somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় রাজনীতিবিদগণ, আপনাদের দায় শোধ করেন, দেখবেন ইভটিজিং এমনিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে

০১ লা নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইভটিজিং নিয়ে অনেকেই অনেককিছু লিখছেন। অনেকেই অনেক কারণ খুঁজে বের করছেন। প্রতিকারের উপায়ও বাতলে দিচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু প্রধান একটি কারণকে কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলেই আমার মনে হচ্ছে। তা হল নষ্ট রাজনীতি।

আমাদের দেশের নষ্ট রাজনীতি দিয়ে ক্রমাগত রাজনীতিকীকরণ এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইভটিজিংয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আমাদের দেশে ক্রমাগত শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। এই বেকারদের প্রধান কাজই হচ্ছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে দু'পয়সা কামাই করা। এই পয়সা কামাই করতে গিয়ে তারা এলাকার নেতা-উপনেতা-পাতিনেতা-উপপাতিনেতাদের আশ্রয়ে রাজনীতি করছে। রাজনীতি করতে গিয়েই তারা হয়ে উঠছে অপ্রতিরোধ্য ইভটিজার। কারণ তারা এক একজন অমুকলীগের অমুক ভাইয়ের চামচা কিংবা তমুকদলের তমুক ভাইয়ের শিষ্য। এরা দিনে গার্লস স্কুল, মহিলা কলেজের সামনে আড্ডা দেয় এবং রাতে কানা-গুপচিতে বসে গাজা-ফেনসিডিল খায়। এই আড্ডার পয়সা আসে অমুকলীগ কিংবা তমুকদলের বড় ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজি কিংবা অমুক ভাইয়ের সরাসরি অনুদানে। একটু গভীর চিন্তা করলে দেখা যাবে এই আড্ডার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও আসতে পারে এবং আসেও।

স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অনেক ছাত্রও ইভটিজিং করে কিন্তু গভীরে খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে এরাও অমুকলীগ অথবা তমুকদলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যই বেশি। ইভ টিজিং করার জন্য যে অনৈতিক সাহসের দরকার হয় তা আমাদের নষ্ট রাজনীতি এদের মধ্যে সহজেই প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে। অরাজনৈতিক ছাত্র যে একেবারেই নেই তা বলছি না তবে তারা ঐসব ছাত্রদের দেখে দেখেই উৎসাহিত হয় এবং তাদের ইভটিজিংয়ের মাত্রাও ওদের মত অসহনীয় নয়।

এছাড়াও এই ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাই আমাদের দেশে কোন শিক্ষানীতিকে বাস্তবায়ন হতে দেয়নি, বলা যায় কোন শিক্ষানীতিই আমাদের ছিল না। বর্তমানে একখান জোড়া-তালি মার্কা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, যা একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি হতে পারত যদিনা শিক্ষানীতিখানা রাজনৈতিক কুট-কচলার মধ্যে পতিত না হতো। সুতরাং উপযুক্ত শিক্ষানীতির অভাবে ছাত্রদের বেকার ও নৈতিকতাহীন হয়ে যাওয়া এবং ইভটিজিার হয়ে যাওয়া রাজনীতির ঘাড়েই চাপবে।

ক্রমাগত রাজনীতিকীকরণের ফলে এখন গ্রামে গঞ্জেও ভুইফোড়ের মত জন্ম নিচ্ছে অমুকলীগ আর তমুকদলের পাতি-উপপাতিনেতাদের। এইসব পাতি-উপপাতিনেতারা কেবল ইভটিজারই নয়, জোর করে মেয়েদের তুলে নেয়া, ধর্ষণ করা ইত্যাদি অনেক কুকীর্তির জনক। যার অনেক খবরই বাইরে প্রকাশিত হয় না। রয়ে যায় লোক-চক্ষুর আড়ালে। এইসব নেতা নামক ইভটিজার-ধর্ষকগুলোর হাত অনেক লম্বা। প্রয়োজনে তারা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও সুপারিশ আদায় করতে পারে।

সুতরাং আমরা এ কথা নির্দ্ধিধায় বলতে পারি ইভটিজিংকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে আমাদের নষ্ট রাজনীতি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে বলছি-ইভটিজিংয়ের বর্তমান ভয়াবহ রূপের জন্য আপনারা মোটেই কম দায়ী নন বরং অন্য একক কোন কারণের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। নিজেদের দায় শোধ করেন, দেখবেন ইভটিজিং এমনিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মঞ্চে বক্তৃতা, আইন তৈরী কিংবা মানববন্ধন প্রয়োজন হবে না।

আমি জানি তা আপনারা পারবেন না।

*আইন হল মাকড়সার জালের মত যা কেবল ছোট মাছিদেরই আটকাতে পারে, বোতলা-ভিমরুলরা সহজেই তা ছিড়ে চলে যেতে পারে-জনাথন সুইফ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪৩
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×