somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদের ছুটিতে সিলেট ঘুরে আসুন (সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা) ২য় পর্ব

১৫ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
শ্রী চৈতন্যদেবের বাড়ি: ষোড়শ শতকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিনে পন্ডিত জগন্নাথ মিশ্রের কৃতি সন্তান শ্রী চৈতন্য (বিশ্বম্ভর মিশ্র) বাঙালির আধ্যাত্বিক জীবনে এক বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করেন । ব্রাম্মণ্যবাদ ও উগ্র বর্ণবাদের বিরুদ্ধে শ্রী চৈতন্য পরিচালিত গণ বিপ্লবে বাংলার আপামর জনসাধারণ বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছিলেন। শ্রী চৈতন্যের সমকালে এবং এর বহুকাল পূর্ব থেকে নবদ্বীপে ঢাকাদক্ষিনের বহু বেদজ্ঞ অধ্যায়ন কিংবা অধ্যাপনার নিমিত্তে বসবাস করতেন । ঢাকাদক্ষিন রত্নগর্ভ আচার্য্য সে সময় নবদ্বীপে বসবাসকারী এক পন্ডিত ছিলেন। তাঁর পুত্র যদুনাথ কবিচনদ্র প্রসিদ্ধ বৈষ্ণব পদকর্তা ছিলেন ।তাঁর রচিত ‘‘ পদকল্পতরু ’’ এক বিখ্যাত বৈষ্ণব কাব্য। পরবর্তীতে ঢাকাদক্ষিনের প্রদ্যুন্ম মিশ্র ( শ্রী চৈতন্যের জেঠতুতো ভাই ) রচিত ‘‘ শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্যেদয়াবলী ’’ এবং জগজ্জীবন মিশ্র রচিত ‘‘ মনোঃসন্তোষিনী ’’ বৈষ্ণব সাহিত্য দুটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
অবস্থান: সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ নামক স্থানে।
দুরত্ব: সিলেট শহর হতে ৩০ কি.মি।
যাতায়াত: সিলেট শহর হতে জকি গঞ্জ বা বিয়ানীবাজার উপজেলা গামী যেকোন বাস সার্ভিসে আপনি ঢাকা দক্ষিণ পর্যন্ত যেতে পারবেন। তারপর মহা প্রভু শ্রী চৈতন্য দেবের বাড়ী যেতে আপনাকে ভ্যান বা রিক্সা নিতে হবে।
কোথায় থাকবেন: আপনাকে থাকতে হবে গোলাপগঞ্জ অথবা সিলেট শহরে।

হাছন রাজার মিউজিয়াম: মরমী কবি হাছন রাজা ও পরিবারের অন্য সদস্যদেও স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সিলেট নগরীর প্রানকেন্দ্র জিন্দাবাজারে গড়ে তোলা হয়েছে একটি যাদুঘর। এর নাম দেওয়া হয়েছে মিউজিয়াম অব রাজাস’। এখানে দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা হাছন রাজা ও তার পরিবার সম্পর্কে নানা তথ্য জানতে প্রতিদিন ভিড় করছেন।

মিউজিয়ামে দেওয়ান হাছন রাজা ও দেওয়ান একলিমুর রাজা চৌধুরীর মূল্যবান ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও গানের পান্ডুলিপি শোভা পাচ্ছে। প্রবেশদ্বারে রয়েছে হাছন রাজার বাড়ির ধ্বংসাবশেষের একটি পিলার। মিউজিয়ামটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে-পবিত্র কোরআন শরীফের ছোট আকারের একটি কপি। কোরআন শরীফটির সাইজ হচ্ছে-পৌণে এক ইঞ্চি বাই এক ইঞ্চি। এখানে শোভা পাচ্ছে-হাছন রাজার ঘোড়ার বেল্ট, তাঁর জন্মস্থান ও জমিদারী এলাকা থেকে সংগৃহীত ইট, রাজার পোষা কুড়া পাখি ও হাতির নামের তালিকা, তার ব্যবহৃত শ্বেত পাথর ও রুপার তৈজস পত্র, হাছন রাজার ওপর নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়া ছবিতে ব্যবহৃত পোষাক ও ছবির সিডি, তার স্ত্রীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র, দেওয়ান একলিমুর রাজার ব্যবহৃত চেয়ার, তার স্ত্রীর ব্যবহার্য সোনার তারের ও রুপার তারের তৈরী পোষাক, তার ব্যবহৃত হিসাবের খাতা, বৃটিশ সরকার প্রদত্ত খান বাহাদুর মেডেল এবং দেওয়ান তাছাড়া রাজা সংগৃহিত হাছন রাজার গানের পান্ডুলিপি।

আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে মন্ত্রীদের কাছে দেওয়ান তালেবুর রাজার লেখা চিঠি, তার ব্যবহৃত ঘড়ি, কলম, আংটি, লাইসেন্স, দেওয়ান তওয়াবুর রাজা চৌধুরীর ব্যবহৃত ছুরি, দেওয়ান ছয়ফুর রাজা চৌধুরী সংগৃহীত হাঙ্গরের দাঁতও যাদুঘরে স্থান পেয়েছে। হাছন রাজার বংশধরদের চার্টও মিউজিয়াম সংগৃহীত আছে।

দেওয়ান হাছন রাজা বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জে ১২৬৯ সালের ৭ পৌষ (১৮৫৪ সালের ডিসেম্বর মাসে) জন্মগ্রহণ করেন। হাছন রাজার গান বাংলা লোক সঙ্গীতের অমূল্য সম্পদ। মূলত সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক উপভাষায় রচিত তার গান। তবু বাণী বৈচিত্রে ও সুর মাধুর্যে এ গান অঞ্চল নির্বিশেষে বাংলাভাষী সকল জনগোষ্ঠীর হৃদয় জয় করেছে। অর্জন করেছে বিপুল জনপ্রিয়তা। কেবল জনপ্রিয়তাই নয়, ভাবের গভীরতা ও উৎকর্ষের বিচারে হাছন রাজার গান কালজয়ী সাহিত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৩২৯ সালের ২১ অগ্রহায়ণ(৭ ডিসেম্বর,১৯২২) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মালনীছড়া চা বাগান

চা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয়। সকালে এক কাপ গরম চা না পেলে বাঙালী সমাজের যেন একদম চলে না। বাংলাদেশের যে কয়টি অঞ্চলে চা বাগান পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। সিলেটের চায়ের রঙ, স্বাদ এবং সুবাস অতুলনীয়। উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান সিলেট শহরে অবস্থিত। নাম মালনীছড়া। ১৮৪৯ সালে এই চা বাগান প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে বেসরকারী তত্তবধানে চা বাগান পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৫০০ একর জায়গার উপর এই চা বাগান অবস্থিত।চা বাগানের পাশাপাশি বর্তমানে এখানে কমলা ও রাবারের চাষ করা হয়।

মালনীছড়া চা বাগান ছাড়াও সিলেটে লাক্ষাতুড়া চা বাগান, আলী বাহার চা বাগান, খাদিম, আহমদ টি স্টেট, লালাখাল টি স্টেট উল্লেখযোগ্য।

অবস্থান: মালনীছড়া এবং লাক্ষাতুড়া চা বাগান দুইটিই সিলেট শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট হতে গাড়ীতে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ।

কি কি দেখবেন: পাহাড়ের গায়ে চা বাগানের দৃশ্য, ছায়া বৃক্ষ, চা শ্রমিকদের আবাসস্থল, কমলার বাগান, রাবার বাগান, চা তৈরীর প্রক্রিয়া।

কোথায় অবস্থান করবেন: সাধারনত চা বাগানে থাকার তেমন কোন সুব্যবস্থা নাই। আপনাকে সিলেট শহরেই থাকতে হবে।

