somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যানজটের সমাধান দেবে ১১ নম্বর বাস

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা দক্ষিণ এশিয়ার একটি দরিদ্র দেশে বাস করি। দরিদ্র হবার কারণে আমাদের সমস্যাও অনেক। কিন্তু চাইলেও এ সব সমস্যার সমাধান আমরা রাতারাতি করতে পারবো না এবং পারছিও না।

নাগরিক জীবনে আমাদের অধিকার কতটুকু, সেটা আমরা যেমন জানি না, আমাদের সরকার বাহাদুরও জানে বলে মনে হয় না। জানলেও করার কিছু নেই।

যানজটের কারণে দৈনিক আমাদের কত শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়, তা নিয়ে টাক্কু বা আধা টাক্কু গবেষকরা গবেষণায় মাতুক। কিন্তু ম্যাংগো-পাবলিককে অফিস বা কর্মস্থলে যেতে হবে আবার ফিরতে হবে নাড়ির টানে।

আমি ছা-পোষা মানুষ। নগরীর খিলগাঁওয়ে থাকি। ওখানে কোনোদিনই কারেন্ট যায় না। তবে মাঝে মাঝে কারেন্ট বেড়াতে আসে। অন্যদিকে পরিবহণ মালিকরা এলাকাটির গুরুত্বহীনতা বিবেচনা করে ওই রুটে কোনো বাস-সার্ভিস রাখেনি। 'একুশে' ও 'মিডওয়ে' নামের দুটো বাস- সার্ভিস রয়েছে। মাগার ওই পোড়ামুখী সার্ভিস দুটো কাওরান বাজার আসে না।

অতএব, শ্রীচরণই আমার ভরসা। রেললাইন ধরে সোজা হাঁটতে হাঁটতে কাওরান বাজার আসি। যাবার সময় ৬ নম্বর বাসে বাদুর-ঝোলা হয়ে মৌচাক পর্যন্ত গিয়ে আবার হেঁটে খিলগাঁও সি ব্লকের ভাড়া বাসায় পৌঁছি।

ওই এলাকায় আমাদের পত্রিকার গেটা ছয়েক সাংবাদিক থাকেন। তারা সাধারণত রিকশা যোগে মৌচাক এসে ফার্মগেটগামী বাস ধরেন। আমি রেললাইন ধরেই হাঁটি। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, অধিকাংশ সময়ে আমি তাদের আগেই অফিসে এসে পৌঁছে যাই। তাদের বিলম্বের কারণ আর কিছু নয় ---- মহামান্য যানজট।

যানজট নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলেন। আমি বলি না। আমি দেখতে পেয়েছি, যানজটের কারণে রাজধানী ঢাকায় এক্সিডেন্টের হার কমে গেছে। অন্তত প্রাণঘাতী এক্সিডেন্ট কমে গেছে।
যানজট সমস্যার সমাধানও আমি পেয়ে গেছি। আর তা হচ্ছে '১১ নম্বর বাস'। দুই পা-কেই আমি ১১ নম্বর বাস বলি।

এতো বড় সমস্যার সমাধান পেতে আমাকে কোনো বিদেশী কনসালটেন্ট ফি গুণতে হয়নি। টেন্ডারও ডাকতে হয়নি। আমার বিশ্বাস, সরকার ঢাকাবাসীকে পায়ে হাঁটতে উৎসাহিত করলে পরিবেশ দূষণ কমবে। আর রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ যানজট দেখলে আমরা বুঝতে পারবো, কোনো যোগ্য মন্ত্রী তালেবর বোধ হয় কোথাও যাচ্ছেন অথবা প্রধানমন্ত্রী এই মাত্র অফিস সেরে বাসায় ফিরছেন। একটু নিঃশ্বাস ফেলে আমরা আবার যে যার পথে হাঁটবো। রাস্তা তো আমাদের নয়---ওটা মন্ত্রীর, প্রধানমন্ত্রীর, রাষ্ট্রপতির; এমনকি পুলিশের আইজিপির। আমরা হলাম কুনু ব্যাং ঠুটো জগন্নাথ। গামছা হারিয়ে বাবা আদমের মতো নেংটো হয়ে 'ইয়া নফসি ইয়া নফসি' করছি।

আচ্ছা 'ইয়া নফসি ইয়া নফসি' করা ছাড়া আমাদের কি কোনো উপায় আছে? আমাদের আবাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল সাফ জানিয়ে দিলেন, ট্রানজিট ফি আমরা নেবো না। মন্ত্রী মশাই, যানজট নিয়ে আমার মাথাব্যথা আপনারা তো তাড়িয়েই দিলেন। এজন্য সাধুবাদ পেতেই পারেন। এখন কি বলতে পারেন, চুক্তিটি কত বছরের জন্য করেছেন ? ওটা কি জাতিকে দয়া করে জানাবেন? আমি এটা এই জন্যই বলছি, চুক্তি মোতাবেক ভারতীয় গাড়ি চলাকালে বাংলাদেশী কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। এতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের পণ্য আটকে আর্থিক ক্ষতি হলে, হোক না। সমস্যা নেই। আর পাবলিক না হয় আমার মতই ১১ নম্বর বাসে চড়বে।

এই চুক্তিকে ট্রানজিট কিভাবে বলা হলো, সেটা আমার কাছে বোধগম্য হয়নি। এটাতো স্রেফ করিডর। বাংলাদেশ কোনো ট্রানজিট চুক্তি করেনি। বরং সেভেন সিস্টারে ভারতের সামরিক সংঘাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করছে। আর কেন বিনিয়োগ করছে, সেই অপরাধে ভারত বাংলাদেশ থেকে চড়া হারে সুদ আদায় করে ছাড়বে।

যানজট আমাকে এখন আর ভাবায় না। ১১ নম্বর বাস আছে না!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৫৫
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×