রবীন্দ্রনাথের কোন বিকল্প নাই -৪
ব্রিটিশদের কেউ কেউ রবীন্দ্রনাথের প্রতি ঈর্ষাকাতর ছিল।১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথের প্রতি অনেকেরই প্রসন্ন দৃষ্টি ফিরে এসেছিল।এর আগে সে দৃষ্টি চাপা পড়েছিল।
জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে প্রথম বিলিতি আদব-কায়দা আমদানি করেছেন জ্ঞানদানন্দিনী।ঠাকুর পরিবার ও অনন্যা অনেক অভিজাত পরিবারের নারীরা জ্ঞানদানন্দিনীকে অনুসরন করতেন।
যারা প্রথম কোনও সংস্কার ভাঙে,তাদের অনেক নিন্দাও সহ্য করতে হয়।যারা নতুন কোনও পথ দেখায়,তাদের সবসময় তৈরী থাকতে হয় পথের অনেক বাঁধার জন্য।যারা মুক্তি অভিলাষী,তাদের খুলতে হয় অনেক বন্ধ দরজা।কিন্তু মেয়েরা এগিয়ে যেতে চাইলে তাকে পেছন দিক থেকে টেনে ধরে মেয়েরাই।
ব্রাইটনে থাকবার সময় রবীন্দ্রনাথ এই গানটি রবীন্দ্রনাথ খুব গাইতেন- "Won't you tell me,Molly darling/Darling you are groeing old/Good-bye sweetheart good-bye..."
গতকাল গভীর রাতে হিমি আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো,রবীন্দ্রনাথের কোন উপন্যাসটি প্রথম পড়লে তার ভালো লাগবে?আমি বললাম-আমি কিছুতেই তা বলতে পারব না।তবে উপন্যাস সমগ্র কিনে পড়া শুরু করতে পারো,তখন আপনা থেকে এটি ভালো লাগবে।এরপর এক সপ্তাহ হিমির কোনও খবর নেই।পরে যখন দেখা হলো সে বললো,সব গুলো উপন্যাস তার পড়া শেষ হয়ে গেছে।প্রত্যেকটি নাকি তার কাছে ভালো লেগেছে।আমি জিজ্ঞেসও করি নি কী জন্য ভালো লেগেছে।কারণ ওই ব্যাখ্যায় গেলে সে বিপদে পড়ে যাবে।
একেকজন একেকভাবে রবীন্দ্রনাথকে পাঠ করেন।কারও কাছে 'শেষের কবিতা' ভালো মনে হবে,কারও কাছে 'চতুরঙ্গ'।'শেষের কবিতা' পাঠে যিনি বিমগ্ন বিমুগ্ধ তিনি হয়তো চতুরঙ্গ উপন্যাস কিছু অংশ পড়ার পর আর পড়বেন না।কোন জটিলতায় যাইতে চাইবেন না।
বিস্মিত হই- আজ থেকে ১১৭ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ 'শান্তি' গল্প লিখেছিলেন।শান্তি গল্পটি অনেকের কাছে ঈর্ষনীয়।কারণ,চন্দ্রার যে ক্ষোভ,অভিমান,অভিযোগ তা ছিল পুরুষতান্ত্রিক্তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়নতা।এই চিত্র তো আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকেই চিনিয়ে দেয়।১১৭ বছর আগের সমাজের সঙ্গে বর্তমান সমাজের মৌলিক কোনো ব্যবধান ঘটে নি।তাই এই গল্পে 'স্বামী রাক্ষস' নামে একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।চন্দ্রা যে ফাঁসির বন্ধনে আবদ্ধ হলো এটি তার কাছে মুক্তির চাইতেও বড় ছিল।হাজারটা শব্দ দিয়েও চন্দ্রার 'মরন' শব্দের যে মুক্তি,তা প্রকাশ করা যাবে না।প্রসঙ্গ ক্রমে 'অতিথি' গল্পের তারাপদের কথা ভাবতে পারি।পোষ্ট মাস্টার গল্পের রতন!তাছাড়া 'রক্তকবরী',তারপর-'ক্ষুধিত পাষান'।
মাতৃভাষার প্রেক্ষাপটে আমরা যদি বাংলাদেশের দিকে তাকাই তাহলে দেখা যাবে- আগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব কিছু ইংরেজীতে হতো,এখন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে তা শুরু হয়ে গেছে।এ বিষয়টিকে আমার কাছে দুর্বিষহ একটি অত্যাচার বলে মনে হয়।আমরা ক্রমশই পেছনে পড়ে যাচ্ছি।
রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানের ওপর খুব জোর দিয়েছেন।তিনি সব সময়ই আধুনিক শিক্ষার কথা,বিজ্ঞান শিক্ষার কথা বলেছেন।পাশ্চাত্যের ভাষা তিনি গেহন করতে বলেন নি।কিন্তু তাদের বিজ্ঞানকে তুলে এনে প্রয়োগ করার কথা বলেছেন।
১৮৮২ সালে অতি তরুন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভগ্ন হৃদয়' নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।এই কাব্য গ্রন্থটি সুদূর ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা শ্রী বীরচন্দ্র মানিক্য পাঠ করেন।রাজার পাটরানী তখন সদ্য-মৃত,তিনি ওই কবিতা গুলো পাঠ করে সান্ত্বনা পেয়েছিলেন এবং দূত মারফত উপহার পাঠিয়েছিলেন ঠাকুর বাড়িয়ে।
"ভরে আসে আঁখিজল-
বহু মানবের প্রেম দিয়ে ঢাকা,
বহু দিবসের সুখে দুখে আঁকা।
লক্ষ যুগের সংগীতে মাখা
সুন্দর ধরাতল!"
ঠাকুর বাড়িতে প্রায় সবাই-ই লেখালেখি করতেন।স্বর্নকুমারী নিয়মিত লেখিকা,তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।এমন কি অক্ষয় চৌধুরীর স্ত্রী শরৎকুমারী যার বাল্যকাল কেটেছে লাহোরে,রবীন্দ্রনাথ তার নাম দিয়েছেন লাহোরিনী।তিনি বেশ লিখতেন।কিন্তু যিনি হয়তো এদের সবার চেয়ে ভালো লিখতেন,সেই কাদম্বরী না লেখার ধনুভঙ্গ করেছেন।কিন্তু তিনি খুব ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন।
(অনেকে তথ্যসুত্র জানতে চেয়েছেন।তাদের কে বলছি-শেষ পর্বে সকল তথ্যসুত্র দেওয়া হইবে।)
চলবে...
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আকুতি
দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
২-১ : আলিফ-লাম-মীম
আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন