বর্তমান সভ্যতার সবচেয়ে বড় প্রহসন হলো-এখানে দাগী আসামীরা কারাগারে ফ্রী খাবার, বাসস্থানের সুযোগ পায় আর নীচের ছবির মতো লাখো শিশু প্রতিরাতে ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে রাতের পর রাত অভুক্ত থাকে আর খোলা আকাশের নীচে রাত কাটায়। ওদের কোনো ঠিকানা নেই, ওদের কোনো আহার নেই , ওদের কোনো আশ্রয় নেই।
দুইঃ
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর ট্যাক্সিচালানো নিয়ে আজ একটা ছবি ব্লগের পাতায়, ফেসবুক সহ বিভিন্ন মিডিয়ার শোভা পাচ্ছে। আমি প্রথমে মনে করেছিলাম মনে হয় উনি ট্যাক্সি ক্যাব চালিয়েই হয়তোবা জীবিকা নির্বাহ করেন। তারপর দেখলাম , না তা না। উনার গুনকীর্তনে আজ সবমিডিয়া মুখরিত।
নীচের লোকদুটোকে চিনেন কিনা দেখেন তো-
এবার আরেকটি ছবি দেখুন-
চিনতে পারলেন। একজন হলেন বঙবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। আরেকজন মহান মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান। উনারা যখন সাধারণ মানুষের কাতারে নেমে এসে নিজ হাতে কোদাল ধরেন , তখন সেটা হয়ে যায়-চাণক্য রাজনীতির কূটকৌশল। ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমেদানিজাদের ছেড়া শার্টের একটা ছবি ফেসবুকে, নেটে লাখোবারের বেশি শেয়ার হয়েছে।ভালো খুবই ভালো। জনগণের নেতাতো এরকমই হওয়া উচিত। অথচ এদেশের একজন প্রেসিডেন্টও সাধারণ ঘরেই বসবাস করলেন।এ দেশের মানুষকে ভালো বাসেন বলেই চারপাশে বলার মতো কোনো নিরাপত্তা রক্ষীই রাখলেন না। আর সে ঘরেই শহীদ হলেন। আরেকজন প্রেসিডেন্ট মারা যাওয়ার পর কিছুই পাওয়া গেলোনা। শুধু পাওয়া গেলো একটা ভাঙা স্যুটকেস । কিছুদিন আগে দেখলাম আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হেঁটে হেঁটে গ্রামের একটা বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে পার হচ্ছেন। এসব আমাদের চোখেই পড়েনা।
এবার আরকটি ছবি দেখুন-
আমিতো বলবো, বর্তমান পৃথিবীর মাঝে শুধুমাত্র সন্তানের ভালোবাসায় প্রধানমন্ত্রীত্বের আসনকে একপাশে রেখে উনুনে হাড়ি চাপানোর নজির আর একটিও নেই।অন্য কোনো দেশের কেউ যদি,যেমন মনে করেন মিশেল ওবামা ঠিক এভাবে রান্নাঘরে এসে চুলো ধরাতো তাহলে আমরা বাহবায় মুখরিত হতাম। অথচ এখানেও আমরা সেই কটু রাজনীতি খুঁজেছি। সন্তানের জন্য মায়ের এ ভালোবাসাকে উদারভাবে নিতে পারিনি।
নীচে এবার আরেকটি ছবি দেখুন। ধন্যবাদ মইনুল ভাই ছবিটির জন্য।
কত সাধারণ জীবনযাপন। আবহমান বাংলার যেন এক আটপৌরে মহিলা খাবারের থালা বাড়িয়ে দিয়ে অতিসাধারণ রমনীর মতো এক প্লেট খাবারের প্রতীক্ষায় আছেন।
ভাগ্যিস ইনি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া , যদি হিলারি হতেন-তবে প্রশংসায় লাখো কোটিবার ফেসবুকে ,নেটে শেয়ার হতো। আমরা বাহবা দিতাম।
কিন্তু এছবিগুলো, এ কথাগুলো আমার কোথাও বলবো, জ্বিনা । কোথাও শেয়ার করবো। জ্বিনা। যদি আমার স্বার্থের বাইরে চলে যায়?
এগুলোকে আমি কি বলবো , আমাদের মানসিক সংকীর্ণতা, নাকি বিবেকের বৈকল্যতা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:৫৪