somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসুখের ডায়েরী- ৩

১৪ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১.... আমার মগজের ভেতর যে মেশিনটা,
আমার আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের কারিগরি বিষয়টা দেখাশোনা করে তা বিকল হয়ে গিয়েছে
এখন সে সিদ্ধান্তহীন পড়ে আছে আমার মগজের শূণ্য খোলে
কেউ এসে নেড়েচেড়ে দেখতে পারেন
আমার মনে হয় প্রেম দিলে মেশিনটা আবার নড়েচড়ে প্রাণ পাবে
তারপর তার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টা ত্বরানিত হবে
তো আসুন আমাকে প্রেমের মত চুড়ান্ত এক পেইন দিয়ে মারুন
পেইঙ্কিলার হবে না আর নিঃশ্বাষ


২…
তোমাকে আমি পেয়েছিলাম কারাগারের
সবেচেয়ে নিকৃষ্ট সেলের স্যাতসেতে আধাঁরে
তোমার সুন্দর চিবুক সেখানে কয়েককোটি জোনাকী হয়ে জ্বলছিল
আমি তোমাকে ডাক দিলাম প্রজাপ্রতির ডানার মত গোপন শব্দে
তুমি ভয় পেলা আর চিতকার করে বললে আমি যেন তোমার কাছে না যায়
কারণ আমাদের দুজনের মাঝে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল
মানুষকে ঘরে বন্দী করে রাখার মত ্কোনদিন থামবে না এমন বৃষ্টি
কারাগার সেলের লোহার শিক গুলো যেন লোহা হয়ে জমে যাওয়া বৃষ্টির অঝোর ধারা আমাকে তোমার চোখে ঝাপসা করে দিচ্ছে


৩.........
টানা ২৪ ঘন্টা শ্যুটিং শেষে যখন ১১ তলা সিঁড়ি বেয়ে ঘরে ফিরলাম তখন মনে হলো
.সারা টা রাত তারাদের সাথে সাথে শূধু ক্যামেরারই কথা হয়.
আর আমি আমার ৬৭ ইঞ্ছি সাইজ এর দেহ চাপিয়ে চুপিয়ে ২২ ইঞ্ছি টেলিভিশনের ভেতর ঢুকে পড়েছি...
এখন আমাকে বামনের মত লাগে
আর বামনরা সুনেছি সার্কাসের জোকার হিসেবে ভাল হয়.
মানুষের একঘেয়ে কাজের অবসরে এই বিনোদনের ঠাট্টার শেষ কোথায়???

৪........
আমরা সবাই নার্সিসাস .
হাসপাতালের মূমূর্ষ রোগীকে আমরা রক্ত দান করে দিতে পারি
কিন্তু নিঃশ্বাষ দান করতে পারি না
আমরা সবাই দেহের অনুগামী.
চরম প্রেম পর্ব শেষে যখন প্রেমিক-প্রেমিকা সঙ্গমে লিপ্ত হতে যায়
তখন যদি দেখে পুরুষটা ধ্বজভংগ বা নারীটা কাম বৈমুখ তাহলে
সে সুন্দর প্রেম এক ফলাফলহীন মানসিক কসরতে পরিণত হয়
যার ফলাফল মৃত্যু ও জীবনের মত অনিবার্য দুরত্ব

৫............
আজ একটা লিফটের ভেতর আমি ও এক অপরিচিত মধ্যবয়স্কা নারী আর তার তরুনী মেয়ে উঠেছিলাম ,
মহিলাটি আমার দিকে এমন ভাবে তাকাচ্ছিল যে ,
তার মেয়েটা একটা লোভনীয় মাংসপিণ্ড আর
আর আমার বেচে থাকার নন্দনতাত্তিক ভিত্তি হলো তার মেয়ের শ্লীলতাহানি
কিছু কিছু মহিলার এই অতীব অনিরাপত্তা জনিত শরীরবোধ আমার কাছে মনে হয় ধর্ষণবোধের সমতুল্য

৬...........
এখন যে সময়ে আমরা আছি
সে সময়ের সবচেয়ে নিজের প্রতি সৎ মানুষ হলো সেই যে বিশ্বাষ করে " ব্যর্থতা জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন "

৭..........
আবাল বড়লোক পুজিবাদী শিল্পী আর সেনাবাহিনীর সেপাইদের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই

৮.......
কোন অপরিচিত কার সাথে দুরত্ব ঘুচিয়ে পরিচিত হই আসলে নিকট ভবিষৎ এ পরিচিত কারো সাথে দুরত্ব বাড়ানর জন্য

৯...........

আর আমি জাগিবো না, জাগিবার পেষ্টের মিন্ট ফ্লেভার স্বাদ আর আমি বহিব না
এই বলিয়া আলার্ম ক্লক এ আলার্ম দিয়ে আমি ঘুমাতে গেলাম
আমার সকাল বন্ধুরা বিদায় ,বিদায়, বিদায়
আমার সকল ঘেন্নাকারী শত্রুরা, এসো আমার বিছানায়

১০.........
অনেক অনেক বছরের আলো আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়,
আমাকে উৎপাত করে সমুদ্রের ঢেউমগ্ন
আত্মবিস্মৃতির নির্জনতায় এক লাইট হাউজের মত যান্ত্রিক সতর্কতার পাহারায়।
আমি চাই নিরবিচ্ছিন্ন তালাবন্ধ গুহার মত অন্ধকার।
যে অন্ধকারের সৈকত পশুদের খুরের চিনহে সংকেতময়,
যেখানে সুর্য ও নক্ষত্র দুইই নিজেদের ,এক ডাইনীর দেহের ভাঁজে হারিয়ে ফেলে
ভুলে গেছে মানব সভ্যতার আলোকের নপুংশক খোঁজ।
আমার রাতের দেহ হোক পশুর নিকষ চামড়ায় মোড়া এক কবরের বন্য অন্ধকার

১১...........

আমি বিক্রি হবো চরম এক বন্য নারীর কাছে
আমাকে যে শেকলে সে বেধে নিয়ে যাবে তার নাম প্রেম
তবে সে যেন আমার দেহ ছাড়া আর কিছু না খুজে ফেরে
আমি তার কাছে শুধু আমার দেহ বিক্রি করবো...চাইলে যোগাযোগ করুন

১২.............
এই অঝোর বৃষ্টি যেন অঝোর রক্তক্ষরণ
ব্যথার ঝাপটায় ঘুম ভেঙ্গে গেল
দেখলাম পায়ের কাছে নদী
ঘাষের বনে সবুজ রঙ খাচ্ছে আমার বিচ্ছিন্ন হৃদয়পিণ্ড
আহা তাকে দেখে মনে হচ্ছে যেন একখণ্ড মেঘ
আমার শুণ্যতা থেকে পিপাসা মিটিয়ে স্বপ্ন হচ্ছে তলে তলে বৃষ্টির বেশে
আর বমি হচ্ছে বমি
যেন এই অঝোর বৃষ্টি যেন অঝোর রক্তক্ষরণ

১৩...............
আমার প্রেতাত্মা হোক তোমার শিশুর না জন্মানো নতুন চেহারা

১৪...........
যেখানে গেলে হাড্ডিসার রুগ্ন মানুষ গুলোকে দেখে মনে হয় ,
তারা যেন মৃত্যুপুরীর ওপারে দোযখের কোন কেবিনে পুড়ছে নিজের রক্তের আঁচে,
সেইসব সস্তা হাসপাতালে গিয়ে কোনদিনো কোন রবীন্দ্র সঙ্গীত আমার মনে আসেনি,
আমার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ গান হতে পারেনি সেখানে , এমনকি গুনগুন ও করিনি।
এখানেই রবীন্দ্রনাথ এর গানের বিশাল ব্যর্থতা।
আমাদের যাপিত সময় যন্ত্রনা তার গানে নেই,আছে কোন অচ্ছুত বেদনাবোধ ,
ওই সস্তা হাসপাতালের মর্গে কোন কৃষাণীর গর্ভকালীন ক্ষুধায় মৃত্যুই সে গান নীরব থেকেছে চিরদিন

১৫.............কিছু না বুঝেই চিনেছিলাম শরত আর তার আকাশের পুরোনগ্ন চাঁদ ...আজ সব বুঝেও দেখছি আমি এখনো মাতাল হয়ে যাই এমন রাতে...মন হয় চাঁদের রঙ -এ একা আর আলোর মত আধারের শরীরে অবুঝ

১৬.............
না জানা সবচেয়ে ভাল...
কারন জানলে... সে অন্যকে জানাতে চায়্‌,যার ফলাফল চাপিয়ে দেয়া সাম্রাজ্যবাদ
ভার্সিটির শিক্ষক গুলো কে দেখলেই বোঝা যায় ছাগল গুলো
কি ভ্যা ভ্যা সুরে গান গায়
আর বলে এটা হল শাস্ত্রীয় সংগীত আর এসব না শিখে
যে রক গান গায় সে হল অশিক্ষিত গায়ক
আসলে সে যে জানে আল বাল ছাল দাস
হোয়ার শিক্ষা তাই চাপাতে চাই ,নিজের দাসত্বের ভার লাঘব করার জন্য
আমি বলি এর চেয়ে তাদের শীতকারো উত্তম

১৭............
আমার মনের রঙ-এ সমুদ্র তোলপাড়, অস্থির

১৮.........
কামের বেনীতে বাধছো প্রেমের ফুল
জানি সব ভং চং, ভুজুংভাজুং ইতিউতি
আসলে কি বলতে চাও
তা ক্লিয়ার করে কও
ঠিক মত চাইতে পারলে
পাবে সব ঠিকঠাক

১৯.............
আসুন গলায় গলা মিলিয়ে ,
ঠোটে ঠোঁট মিলিয়ে, দেহে দেহ মিশিয়ে,
মনে মন বিষের শক্তিতে জাগিয়ে,
গভীরে অগভীরতা দুলিয়ে আমরা
একসাথে সবাই " অসুস্থ আর বিকৃত " হই

২০.......... কতকিছু নিয়ে গান লিখলাম , কত জন এলো গেলো গানের ভেতরে
কত গান পাখির মত ডানা মেললো তোমার মরু ঠোঁটে...
আমার কত গান তোমাকে বিরক্ত করে তুললো গানের উপরেই...
কত গান তোমাকে নিয়ে পালালো ,
কত গান তোমার কাছ থেকে আমাকে নিয়ে গেল দূরে
অথচ আজ যখন আমাকে নিয়ে তুমি গান লিখলে প্রথম,
আমি যখন গান হয়ে গেলাম তখন মনে হচ্ছে
কি মনে হচ্ছে জানি না !!!!!! আমি আমি কে তোমার গানে????/

২১ .যেসব দেহের কামোত্তেজনা প্রবল না , সেসব দেহ কোন শরীরই না ,
তা হলো দুর্গন্ধ ছড়ানো পঁচা মাংশের ডাস্টবিন
তাদের এই কামনা -বাসনা হীন সন্ন্যাস জীবনের বিপরীতে
আমার হিটলারের মত গ্যাস চেম্বার বানাতে কোন দ্বিধা নেই
আর তারা তো ইতিমধ্যেই একটা গ্যাস চেম্বারের ভেতর নিজেদেরকে ছুড়ে দিয়েছেই
এই জীবনহীন জীবিতদের মৃত্যু কাম্য হোক সবার

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×