somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বিএম বরকতউল্লাহ
পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

দুষ্টু বিড়ালছানা

১৪ ই নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিড়ালছানাকে নিয়ে যে এমন একটা মজার গল্প হয় যাবে তা আমি ভাবতে পারিনি। আর হবেই না কেনো? ছানাটি যদি হাড়ে-মাংসে দুষ্টু হয়, তখন?

দুষ্টু ছানার পদে পদে ঘটনা, পদে পদে গল্প। তার কাণ্ড দেখলে শুধু হাসিই পায় না; বিরাট চিন্তায় পড়ে যেতে হয় এই ভেবে যে, এই পুচিছ বিড়ালছানাটা এত দুষ্টুমি করে কীভাবে? কত বুদ্ধি তার!

আসলে দুষ্টুমি করতে বুদ্ধি লাগে। আর যদি দুষ্টুমির সাথে একটু বুদ্ধি মিশাল দেওয়া যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। এ-ছানাটি বুদ্ধির জোরে কী না করেছে, সেটাই হলো কথা!

এই একটু আগে সে কী করেছে শুনবে? কাউকে বোলো না, শরমের কথা।
চার বছরের মুনিরা গেল টয়লেট করতে। কী দরকার ছিল বিড়ালছানার ওইখানে যাওয়ার। আর গেলেই যদি বসে থাক চুপ করে। সে কী আর বসে থাকতে পারে? একটা কিছু তো করতে হবে। সে লেইমেরে গিয়ে চিকন জিহ্বাটা বের করে মুনিরার পেছনে চাটান দিয়ে দিল ভোঁ দৌড়।

জিহ্বার হালকা ছোঁয়ায় মুনিরা ভয়ে লাফিয়ে কান্না শুরু করে দিল। সে রাগে পায়ের স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বিড়ালছানাটিকে মারার জন্য তেড়ে গেল। গিয়ে দেখে বিড়ালছানাটি বারান্দায় শরীরটা ধনুকের মতো বাঁকা করে এমন ভাবে হাই তুলছে যে, এইমাত্র সে ঘুম থেকে উঠেছে, এর কিছুই জানে না সে।

বাড়িতে আছে একটা তাগড়া কুকুর। যেমন সাহসী তেমনি শক্তিশালী। সারারাত সজাগ থেকে বাড়ি পাহারা দেয় কুকুরটা। তার ভয়ে সহজে বাড়ি ঢোকা যায় না। অচেনা লোক দেখলেই সে ঘেউ ঘেউ আর ছুটোছুটি করে বাড়ি মাথায় তুলবে। সারারাত বাড়ি পাহারা দিয়ে কুকুরটি দিনের বেলা যখন ঘুমুতে যায়, তখন এই ফাজিল বিড়ালছানাটা তাকে ভীষণ জ্বালায়।

বিড়ালছানাটির যন্ত্রণায় কুকুরটি শান্তিতে ঘুমুতে পারে না। তার কানে, পেটে ও লেজে শুড়শুড়ি দেবে। হঠাৎ করে ঘুমন্ত কুকুরটার উপর লাফিয়ে পড়েই ফোঁস করে উধাও হয়ে যাবে। তখন কুকুরটা রেগে আগুন হয়ে যায়।

একদিন হলো কি, বিড়ালছানাটি লাফ দিয়ে গায়ে পড়তেই প্রচন্ড ক্ষেপে গেল কুকুরটা। তাকে ধরার জন্যে কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে দৌড়ল। ধরে ফেলবে এমন সময় বিড়ালছানাটি লোম-শরীর ফুলিয়ে ফুটবলের মতো গোল হয়ে দাঁড়িয়ে গেল আর এমনভাবে ফুসফাস করতে লাগল যে কুকুরটা তার কাছে যেতে সাহস করল না; ভয়ে লেজগুটিয়ে চলে এলো।

বিড়ালছানাটি দুষ্টু বলে এর ভক্ত সংখ্যা বেশি। পাড়ার ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা প্রায়ই ছানাটির দুষ্টুমি দেখতে চলে আসে মুনিরাদের বাড়ি। ওরা ছানাটিকে কোলে তুলে আদর করতে চায় কিন্তু ভয়ও করে। কোন সময় কী করে বসে তার ঠিক নেই।

সন্ধ্যার পর মুনিরা বই-খাতা-কলম নিয়ে পড়তে বসল। ব্যস তার সাথে সাথে বিড়ালছানাটিও বসে পড়ল। মুনিয়া বইয়ের পাতা উল্টায়, সে-ও উল্টায়। মুনিরা কাগজে রোল করতে যেই না স্কেল ধরে কাঠপেন্সিলে টান দিল ছানাটিও তখন নখ খিচিয়ে বইতে দিল টান। পরপর ফরপর করে ছিঁড়ে গেল বইয়ের পাতা। মুনিরা বিড়ালছানাটির কাণ্ড দেখে রাগের চোটে স্কেল দিয়ে তাকে দিল এক বাড়ি। ছানাটিও থাপমেরে স্কেলটা কামড়ে ধরে রীতিমত কুস্তি শুরু করে দিল। মুনিরা কিছুতেই ছাড়াতে না পেরে সে পাগলের মত মাকে ডাকতে লাগল।

মা এসে দেখেন, মুনিরা আর বিড়ালছানা মারামারি করছে। কেউ হারছে না, কেউ ভাগছে না। মুনিরার মা ছানাটিকে কয়েকটা থাপড় মেরে দূরে সরিয়ে দিতে চাইল কিন্তু ছানাটি স্কেল ছেড়ে মায়ের আঁচলে খামচি দিয়ে ধরে ঝুলে পড়ল। তাকে টেনে আলগা করা যাচ্ছে না। একদম ঝুলে লাটিমের মতো ঘুরছে সে। পরে কষে একটা বাড়ি দিতেই ছানাটি ফোঁস করে এক লাফে চলে গেল খাটের নিচে।

মুনিরা হাতের স্কেলটা নাড়িয়ে ছানাটিকে বলল, পড়ার সময় যদি তুমি আমার কাছে আস তবে তোমার পিঠে এই স্কেলটা ভাঙব। বেদম পেটানো হবে তোমাকে। এসব শুনে মুনিরার মা ‘হুঃ’ করে চলে গেল। বিড়ালছানার কোন খবর নেই।

মুনিরা মন দিয়ে একটা ছড়া পড়ছে। এমন সময় মিঁ-ঞাঁ-ও বলে ছানাটি এসে উপস্থিত। তার লেজটা খাড়া করে মুনিরার শরীর ঘেষে একেবারে তার কোলে উঠে বসল। মুনিরা ছানাটিকে মারবে কি, তার করুন চেহারা দেখে সে অস্থিরভাবে আদর করতে লাগল।

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×