টেলিফিল্ম : রঙ্গিন স্বপ্নের মৃত্যু-৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
টেলিফিল্ম : রঙ্গীন স্বপ্নের মৃত্যু : চরিত্র বিন্যাস
টেলিফিল্ম : রঙ্গিন স্বপ্নের মৃত্যু-১
টেলিফিল্ম : রঙ্গিন স্বপ্নের মৃত্যু-২
টেলিফিল্ম : রঙ্গিন স্বপ্নের মৃত্যু-৩
টেলিফিল্ম : রঙ্গিন স্বপ্নের মৃত্যু-৪
দৃশ্য-৫
বাড়ির নিচ তলায় আমেনা অন্য দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।সুমা তার অশ্রুসিক্ত চোখ দুটো মুছে নিজেকে সামলে নিয়ে--
সুমা ঃ (হাসিমুখে) আসসালামু আলাইকুম, আন্টি ?
আমেনা ঃ অলাইকুম আসসালাম। আরে সুমা যে!
সুমা ঃ কেমন আছেন আন্টি?
আমেনা ঃ ভাল আছি। তুমি কেমন আছ?
সুমা ঃ (গম্ভীর গলায়) জ্বি, ভাল আছি।
আমেনা ঃ কখন এলে ?
সুমা ঃ এই তো কিছুক্ষণ আগে। আপনি তখন নামাজ পড়ছিলেন।
আমেনা ঃ অ আচ্ছা। তা এতদিন পর বুঝি আমাদের কথা মনে পড়েছে তোমার?
সুমা ঃ আসলে আন্টি আপনাদের কথা প্রতিনিয়ত আমার মনে পড়ে কিন্তু লেখা-পড়া, ঘরের কাজ-কর্ম আর বাবার দেখা-শুনা করে আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়ে উঠে না।
আমেনা ঃ অভির সাথে দেখা হয়েছে?
সুমা ঃ জি¦ দেখা হয়েছে, কথাও হয়েছে। আন্টি তাহলে এখন আসি।
আমেনা ঃ (সুমার হাতের কব্জি চেপে ধরে) আরে না কিছুতেই তুমি এখন যেতে পারবে না। রাতের খাবার খেয়ে তারপর বেরোবে।
সুমা ঃ আজ নয় আন্টি, অন্য একদিন এসে খেয়ে যাবো।
আমেনা ঃ আহা মা, রাতের খাবার খেয়েই যেও।
সুমা ঃ অনেক রাত হয়ে যাবে। বাসায় ফিরতে সমস্যা হবে।
আমেনা ঃ কোন সমস্যা নেই। অভি আর কণিকা তোমাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসবে।
সুমা ঃ আন্টি আমার মা বেঁচে নেই কিন্তু আপনার স্নেহ, ভালবাসা আমার হারানো মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। তখন বুক চেপে
ভীষণ কষ্ট হয়। ভীষণ কষ্ট। (নীরবে কাঁদল সুমা)।
আমেনা ঃ (সুমার মাথায় হাত বুলিয়ে) মা, আমিতো তোমাকে আমার মেয়ের মতই জানি। সেজন্য ভাবছি আমার একমাত্র ছেলে অভির বউ করে তোমাকে ঘরে তুলব।
সুমা ঃ আন্টি, আপনার সে স্বপ্নটা বোধহয় আর পূরণ হবে না।
আমেনা ঃ কেন একথা বলছ মা ? সুমা একটু থেমে বলবে,
সুমা ঃ আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। হয়ত কিছুদিনের মধ্যে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়ে যাবে। আমেনা বিস্মিত হলো।
আমেনা ঃ (বিস্মিত গলায়) অভিকে ব্যাপারটা জানিয়েছো?
সুমা ঃ (মাথা নিচু করে) জি¦, আন্টি জানিয়েছি।
আমেনা ঃ কি বলেছে সে?
সুমা ঃ (কাঁদো কাঁদো গলায়) অভি আমাকে পছন্দ করে না। সে পছন্দ করে তার সে-ই ছোটবেলার বান্ধবী রুপাকে। বলেই সুমা চোখ মুছতে মুছতে অভিদের ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য উদ্যত হতেই পেছন থেকে আমেনা-
আমেনা ঃ (স্নেহ জড়িত গলায়) সুমা দাঁড়াও। সুমা মা, আমার কথা শোন। কিন্তু সুমা আমেনার কথা ভ্রুক্ষেপ না করে দ্রুত অভিদের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
দৃশ্য-৬
আমেনা অভির রুমে প্রবেশ করে
আমেনা ঃ (রাগতস্বরে) অভি। অভি পড়ার টেবিল থেকে পাশ ফিরে
অভি ঃ জ্বি মা।
আমেনা ঃ সুমার বিয়ের কথাবার্তা চলছে তা তুমি নিশ্চয় জেনেছো ?
অভি ঃ জ্বি, আজই ব্যাপারটি জেনেছি।
আমেনা ঃ সুমা আমার পছন্দের মেয়ে। সুমার বিয়ে অন্য কোথাও হবে না। সুমাকে তুমি বিয়ে করবে।
অভি ঃ এসব তুমি কি বলছ মা? না মা অসম্ভব আমি সুমাকে বিয়ে করতে পারবো না।
আমেনা ঃ সুমাকে বিয়ে করতে তোমার সমস্যাটা কোথায়? সে দেখতে অসুন্দর না তার ফ্যামিলি স্ট্যাটাস খারাপ?
অভি ঃ না মা সুমা অসুন্দরও না, তার ফ্যামিলি স্ট্যাটাসও মন্দ নয়।
আমেনা ঃ তাহলে তাকে বিয়ে করতে তোমার সমস্যা কি?
অভি ঃ মা আমি রুপাকে ভালবাসি।
আমেনা ঃ রুপাকে তুমি ভুলো যাও অভি। সুমার সাথেই তোমার বিয়ে হবে।
অভি ঃ মা আমি সুমাকে কিছুতেই বিয়ে করতে পারব না। কিছুতেই না। তুমি আমাকে সুমাকে বিয়ে করতে না বলে আমাকে বিষ খাইয়ে মারো।
আমেনা ঃ (আমেনা দৌড়ে এসে অভির মুখে হাত চাপা দিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায়) ছি বাবা এসব কুলক্ষণে কথা বলতে নেই।
অভি ঃ (কাঁদো কাঁদো গলায়) মা, ছোটবেলায় আমার আর রুপার প্রেম-ভালবাসার ব্যাপারটি অন্তত আর কেউ না হোক তুমিতো জান। রুপাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশী ভালবাসি, মা। রুপাকে ছাড়া আমি বাঁচব না, মা। অভি নীরবে কাঁদল। -
আমেনা ঃ (শাড়ীর আঁচল দিয়ে অভির অশ্রুসিক্ত চোখ দুটো মুছে দিয়ে) সুমাকে বিয়ে করতে আমি তোকে জোর করতাম না। রুপা ঢাকা গেছে ভাল কথা, কিন্তু তোর সাথে যোগাযোগ তো রাখতে পারত, নাকি? যদি তোকে সে ভুলে বসে থাকে তখন তোর অবস্থাটা কি হবে, সে কথাটাই আমি ভাবছি। আমি দোয়া করি রুপা আর তোর মাঝের ভালবাসাটা আরও দৃঢ় হোক, শক্তিশালী হোক।
বলেই আমেনা অভির রুম ছেড়ে চলে গেছে ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!
রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।
আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!
এই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন