somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তগদ্য: নিঝুমশৃঙ্গার

১৬ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইভাষা তোমাকে দিয়েছিলো দূর পাহাড়ের ওপারে জেগে থাকা একলা এক কাঠঠোকরা পাখি। তুমি হাতের নখের ভিতর লুকিয়ে রেখেছিলে গ্রামের সবচেয়ে শীতল পুকুরটির মানচিত্র। সে কাউকে দেখতে পায় না। এদিক ওদিক তাকায়। একদিন সে কবিতা লিখতো। তার দুয়েকটা কবিতা কয়েকটা ছোটোকাগজে ছাপাও হয়েছিলো। তার সংগ্রহে নেই। কেননা তার চটের একটি ছেড়া ব্যাগে বুকশেল্ফ ধরে না। আজও সে বাসে চেপে পাশের শহরে গিয়েছিলো। তার ভাড়া লাগে না। শহরের একফালি ঘরে আছে হেমলতার বিকলাঙ্গ স্মৃতি। সে দেখতে পারে না। অথবা হয়ত তার নৌকো ছিলো নদীযান। সে তাকে টেনেছিল এবং গাছ পর্যন্ত তাদেরকে ঝাঁকুনি দিয়েছিলো। আমি মাঠের অন্যান্য আইল থেকে পর্যবেক্ষণ করেছিলাম এবং তাদেরকে ভালবেসেছিলাম।

তুমি পোড়াকাঠের হিশেব চেয়েছিলেÑ আর আমি দিনের পর দিন নাম না জানা পতঙ্গের মিছিল ভেঙে গিয়েছি বনে বনে; ওই বনে দাবানল ছিলো কে বলেছে তোমাকে; আমি কি তবে জ্বালাতে পারি না সরল আগুন উৎসবের দ্বিমাত্রিক বাসনা। এই বাসনা পুড়ে যায় একটি গানের ভিতর। বহুদূর তুমি ভুলে গেছে আতপের চিরতপ্ত পথঘাট। বিড়ি-সিগারেটের দোকান, তামাকের বন আছে একটু দূরে। শাহরিক ধুলো আর বালি যখন ধূলি ধূলি পথে হারিয়ে যায়, কারো সিঁথির ফাঁদে আকটে যায় চিরলোলুপ চাঁদ আর চন্দ্রের অনিদ্রাবিহারÑ আমার মনে পড়ে বিনোদিনী বালা, হরমতি, পার্বতী, জাহ্নবী ছায়া যে তটে পড়ে আছে বনাঞ্চল, বিক্ষত শর আর পাঞ্চালির আঁচলের চুলি।

আমি এই কোণে আমাদের উজ্জ্বল ভাইদের দেখি। বিবাহ একটি স্বপ্ন-- সেটি দ্বিতীয় দিন ছিল। এবং তৃতীয়। তারা এখন একত্রে চালায়; একটি হঠাৎ করে মানুষ এবং নারী দেখে। সে কেনো যে অচেনা লোকদের ভয় পায়। ঠক শব্দে তার ঘুম ছুটে গেলো। সে রান্নাঘর থেকে একটা বটি নিয়ে বারান্দায় বের হলোএবং দেখলো একটি শিমপাতা গাঢ় সবুজ প্রজাপতি হয়ে দরজার কড়ায় বসে আছে। কিন্তু একটা প্রজাপতির পক্ষে কি দরজার কড়া নাড়া সম্ভব? হোক দুইশো চারবার সে বিবাহের দেবতা। ইদানীং তার খুব মন খারাপ। দীর্ঘশ্বাসে পোড়া বাতাস এসে ঘিরে থাকে পলক; দৃশ্যের ভিতর সত্য যতোটুকু থাকেÑ থাকে কিনা সে ভাবছে। আর সান্তিয়াগোর হাঙর ডুবো ডুবো ঝিলে কঙ্কাল হয়ে জানান দিচ্ছে সমুদ্রের সমুদ্রের অস্তিত্ব।

আপনি শালা কবি। সে আপনার ত্বক অনুসরণ করে। আপনি ত্বকে শুনেন। আপনার ত্বক এইই খুলবে এবং নিজেকে হারাবে; তারপর হাড়, তারপর আপনার চোখ, আপনার স্মৃতি মেলে দেখতে পারেন। আজরাত চরের শেষ। সে একটি আলোর ঔরষে গর্ভবতী হয়েছিলো। যে তাকে উড়াউড়ি করতে ডানা দিয়েছিলো-- সেই প্রথম এটি দাবী করেছিল। দেবসভায় কে নাচে তবে কবন্ধহাঁসের মতো। সে কি বেহুলা? বেহুলা বেকার। নৃত্যের বেকার কারিগর। নখিন্দরের দেহ আর ফিরে পায় না প্রাণ। শিবা শুয়ে থাকে সন্ধ্যার ইজিচেয়ারে। তার কাঁচুলিতে জাফরান রঙ; চোখে কিসের বিষাদ? সে নিজেকে নারী ভাবছে। হয়, হয়। সবি সম্ভব। সে শতরূপা বিভা। আর আমার মনে হয় তিলোত্তমার প্রেম বিশ্বকর্মার প্রতি। সবিই তবে ভোগে লাগে! আহা ভোগ! ঝড় আর অরণ্য নিজস্ব বৈঠক সেরে প্রথমে চরাচর তারপরে খেচর হয়ে যায়।

আপনি কবি। আপনার জামার পকেটে লুকিয়ে থাকবে ঝড়। আপনি দুআঙুলে তুলে নিয়ে বানাবেন ঝড়ের ওমলেট। প্রেমিকার নিমন্ত্রণে সাড়া না নিয়ে হারিয়ে যাবেন বটের পাতায়। জমিনের আইলে বেতরে কাঁটায় আঁকবেন ললিত সর্বনাশ। আমি আর আপনিÑ পরস্পরের পার্থক্য এইই আমি ভাঙা আয়নায় মুখ দেখে নিজেকে খুঁজি। আর আপনার কোনো আয়না নেই। ফলত আপনার কোনো জ্বালা নেই। আপনার টেবিলে পাতার পিরিচে ঢাকা ঝড়ের ওমলেট বড় উপাদেয়। আপনার হিপপকেটে প্রেমিকার জন্যে কেনা লিপস্টিক। ওটা বের করুন, লিপস্টিকে আপনার পাশের দেয়ালে একটা কবিতা লেখা যাবে। কাল রাতে শীত ছিলো মশারির ভিতর। আমি শালা মশারির বিজ্ঞাপন লিখে লিখে সারা। ওটা নাকি অষুধ মাখানো। মার্কিন।

আজ রাতে রাত হলে আমি এস্রাজের ছবি দেখে মনে মনে শুনে নেবো অতিপুরাতন কোনো রাগ। ধরেন, হতে পারে তিলক কামোদ। এটা কি পুরাতন? রাত্রি দ্বিপ্রহর। এতে কি শৃঙ্গার রস পর্যাপ্ত বিদ্যমানতা? পানিসারেগাসা, রেমাপাধামাপাসা... তারপর নামে সাপাধামাগা ইতি আদি। রাত গড়িয়ে যায়, গড়িয়ে যায়... তুমি কবি হয়েছো বলে বুকের ভিতর হাহাকার নিয়ে আমার কাছে আসো নি এবং যে কারণে আমি তোমার কাছে। ওপাশে অনতিদূরে যুদ্ধ আছে। যুদ্ধের নাম বিনোদন।



সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১২:৪৩
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×