ভোলাগঞ্জ: ভারতের আসাম প্রদেশের রাজধানী শিলংয়ে এক সময় লোকজন এ রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতো। কালের পরিক্রমায় এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রজ্জুপথ। নাম ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে। দেশের সর্ববৃহৎ ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীর অবস্থানও এ এলাকায়। রোপওয়ে, পাথর কোয়ারী আর পাহাড়ী মনোলোভা দৃশ্য অবলোকনের জন্য এখানে প্রতিদিনই আগমন ঘটে পর্যটকদের। পর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা গেলে ভোলাগঞ্জ হয়ে উঠতে পারে দেশের সেরা ও আকর্ষনীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র।
ভোলাগঞ্জ রোপওয়েঃ
ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা ধলাই নদীর সাথে প্রতিবছর বর্ষাকালে নেমে আসে প্রচুর পাথর। ধলাই নদীর তলদেশেও রয়েছে পাথরের বিপুল মজুদ। এই পাথর দিয়ে পঞ্চাশ বছর চালানো যাবে- এই হিসাব ধরে ১৯৬৪-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্প। বৃটিশ রোপওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পের আওতায় ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত সোয়া ১১ মাইল দীর্ঘ রোপওয়ের জন্য নির্মাণ করা হয় ১২০টি টাওয়ার এক্সক্যাভেশন প­্যান্ট। মধ্যখানে চারটি সাব স্টেশন। দু’প্রান্তে ডিজেল চালিত দুটি ইলেকটৃক পাওয়ার হাউস, ভোলাগঞ্জে রেলওয়ে কলোনী , স্কুল,মসজিদ ও রেস্ট হাউস নির্মাণও প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। এক্সক্যাভেশন প­্যান্টের সাহায্যে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাথর উত্তোলন করা হলেও বর্তমানে এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। সংশি­ষ্টরা জানান, পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব, পাথরের অপর্যাপ্ততা ও বিকল ইঞ্জিনের কারণে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ধরে এক্র্ক্যাভেশন মেশিন বন্ধ রয়েছে। আগে উত্তোলিত পাথর ভাঙ্গা, ধোয়া ও টুকরোর আকার অনুসারে বালু,স্টোন চিপস ও ট্রাক ব্যালাস্ট ইত্যাদি শ্রেণীতে ভাগ করা হতো। শ্রেণী অনুসারে সেগুলো পৃথক পৃথকভাবে বের হয়ে রোপওয়েতে ঝুলানো চারকোনা বিশিষ্ট ষ্টীলের বাকেটে জমা হতো। প্রতিটি বাকেটের ধারণ ক্ষমতা ২৩৭ কেজি(প্রায় ১২০ফুট)। পাথর ভর্তি বাকেট পাঠানো হতো ছাতকে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ঠিকাদাররা স্থানীয়ভাবে বোল্ডার পাথর ক্রয়ের পর তা ভেঙ্গে বিভিন্ন সাইজে বিভক্ত করে। তারপর তা বাকেটে পুরে ছাতকে প্রেরণ করা হয়। মজার ব্যাপা হলো, এলাকাটি দেখতে অনেকটা ব-দ্বীপের মতো। ধলাই নদী বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে প­্যান্টের চারপাশ ঘুরে আবার একীভূত হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের কাছে ধলাই নদী মিলিত হয়েছে-পিয়াইন নদীর সাথে। রোপওয়ের আয়তন প্রায় একশ’ একর। আর এ কারণেই স্থানটি পর্যটকদের কাছে এত আকর্ষণীয়।
চেরাপুঞ্জির নিচেঃ
পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল এলাকা চেরাপুঞ্জির অবস্থান ভারতের পাহাড়ী রাজ্য মেঘালয়ে। ধলাই নদীর উজানে এ রাজ্যের অবস্থান। খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় ঘেরা এ রাজ্যের দৃশ্য বড়ই মনোরম। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকায় অবস্থান করে পাহাড় টিলার মনোরম দৃশ্যাবলি অবলোকন করা যায়। বর্ষাকালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি ধলাই নদীতে পাহাড়ী ঢলের সৃষ্টি করে। গ্রীষ্মকালে অনেকে ধলাই নদীকে মরা নদী হিসাবে অভিহিত করলেও বর্ষাকালে নদীটি ফুলে ফেঁপে উঠে।
পাথর আহরণের দৃশ্যঃ
ভোলাগঞ্জ কোয়ারীতে শুষ্ক মওসুমে প্রধানত গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করা হয়। এ পদ্ধতিতে শ্রমিকরা প্রথমে কোয়ারীর ওপরের বালি অপসারণ করে। পর্যায়ক্রমে গর্ত খুঁড়ে নিচের দিকে যেতে থাকে। ৭/৮ ফুট নিচু গর্ত খোঁড়ার পর কোয়ারীতে পানি উঠে যায়। পানি উঠে গেলে শ্যালো মেশিন দিয়ে কোয়ারীর পানি অপসারণ করে শ্রমিকরা পাথর উত্তোলন করে। এর বাইরে ‘শিবের নৌকা’ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করা হয়। এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের উপায় হচ্ছে-একটি খালি নৌকায় শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন লাগানো হয়। ইঞ্জিনের পাখা পানির নীচে ঘুরতে থাকে। পাখা অনবরত ঘুরতে ঘুরতে মাটি নরম হয়ে পাথর বেরোতে থাকে। সংশি­ষ্টরা ঝঁকির সাহায্যে পাথর নৌকায় তুলে। এ পদ্ধতিতে সহস্রাধিক শ্রমিক পাথর উত্তোলন করে থাকে। এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের দৃশ্যও খুব উপভোগ্য।

ভোলাগঞ্জ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনঃ
ভোলাগঞ্জে রয়েছে একটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন। এ স্টেশন দিয়ে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চলে। এ স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা প্রধানত চুনাপাথর আমদানী করে থাকেন। চুনাপাথর নিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের জিরো লাইনে এ কাস্টমস স্টেশনের অবস্থান। চুনাপাথর আমদানির দৃশ্য অবলোকনের বিষয়টিও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।

যেভাবে যেতে হয়:
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলো মিটার। শহর থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি কোন যানবাহন সার্ভিস নেই। আগন্তুকরা সিলেট থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত যাত্রীবাহি বাস অথবা ফোরস্ট্রোকযোগে যাতায়াত করেন। টুকের বাজার থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত রয়েছে বেবিটেক্সি সার্ভিস।

কোথায় থাকবেন: জেলা পরিষদের একটি রেস্ট হাউস আছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্তবধানে। থাকতে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিতে হয়। এ ছাড়া ভোলাগঞ্জ বা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় থাকার জন্য তেমন কোন ভাল ব্যবস্থা নাই। আপনি ভোলাগঞ্জ দর্শন শেষ করে সিলেটে এসে অবস্থান করতে পারবেন।


জিতু মিয়ার বাড়ি: চাদঁনী ঘাটের সিড়িঁ/ আলী আমজাদের ঘড়ি/ বন্ধু বাবুর দাড়ি/ আর জিতু মিয়ার বাড়ি সিলেটের পরিচিতিতে বহুল প্রচলিত এমন লোকগাঁথা। সিলেট নগরীর শেখঘাটে কাজীর বাজারের দক্ষিণ সড়কের ধারে ১ দশমিক ৩৬৫ একর ভুমি জুড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জিতু মিয়ার বাড়ি। চুন সুরকি দিয়ে নির্মিত মুসলিম স্থাপত্য কলার অনন্য নিদর্শন এ দালানটি নির্মাণ খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতু মিয়া। ১৯৯১ সালে এ বাড়ির সামনের দালানটি নির্মাণ করা হয়। বর্তমান কাজিরবাজার গরুর হাট ছিল কাজিদের মূল বাড়ি। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাড়িটি লন্ডভন্ড হয়ে গেলে বর্তমানে জায়গায় বাড়িটি স্থানান্তরিত হয়। খাঁন বাহাদুর জিতু মিয়ার প্রথম স্ত্রী ছিলেন তার চাচা মাওলানা আব্দুল রহমানের মেয়ে সারা খাতুন। সারা খাতুনের অকাল মৃত্যুতে ঢাকার নবাব পরিবারের খাজা রসুল বক্সের মেয়েকে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ স্ত্রীও অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের ঘরে কোনো সন্তান সন্তনি ছিল না। তবে পরবর্তীতে জিতু মিয়ার ৫টি বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়।

সে সব স্ত্রীর ঘরে তার বহু সন্তান সন্ততি রয়েছে। কিন্তু দুরদর্শী জিতু মিয়া তার জমিদারি ও বিশেষ করে আলীশান বাড়িটির অস্তিত্ব চিরদিন অক্ষত রাখান লক্ষ্যে মৃত্যুর আগে ১৯২৪ সালে নিজেকে নিঃসন্তান উল্লেখ করে তৎকালীন আসাম সরকারের অনুমোদন নিয়ে তারঁ যাবতীয় সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। কে বি এহিয়া ওয়াকফ এস্টেট নামে এস্টেট এর মোতাওয়াল্লি নিযুক্ত হন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। পরবর্তীতে সিলেট বিভাগে উন্নীত হলে বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকার বলে এ এস্টেটের মোতাওয়াল্লি নিযুক্ত হন।

ইতিহাস ঘেটে জানা গেছে, মৌলভী আবু নছর মোহাম্মদ ইদ্রিছ কাজী হয়ে সিলেট আসেন নবাবী আমলে। সুরমা নদীর তীরে তারঁ বিচারালয়কে কেন্দ্র করে তৎকালীন সময়ে গড়ে উঠে একটি গঞ্জ। লোকজন একে খানবাহাদুর গঞ্জ বাজার বলে ডাকতো। তার মৃত্যু পর তার পুত্র মাওলানা আবু মোহাম্মদ আবদুর কাদির ও মাওলানা আবুল হোসাইন মোহাম্মদ আব্দুর রহমান তাদের বিশাল জায়গীরকে কেন্দ্র করে জমিদারি এস্টেট গড়ে তোলেন।

উভয় ভ্রাতাই ছিলেন আরবি উর্দু ফারসি ভাষায় পারদর্শী। সে সময় তাদের লিখিত গ্রন্থগুলো ভারত বর্ষের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্য তালিকায় ছিল। এই দুই ভাই বাহাদুরগঞ্জ নাম পরিবর্তন করে কাজির বাজারের এ নতুন নামকরণ করেন। এ দুই ভাইয়ের মধ্যে আবুল হোসাইন মোহাম্মদ আব্দুর রহমান ছিলেন দানবীর ও ভোজন বিলাসী। নিজে খেতেন অন্যকেও খাওয়াতে ভালবাসতেন । আর তারঁ বড় আবদুল কাদির ছিলেন মেধাবী ও দূরদর্শী ।

খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতু মিয়া(১৮৫১-১৯২৫) প্রথম জীবনে কিছু দিন সাব রেজিস্টার ছিলেন। পরে তিনি এই চাকরি ছেড়ে দেন। ১৮৯৭ থেকে ১৯০৩ সাল পযর্ন্ত তিনি সিলেট পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন, ছিলেন অনারারী ম্যাজিস্টেটও । জিতু মিয়ার পরিবারের জাকঁজমক চলাফেরা ও বিলাসী জীবন যাত্রা ছিল সে কালের এক অন্যতম আলোচিত বিষয়। কথিত আছে জিতু মিয়ার পরিবারে ১২২টি চুলোয় রান্নাবান্না হতো । প্রতিদিন জরুরী প্রয়োজনে গ্রাম থেকে শহরে আসা শত শত লোক জিতু মিয়ার বাড়িতে আতিথেয়তা গ্রহণ করতেন।

তিনি জরি খচিত আচখান চোগা ও জমিদার টুপি ব্যবহার করতেন। তারঁ র্রুহাম গাড়ি ছিল তমকা আটকা। সিলেটে সর্বপ্রথম তিনি গাড়ি ব্যবহার করেন। খান বাহাদুর জিতু মিয়া ছিলেন শৌখিন ব্যক্তি। তার ড্রয়িংরুম ছিল এক দর্শনীয় কক্ষ। সুসজ্জিত ড্রয়িংরুমে তুরস্কের পাশাদের ছবি রুশ তুরস্কের যুদ্ধের চিত্র বৃটিশ রাজ পরিবার ও রাজপুরুষদের আলোক চিত্র শোভা পেত। অবশ্য শেষ জীবনে জিতু মিয়া আব্দুর আজিজ নামক এক পাঠান মৌলভীর মুরিদ হন।

তার নিদের্শে জিতু মিয়া সব চিত্রকর্ম অপসারিত করেন। এসবের স্থলে টানিয়ে দেন ক্যালিওগ্রাফি করা পবিত্র কুরআন হাদিসের বাণী। কাচারী ঘরের ডান দিকের একটি কক্ষে সে সময়কার একটি লম্বা কালো টেবিল ও ২০টি চেয়ার এখনও সুসজ্জিত রয়েছে। উপমহাদেশের খ্যাতনামা অনেক স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্ব এসব চেয়ার টেবিলে বসে গুরুত্বপূর্ণ সভা করেছেন। অলিকুল শিরোমণি দেওবন্দ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওয়ালা মদনীর (রহ)র পদধূলি ধন্য এ বাড়িটি। তারঁ পুত্র আসআদ মদনীরও আগমন ঘটেছে এ বাড়িতে অনেকবার। এছাড়াও এ বাড়িতে শুভাগমন করেছেন আসামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার সাদ উল্লাহ ভারতের সাবেক আইসিএস খান বাহাদুর গজনফর আলী খান পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, আল্লামা সহুল আহমদ উসমানী, পল্লী কবি জসীমউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীসহ ইতিহাসের অনেক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব এ বাড়িতে এসে সিলেটের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।

সিলেট মণিপুরি মিউজিয়াম

ইতিহাস-ঐতিহ্যের নানা উপকরণে সমৃদ্ধ সিলেট মণিপুরি মিউজিয়াম। এতে রয়েছে কয়েক শ’ বছরের পুরনো ঘন্টা, যুদ্ধে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জিনিসপত্র এবং মণিপুরীদের তৈরী হ্যান্ডলুম। মণিপুরিদের কৃষ্টি-কালচারকে তুলে ধরাই মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য।

সুবিদবাজারে ভাড়া করা বাড়িতে মিউজিয়ামটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মিউজিয়ামটির জন্য একটি স্থায়ী ঠিকানা খোজা হচ্ছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক হারুনুর রশীদ খান মিউজিয়ামটির জন্য স্থায়ী ভূমি বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছেন।

বৃহত্তর সিলেটে প্রায় সোয়া লাখ মণিপুরি রয়েছে। সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, মাধবপুর, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল এবং সুনামগঞ্জের ছাতকে এ সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। এরা ক্ষুদ্র জাতিসত্তা হিসাবে পরিচিত। মণিপুরিদের তৈরী হস্তশিল্প খুবই জনপ্রিয়। মণিপুরিদের সংস্কৃতি খুবই বৈচিত্রময়।
তাদের বড় উৎসব হচ্ছে রাস পূর্ণিমা। এ পূর্ণিমাকে ঘিরে প্রতিবছর মণিপুরিদের মিলনমেলা বসে। মণিপুরিদের সংস্কৃতিকে আরো জনপ্রিয় করে তুলতে নব প্রতিষ্ঠিত মিউজিয়ামটি অবদান রাখবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

