somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা যেভাবে নামাজ পড়ি (প্রমাণ পর্ব: কুরআন ও হাদিস)

১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আয়াত ও বাণী

'জানার জন্য প্রশ্ন করো যারা জানে/স্মরণ রাখে/যিকর করে তাদের'- এই আয়াতের মাধ্যমে কুরআন এবং হাদিস এর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও প্রশ্ন করার বিধান তৈরি হয় (২১:৬-৭)।

'এবং তাদের পথ অনুসরণ করো, যারা আমার দিকে ফিরেছে।' (৩১:১৫)- এই আয়াতে সুস্পষ্টভাবে মাজহাবের ইমামদের অনুসরণ ইঙ্গিতবহ রয়েছে। কারণ, আমরা জানি, ধর্মবিধান যাঁরা লিখিত আকারে লিখেছেন, তাঁদের মধ্যে মাজহাবের ইমামরাই সর্বসম্মতক্রমে-
* সবচে পূর্ববর্তী। (মাজহাবের ইমামদের আগে কেউ ইসলামিক ফাতওয়া এত বেশি পরিমাণে লেখেননি।)
*সবচে সার্বিক দিক দিয়ে সৎ ও সৎকর্মশীল। (তাঁদের জীবনী এই সাক্ষ্য দেয়।)

'এই সেই কুরআন যার মাধ্যমে আল্লাহ অনেককে পথপ্রদর্শন করেন এবং অনেককে করেন পথভ্রষ্ট।'- এই আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে, কুরআনে থাকলেই বা হাদিসে থাকলেই তার যথেচ্ছ ইন্টারপ্রিটেশন করা সরাসির পথভ্রষ্টতার কারণ হবে।

'তোমরা যারা ঈমান এনেছ, মানো আল্লাহকে, মানো রাসূল দ. কে এবং তোমাদের নির্দেশদাতাদের।'- এই আয়াতের মাধ্যমে জীবিত মৃত নির্বিশেষে সুনির্দিষ্ট নির্দেশদাতাকে মানার আদেশ রয়েছে। নির্দেশদাতা চিনে নেয়ার লক্ষণও কুরআন শরীফে বর্ণিত হয়েছে।

'প্রত্যেক ব্যক্তিকে কিয়ামাতে তার ইমামের সাথে জড়ো করা হবে।', 'নিশ্চই আমার উম্মতের মধ্যে ১০ জন ইমামের আবির্ভাব ঘটবে।' সিহাহ সিত্তার এই দুই হাদিসে প্রমাণিত হয়েছে, ইমাম মানেই রাসূল দ. শুধু একা নন। আর মানুষ তার ইমামের সাথে উপস্থাপিত হবে।

'তোমরা বণী ইস্রাঈলের বাহাত্তর বিভাজন নিয়ে সমালোচনা করছ। কিন্তু জেনে রাখো, আমার উম্মতের মধ্যে ৭৩ বিভাজন হবে যার মধ্যে একটি জান্নাতি। আর তারা হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বা আমার জীবন ও আমার সাহাবা রা. গণের জীবনের অনুসারীদের দল।'- বুখারী সহ বেশিরভাগ গ্রন্থের এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামে মুসলিম ছাড়া কোন পরিচয় নেই, এ কথায় সম্পূর্ণ হাদীসকে অস্বীকার করা হয়, ফলে তা কুফরি।

'আমি মানুষকে বিভিন্ন গোত্র ও জাতিতে বিভক্ত করেছি যেন তারা পরস্পরের পরিচয় জানতে পারে ও পরস্পরকে ডাকতে পারে।'- কুরআনের এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, মানুষ বর্ণগত জাতি, দেশ, ধর্মীয় গোত্রে বিভক্ত থাকবেই এবং এই বিষয়ের নির্ধারণকারী স্বয়ং আল্লাহ এবং তিনি এই বিষয় নির্ধারণ করেছেন এই জন্য, যেন পরস্পর পরস্পরকে বাঙালি/অবাঙালি, হানাফি/শাফিয়ি নামে আহ্বান করতে পারে।

'এবং তোমাদের মধ্যে যা মতভেদ রয়েছে আল্লাহ (শেষ দিবসে) তার সমাধান করে দিবেন।'- এ কথার তাফসির দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, একাধিক সত্য মতবাদ মানুষের মধ্যে থাকতেই পারে যা নিয়ে তারা দ্বন্দ্ব করবে।

নামাজের মধ্যে হাত কাঁধ পর্যন্ত না তোলা/ রাফে ইয়াদাইন না করা

জাবির ইবনে সামুরা রা., রাসূল দ. বললেন, ঘোড়ার অসার লেজের মত করে হাত তুলছ কেন? নামাজে মনোযোগী হও। (মুসলিম)

ইবনে মাসউদ রা., 'তোমাদের কি দেখাবো না কীভাবে রাসূল দ. নামাজ পড়েছেন?' এবং দেখানোর সময় শুরুর পরে আর কখনো তিনি হাত উপরদিকে তোলেননি। (তিরমিযী। ইমাম তিরমিযী র. হাসান শ্রেণীভুক্ত করেছেন, ইবনে হাজম এবং আহমাদ শাকির র. সহীহ্ শ্রেণীভুক্ত করেছেন।)

