বাংলা সাহিত্যে টয়লেট
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
একদা কবি শহরে এক বিয়ে বাড়ীতে দাওয়াতে আসেন। কবির এমনিতেই শহর ভাল লাগে না। শহরে মুক্ত বাতাস নেই, যান জট লেগেই আছে। সবচেয়ে বড় কথা সেখানে বদ্ধ ঘরের মধ্যে ‘হাগু’ করতে হয়। ঐটার আবার ভদ্র নাম আছেঃ টয়লেট। হাল আমলে নাকি অনেকে ওয়াশ রুম, ফ্রেশ রুম ডাকে। সেই কথা চিন্তা করলেই দম বন্ধ হয়ে যায়! দাওয়াত শেষ কবির ‘ইয়ের’ বেগ পেল। কবি তো বদ্ধ ঘরে ‘ইয়ে’ করবে না, সেখানে দম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ঠেকায় তো কাজ সারতেই হবে। তিনি টয়লেটে গেলেন। টয়লেটের সামনে বিশাল লাইন। কমপক্ষে দশ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজন যদি তিন মিনিট করে সময় কাটায় তাহলে আধা ঘন্টা সময় লাগবে। বিয়ে বাড়িতে বেশি খাওয়া হয়ে গেছে। আর শহরের সব খাবারেই ভেজাল আর ভেজাল। নিম্ন চাপটা তিনি একটু বেশই টের পেলেন। সমুদ্র উপকূল এলাকা হলে এতক্ষনে চার নম্বর বিপদ সংকেত দিতে হত। যাহোক, এখনো মহাবিপদ সংকেত দেখাতে হচ্ছে না। এই সুযোগে তিনি এলাকাটা ঘুরে দেখবেন মানে তিনি আশে পাশে বন জঙ্গল খুঁজতে বের হলেন। এটা যেহেতু প্রেস্টিজিয়াস ব্যাপার তাই কাউকে কিছুই বলতে পারছেন না। রাস্তায় বের হয়ে তিনি দেখলেন আশে পাশে কোন জায়গা খালি নেই। বন জঙ্গল তো দূরের কথা। এটা দেখে ওনার ‘ইয়ের’ বেগ বেড়ে গেল যাকে ছয় নম্বর বিপদ সঙ্কেত দিয়ে মাপা যায়। ধূর! আজ বেশি খাওয়া হয়ে গেছে। এত খেতে কে বলেছে? আসলে বাঙ্গালির পেটে ঘি সয় না। এক পথচারীর সাথে দেখা হল।
“ভাই এখানে আশে পাশে কোথাও খোলা জায়গা আছে?” অনেক কষ্ট করে কবি শুধালেন।
“কী করবেন?” পথচারীর জিজ্ঞাসা।
“না মানে এমনি এমনি জিজ্ঞেস করলাম।”
“সামনে একটা খালি প্লট আছে, আন্ডার কন্সট্রাকশন বিল্ডিং এর সাইনবোরড দেখতে পাবেন।”
কবি হন্তদন্ত হয়ে ঐ খালি প্লটের পানে ছুটতে লাগলেন। ততক্ষনে ৯ নং মহাবিপদ সঙ্কেত দেখানোর সময় হয়ে গেছে। কবি খালি প্লটের দেখা পেলেন। আশে পাশে ঘর বাড়ী বেশি নেই, আর থাকলেও করার কিছু নেই। কবি প্লটে ঢুকেই কায়দা করে বসে পড়লেন। ওইখানে বসা অবস্থায়ই কবি মনে মনে রচনা করলেনঃ “দাও ফিরিয়ে সেই অরণ্য”। ‘ইয়ে’ সারা হলে এখন পানির পালা। পানি তো নেই! কি করি? পকেটে হাত দিয়ে দেখলেন টিস্যু পেপারও নেই। কি আর করা, কবি মাটি ব্যবহার করলেন। তখন কবি মনে মনে রচনা করলেন “ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা”।
কাজ শেষ কবি গান ধরলেন “সেদিন নিরজনে হেগেছিনু বনে চারিদিকে কেউ ছিল না”।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আমার মায়ের চৌহদ্দি
আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু
খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!
নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?
শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন