somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিয়াউর রহমানের কবর হলো আজ ...

১৩ ই নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আজন্ম আওয়ামী লীগ সাপোর্ট করি। যদিও কখনই মিছিল-মিটিং করি নাই, কেবল ভোটের সময় ভোট দিয়েছি নৌকা মার্কায়।

আর সে কারণেই হয়তোবা আমি জিয়াউর রহমানের ভক্ত নই একেবারেই। তার রাজনৈনিক দর্শন চুড়ান্ত রকমের ফালতু বলেই মনে করি। তবে একটা ব্যাপারে আমার কোন দ্বিমত নেই। সেটা জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক সততা। হ্যাঁ স্বীকার করতেই হবে জিয়াউর রহমান তার নিজের, পরিবারের কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য একটা পাই পয়সারও দূর্নীতি করেন নাই।

এহেন জিয়াউর রহমান যখন নিহত হলেন, তখন আমরা সবাই ভাঙ্গা স্যুটকেস আর তালি মারা নাইট ড্রেস দেখে আপ্লুত হয়েছিলাম আবেগে। তঃকারীন সরকার তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের কিছু সূযোগ-সূবিধা প্রদান করে। যার মধ্যে বিপুল মূল্যমানের দু'টি বাড়ী ছিল। রাষ্ট্র নিয়ম নীতি মেনে যে কাউকে সূবিধা দিতেই পারে।

এরমধ্যে অনেক জল গড়িয়েছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনায়। খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তারেক-কোকো বাবা-মার পরিচয়ের সুবাদে ব্যবসা করে বৈধ-অবৈধ প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন আজ।

নতুন সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ এবার খালেদার নামে বরাদ্দকৃত ক্যান্টমেন্টের বাড়ী নিয়ে প্রশ্ন তুলে। বিএনপি'র দাবী এটা আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে করেছে, কারণ এর আগে তারা গণভবন হাসিনার নামে বরাদ্দ দিয়ে ধরে রাখতে পারে নাই। হক কথা। আমার নিজেরও কিছুটা অস্বস্থি ছিল হাসিনার নামে গণভবন বরাদ্দ নিয়ে। যেটা কখনই সুবিবেচনা প্রসূত বলে মনে হয় নাই।

যাই হোক। সরকারী সিদ্ধান্তে বেরিয়ে আসে খালেদাকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী বরাদ্দে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল এবং সেটা আইনানুগও ছিল না। দেয়া হয় বাড়ী ছাড়ার নোটিশ। খালেদা জিয়ার সামনে হয়তো দু'টি পথ খোলা ছিল। এক আন্দোলন করে জনগণ কে বোঝানো যে এটা আওয়ামী প্রতিহিংসা আর দুই - আদালতে যাওয়া। প্রথমটির একটি খারাপ দিক হলো এতে জনগণ খালেদাকে লোভী মহিলা, ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করেন ইত্যাদি ভাবতো। তবে আদালতে না গিয়ে আজকের পরিস্থিতি (বাড়ী ছাড়া) সৃষ্টি হলে সাধারণ জনগণের একটা বড় অংশ খূব সহজেই এটাকে আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা বলেই মনে করতো। দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ ইত্যাদি নিয়ে জনগণ এমনিতেই পেরেশানিতে আছে। সো তারা খূব সহজেই বুঝতো সরকার উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর তালে আছে।

বিএনপি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। একটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন - খালেদা জিয়া এদেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের অন্যতম। শীর্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার আইন আদালতের উপরে আস্থা রাখাটাই সমিচিন। আদালত রায় দিল - সরকারী সিদ্ধান্ত বৈধ। বিচার মানি, কিন্তু তালগাছ আমার টাইপের কথাবার্তা বলা শুরু করলো বিএনপির লোকজন। তাহলে আদালতে যাওয়ার প্রয়োজনটা ছিল কেন ? এরপর আপিল করা হয়েছে। আপিলে স্থিতাবস্থা রাখার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সাতাবস্থা জারী করেননি, শুনানির দিন ধার্য করেছেন। বাড়ী ছাড়ার সময় পার হলে আপনারই তো উচিত বাড়ীটা ছেড়ে দেয়া। আপিলে জয়লাভ করলে সরকারের মূখে তুরি মেরে এই বাড়ীতেই তো আবার ফিরতে পারতেন বিজয়ীর বেশে। আর আওয়ামী লীগের কোর্টে বল দিয়ে এসেছে বিএনপি নিজেই। মওদুদ আহমেদের মতো একটা নরকের কীট থাকলে এরকমটাই সম্ভব।

অনেকেই অনেক কথা বলছেন আজ। হয়তো এটা খালেদা বা বিএনপি'র প্রেষ্টিজ ইস্যু। একটু অন্যভাবে চিন্তা করেন। খালেদা জিয়ার আজ অনেক কিছুই আছে, সম্মান, অর্থ, বাড়ী-গাড়ী কোন কিছুরই অভাব নেই। তারপরও একটা বাড়ীর জন্য পূরো দেশের মানুষকে জিম্মি করা !!!

জিয়াউর রহমান তার জীবদ্দশায় কোন ব্যক্তিগত সূবিধা নেন নাই। তার কোন আত্মীয়ের নাম আমরা জানতাম না। আর আজ !!! তারেক-কোকো কোটিডতি, সাঈদ ইস্কান্দার শাহিন, দুহিন এরকম কতো নাম আমরা জানি। তারপরও একটা বাড়ীর জন্য খালেদা জিয়াকে হরতাল ডাকতে হয়, আন্দোলনের ডিক দিতে হয় এমন একটা বাড়ীর জন্য যাতে সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই।

কি করলেন খালেদা জিয়া ? আদালতে গিয়েও আদালতকে অবজ্ঞা করলেন কি ? না, তিনি আসলে জিয়াউর রহমানকেই কবর দিলেন চির তরে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:২৬
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×