إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَفَعَهُ حَسَنٌ وَفِطْرٌ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنْ الْوَاصِلُ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا صحيح بخاري / كِتَاب الْأَدَبِ بَاب لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ
সেই ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষাকারী নয়, যে শুধু বিনিময়ে তা পালন করে। বরং সে ব্যক্তিই আত্মীয়তা রক্ষাকারী যার সাথে আত্মীয়তা ছিন্ন করার পরও সে তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
________________
তথ্য সূত্র:হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার থেকে বর্ণীত। বুখারী-কিতাবুল-আদাব। মিশকাত ৪৭০৬: অধ্যায়: সৎকাজ ও সদ্ব্যব্যবহার
ব্যাখ্যা: সাধারণত দেখা যায়, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা ধনী ও সম্পদশালী, যাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখলে কোন না কোন ফায়দা লাভ করা যায়, লোকজনেরা কেবল সে সব আত্মীয় স্বজনদের সাথেই সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। কিন্তু যাদের সাথে এ স্বার্থের বোঝাপরা নেই সে সব আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে যথেষ্ট ঔদাসিন্যতা প্রদর্শন করা হয়। আর যে সব স্বজনদের সাথে মনমালিন্য অথবা কোন স্বার্থজনিত সংঘাত বিদ্যমান থাকে শতকরা ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রে তাদের সাথে কোন সম্পর্কই রাখা হয় না। অথচ আলোচ্য হাদীসটির ভাষ্যমতে এ কথা স্পষ্ট যে, প্রকৃত অর্থে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী তারাই যারা সম্পর্ক ছিন্নকারী আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিজ আগ্রহ ও উদ্যেগে সম্পর্ক স্থায়ী রাখে। হযরত আবু বকরের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের কয়েকজন একবার হযরত আয়েশার বিরুদ্ধে চারিদিকে জঘন্য রকমের অপবাদ ছড়িয়ে দেয়। নিজের মেয়ের নামে এ ধরণের অপবাদ ছড়িয়ে পড়ার কারণে আবু বকরকে ভয়ংকর রকমের বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এ অবস্থায় তিনি অপবাদ রটনাকারী আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার সংকল্প করেন। এ প্রেক্ষাপটে কোরআন শরীফের নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
وَلَا يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنكُمْ وَالسَّعَةِ أَن يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا ۗ أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের মধ্যে যারা প্রাচুর্য ও সামর্থের অধিকারী তারা যেন এ মর্মে কসম খেয়ে না বসে যে, তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, গরীব-মিসকীন ও আল্লাহর পথে গৃহত্যাগকারীদেরকে সাহায্য করবে না ৷ তাদেরকে ক্ষমা করা ও তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করা উচিত ৷ তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়।– আল কোরআন: সূরা-নূর, আয়াত-২২
এক কথায়, যারা বিনা শর্তে আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে এবং এ সম্পর্ক বজায় রাখার পথে স্বার্থ ও সংঘাত যাদের জন্য কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, ইসলামের পরিভাষায় তারাই প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। কেবল দই মিষ্টির বিনিময়ে যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে তারা ইসলামী পরিভাষায় আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়।
http://www.islaminbox.tk