় নাহিদের মহল্লায় ব্যবসা করেন। সে সুবাদেই পরিচয় ও বন্ধুত্ব। শফিক অনেকবার তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে যাওয়ার জন্য বললেও কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
“এবার তাই সুযোগ করে স্ত্রী ও দুই বাচ্চা নিয়ে সেখানে বেড়াতে যাচ্ছি।” পরিবারকে পাশে রেখে হাসতে হাসতে বলেন নাহিদ।
এছাড়াও ইমাম-হাসান, সোনারতরী, লামিয়া ও কলি লঞ্চের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা কেউ গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন, আবার কেউ বন্ধুদের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন।
ঈদের পরে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালের কারণে ফিরতে অসুবিধা হবে কীনা জানতে চাইলে প্রায় সকলেই জানান, হরতালের পরেই ফিরবেন তারা। ফলে হরতাল নিয়ে তেমন একটা ভাবছেন না।
“তবে হরতালডা আর না বাড়াইলেই হইল”, বরিশালের মুলাদীর লঞ্চে উঠতে উঠতে বলেন উত্তরার পোশাক ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন।
তিনি বলেন, চাঁন রাতে বেচা-কেনার করার পর যানজটের কথা ভেবে উত্তরা থেকে আর পরিবার নিয়ে সদরঘাটে আসার চিন্তা করেননি। তাছাড়াও ঈদের দিনেও রাজধানীতে যানজট দেখা যায়। তাই ঈদের পর দিন বাড়ি যাচ্ছেন।
বিআইডাব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) মো. সোলায়মান বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪৪টি নৌপথে প্রায় দেড়শ লঞ্চ চলাচল করে। তবে ঈদে লঞ্চ চলছে ৩৯টি নৌপথে।