মনিপুরী রাজবাড়ী

মনিপুরী সিলেট তথা বাংলাদেশের আদি সম্প্রদায়ের অন্যতম জনগোষ্ঠি। নগর সিলেটের মির্জাজাঙ্গালে অবস্থিত মনিপুরী রাজবাড়ী প্রাচীন স্থাপত্য কীর্তির অন্যতম নির্দশন। এ ভবনের নির্মাণ শৈলী সিলেট অঞ্চলের কৃষ্টি-সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এককালের প্রভাবশালী রাজা গম্ভীর সিং এর স্মৃতিধন্য এ বাড়িটি আজ অবহেলিত ও বিলীন প্রায়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে প্রকৃত ভবন হারিয়েছে তার স্বকীয়তা। বাড়ীর সুপ্রাচীন প্রধান ফটক, সীমানা দেয়াল, মনোহর কারুকাজের সিড়ি ও বালাখাঁনার ধ্বংসাবশেষই বর্তমান মনীপুরী রাজবাড়ীর স্মৃতি সম্বল। এখনও ধ্বংস স্ত্তপের মতো টিকে থাকা স্থাপনাটি এ বাড়ীসহ সিলেটে বসবাসরত মনিপুরী সম্প্রদায়ের গভীর শ্রদ্ধা-ভক্তির স্থান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীতে সিলেট নগরীর মির্জাজাঙ্গালে রাজবাড়ীটি স্থাপিত হয়। তৎকালীন মনিপুরী রাজ্যের তিন সহোদর রাজা চৌর্জিৎ সিং, মার্জিত সিং ও গম্ভীর সিং রাজবাড়ীটি তৈরী করে এখানে বসবাস করেন। পরে চৌর্জিৎ সিং ও মার্জিত সিং কমলগঞ্জের ভানুগাছ এলাকায় বসতী স্থাপন করলেও রাজা গম্ভীর সিং থেকে যান মির্জাজাঙ্গালের রাজবাড়ীতে। ১৮২৬ সালে বৃটিশ সরকারের সহযোগিতায় বার্মার সাথে যুদ্ধ করে মনিপুর রাজ্য পুরুদ্ধারের আগ পর্যন্ত রাজা গম্ভীর সিং সপরিবারে এখানেই অবস্থান করেন। ইতিহাসে মনিপুরীদের কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয় ১৮১৯-১৮২৬ সাল পর্যন্ত । ১৮২২ সালে মনিপুরী রাজ্যের সাথে বার্মার যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ লোক মারা যায়। অসংখ্য মনিপুরী পরিবার নিজ আবাসভূমি ছেড়ে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজা চৌর্জিৎ সিংও কাছাড়ে পালিয়ে যান। রাজ্যভার গ্রহণ করেন তার সহোদর মার্জিত সিং। এক পর্যায়ে মার্জিত সিং বার্মিজদের কাছে পরাস্থ হন। পরিশেষে চৌর্জিৎ , মার্জিত ও গম্ভীর তিন ভাই একত্রে পুনরায় চলে আসেন মির্জাজাঙ্গালের রাজবাড়ীতে। তৎকালীন বৃটিশ উপনিবেশ শাসকদের আশ্রয়ে এখানেই বসতী স্থাপন করেন। বৃটিশ সরকারের অনুরোধে সিলেটে সশস্ত্র খাসিয়াদের দমনে মনিপুরী লেভী (সৈন্যবাহিনী) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদিকে, সিলেটে দীর্ঘদিন অবস্থানের সুবাদে মনিপুরিদের সাংস্কৃতিক সম্ভারের নানা দিক এ অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যা এখনো প্রতীয়মান হয় মনিপুরী নৃত্য, গান ও পোষাক ছাড়াও সিলেটের কৃষ্টি সংস্কৃতিতে।

মনিপুরী সম্প্রদায়ের ইতিহাস-আবেগ-অনুভূতির অন্যতম স্থান মির্জাজাঙ্গালের রাজবাড়ীর সংস্কারের জন্য আজ অবধি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। রাজা কতৃক নির্মিত প্রাসাদের তিন চতুর্থাংশের কোন অস্তিত্ব নেই। উপরন্তু রাজবাড়ীর সামনে অপরিকল্পিত ভাবে মন্দির নির্মান করে রাজবাড়ীর পুরাকীর্তি ঢেকে রাখা হয়েছে।

বর্তমানে মনিপুরী ঠাকুর ও ব্রাহ্মণ পরিবারের লোকজন বংশ পরম্পরায় বসবাস করছেন এ রাজবাড়ীতে। পূর্বসুরী রাজার রেখে যাওয়া নানা বস্ত্তকে স্বর্ণালী স্মৃতি হিসেবে ধারণ করে আছে পরিবারগুলো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- একমণ ওজনের মন্দিরের একটি ঘন্টা যার গায়ে মনিপুরী ভাষায় লেখা আছে, ‘‘শ্রীহট্ট কুনোঙ্গী শ্রী মহাপ্রভুদা শ্রীলশ্রী পঞ্চযুক্ত মনিপুরে স্বরচন্দ কীর্ত্তি সিংহ মহারাজন্য কৎখিবী সরিকনি ইতিশকাব্দা ১৮০০ তারিখ ১৮ জৈষ্ঠ্য’’।

মনিপুরী সংস্কৃতি সিলেটের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যেরই অংশ । দেশীয় ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই সুপ্রাচীন, ঐতিহাসিক রাজবাড়ির সংস্কার ও পুরাকীর্ত্তির সংরক্ষনে অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।

শাহী ঈদগাহ

স্থানটি নানা কারণে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। এখানেই হাদা মিয়া ও মাদা মিয়া ভ্রাতৃদ্বয়ের নেতৃত্বে ইংরেজ বিরোধী অভ্যুত্থান হয়েছে। ভারতের অহিংস আন্দোলনের নেতা মহাত্না গান্ধী থেকে শুরু করে কায়দে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের মতো নেতাদের পাদস্পর্শে ধন্য স্থানটি। অতীতে সিলেটের বড় বড় সমাবেশের স্থানও ছিল এটি। আর প্রতি বছর ঈদ জামায়াতে লোক সমাগমের বিষয়টি তো বলাই বাহুল্য।

স্থানটি হচ্ছে- সিলেটের শাহী ঈদগাহ। দেশের প্রাচীনতম ঈদগাহ এটি। মনোমুগ্ধকর কারুকার্যময় এই ঈদগাহটি মোগল ফৌজদার ফরহাদ খাঁ নির্মাণ করেন। এখানে এক সাথে প্রায় দেড় লাখ মুসল্লী ঈদের জামাত আদায় করতে পারেন। ঈদগাহর প্রাকৃতিক দৃশ্য খুবই মনোরম। নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় এর অবস্থান। তাই ঈদগাহটির এমন নামকরণ হয়েছে। ঈদগাহের উত্তরে শাহী ঈদগাহ মসজিদ, পাশে সুউচ্চ টিলার ওপর বন কর্মকর্তার বাংলো, দক্ষিণে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট কেন্দ্র, পূর্ব দিকে হযরত শাহজালাল(র:) এর অন্যতম সফরসঙ্গী শাহ মিরারজী (র:) এর মাজারের পাশের টিলার ওপর রয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।

অনুপম কারুকার্যখচিত এই ঈদগাহের মূল ভূ-খন্ডে ২২টি সিঁড়ি মাড়িয়ে উপরে উঠতে হয়। এরপরই ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত ঈদগাহ। সীমানা প্রাচীরের চারদিকে রয়েছে-ছোট বড় ১০টি গেইট। ঈদগাহের সামনে অজুর জন্য বিশাল পুকুর অবস্থিত।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৭৮২ খ্রীষ্টাব্দে এখানে সৈয়দ মোহাম্মদ হাদী ও সৈয়দ মোহাম্মদ মেহেদী ভ্রাতৃদ্বয়ের নেতৃত্বে ইংরেজ বিরোধী অভ্যূত্থান সংঘটিত হয়। ইংরেজদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে সৈয়দ ভ্রাতৃদ্বয় শহীদ হন।

প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে এখানে বিশাল দুটি ঈদ জামাত অনুষ্টিত হয়। এখানে এক সাথে লক্ষাধিক মুসল্লি ঈদ জামাত আদায় করতে পারেন।
ছবি দেথতে এখানে ক্লিক করুন
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×