রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে সাংবাদিকদের তৈরি গুজব বলে প্রশাসন উড়িয়ে দেয়ার পর অবশেষে প্রশ্ন বিক্রির ৬০ হাজার টাকাসহ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে আটক করেছে মতিহার থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলো মাসুম ও জয়ন্ত। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে একে অপরকে দোষারোপ করেছে।
এর সঙ্গে কিছু শিক্ষক ও প্রশাসনের কর্মকর্তা জড়িত বলে ছাত্রলীগের একটি সূত্র দাবি করে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সোমবার ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ই-২ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিটের একটি প্রশ্নপত্র ছাত্রলীগের কিছু কর্মীর কাছ থেকে লাখ টাকা দেয়ার শর্তে মাসুম রেজা নামের এক শিক্ষার্থী কেনে। কথামত বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই শিক্ষার্থী ৬০ হাজার টাকা নিয়ে শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী জয়ন্ত কুমার সরকারের সঙ্গে দেখা করতে যায়। পরে ছাত্রলীগ কর্মী রকি ও রবি টাকা লেনদেন নিয়ে মাসুম এবং জয়ন্তকে ধাওয়া করে। তারা আত্মরক্ষায় সিনেট ভবনের পাশে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছে চলে যায়। পরে মাসুম রেজা উপস্থিত পুলিশ, সাংবাদিক ও ছাত্রলীগ কর্মীদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়। সন্ধ্যার পর ছাত্রলীগ রাবি শাখার স্থগিতকৃত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আরেকজন নেতা মতিহার থানায় যান। সেখানে ওই দুই নেতার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগের রাবি শাখার বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তিনি প্রশ্নপত্র বিক্রির ৬০ হাজার টাকার মধ্যে মতিহার থানা পুলিশকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আটকৃত ছাত্রলীগ কর্মীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। স্থগিতকৃত কমিটির সহ-সভাপতি রেজওয়ান আহমেদ শুভ্র একই রকম অভিযোগ করে বলেন, প্রশ্নপত্র বিক্রির টাকাসহ ধরা পড়া দুই কর্মীকে আটকের পর পুলিশের সঙ্গে দফা রফা করে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক তাদের ছাড়িয়ে এনেছে। তবে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু তার বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে চাপে ফেলতে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ষড়যন্ত্র করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত। তাদের মাধ্যমেই কয়েকটি ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। তারা টাকা-পয়সার ভাগও পেয়েছেন।
মতিহার থানায় কর্মরত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম টাকাসহ দু’জনকে আটকের কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১০ ভোর ৬:২৭