আলী রা. প্রথম তাকবীরের সময় নামাজে হাত তুলতেন, তারপর আর নয়। (বায়হাক্বী। বুখারীর প্রধান ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজর, জাইলাই এবং আইনী র. সহীহ্ বর্ণনাক্রমভুক্ত এবং সহীহ্ শব্দযুক্ত হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।)

খলিফা উমার রা., ইবনে মাসউদ রা. সহ আরো কয়েকজন সাহাবার নাম উল্লেখ করে ইমাম তিরমিযী র. বলেন, বেশিরভাগ সাহাবা রা. এভাবেই নামাজ পড়তেন।

কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চই এ রাসূল আপন মন থেকে কিছুই বলেন না। যা বলে থাকেন, তা সরাসরি ওয়াহি হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেছেন, তোমরা পার্থক্য করো না আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দ.'র মধ্যে, তা করলে তোমরা ক্বাফিরুনা হাক্বা বা প্রকৃত খাঁটি কাফিরে পরিণত হবে।
রাসূল দ. বলেছেন, আমাকে তোমরা যেভাবে অনুসরণ করো, খুলাফায়ে রাশিদীনকে সেভাবেই অনুসরণ করবে।
তিনি আরো বলেছেন, আমার প্রত্যেক সাহাবা রা. আঁধার রাতে এক একজন নক্ষত্র। যে কাউকে পূর্ণ অনুসরণ করো, গন্তব্যে পৌছে যাবে। (উভয় সিহাহ সিত্তাহ অন্তর্ভুক্ত)


আমরা যেভাবে অযু করি

হজরত উসমান রা. বললেন, আমি কি তোমাদের দেখাব না, কীভাবে রাসূল দ. ওযু করতেন? তারপর তিনি তিনবার করে প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করলেন। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ওযু, হাদীস ২৩)
উমার রা.'র সন্তান সাহাবা আবদুল্লাহ রা. বলেন, রাসূল দ. বলেছেন, যে-ই ওযু করবে এবং মাথা মাসাহ্ করবে, তাকে আগুনের গলাবন্ধনী থেকে মুক্তি দেয়া হবে। (বুখারী শরীফের অন্যতম প্রধান ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজর আস্কালানী র. তালখীসুল হাবীর এ এবং আল্লামা শাওকানী নাইনুল আওতার এ এ হাদীসকে সহীহ্ হিসাবে নিশ্চিত করেছেন।)
চামড়া বা নিশ্চিদ্র আবরণী ছাড়া অন্য কোন মোজা/ গ্লাভস (সূতা বা ছিদ্রযুক্ত) এর উপর দিয়ে মাসাহ্ করা যাবে না। আহলে হাদীস মোবারকপুরী সাহেব এবং আহলে হাদীসের ফাতওয়া নাজিরিয়া দ্বারাই এটা প্রমাণিত।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়

আবু হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন,
* সূর্যের মাধ্যমে পড়া তোমার ছায়া তোমার দৈর্ঘ্যের সমান হলে যুহর,
* দ্বিগুণ হলে আসর,
* সূর্যাস্তের পর মাগরীব,
* রাতের এক তৃতীয়াংশ পেরুনোর আগে ইশা,
* রাত পোহানোর আগে অন্ধকার থাকা অবস্থাতেই পড়ো ফজর নামাজ।
(মুয়াত্তা ইমাম মালিক র., প্রথম খন্ড, অষ্টম পাতা, নবম হাদিস।)

আমরা যুহর পড়ি একটু দেরি করে, কারণ সেটা অকাট্য আদেশ

কারণ রাসূল দ. বলেছেন,
তাপ যখন খুব বেড়ে যায়, যুহর নামাজ শুরু করতে দেরি করো, তাপ প্রশমিত হওয়া পর্যন্ত। কারণ নিশ্চই সূর্যের তাপ জাহান্নামের আগুনের একটা প্রকাশ (যন্ত্রণার কারণ)। (মুসলিম)

আসর পড়ি ওয়াক্ত হবার সাথে সাথে নয়, সামান্য দেরি করে

কারণ ঠিক উপরের হাদীস এবং রাসূল দ. সূর্য সাদা থাকা পর্যন্ত এবং পরিষ্কার থাকা পর্যন্ত রাসূল দ. আসর পড়তে দেরি করতেন। (আবু দাঊদ)

ফজরের সময় আকাশ সামান্য উজ্জ্বল হওয়ার ক্ষণ

রাসূল দ. বলেছেন, ফজরের নামাজ পড়ো আকাশ উজ্জ্বল হওয়া শুরু করলে। কারণ, এটাই মহা পুরস্কারের সময়কাল। (তিরমিযী)
ইমাম তিরমিযী র. বর্ণনা করেন, বেশিরভাগ সাহাবী রা. এই সময়েই ফজর পড়তেন।

ইকামাত

রাসূল দ.'র মুআজ্জিন বিলাল রা. নামাজে একবার আযান দিতেন এবং একবার ইকামাত দিতেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, আতহারুস সুনান। হাদীস সহীহ্ শ্রেণীভুক্ত।)

রাসূল দ.'র আরো দুজন মুআজ্জিন আবু মাহজুরা রা. এবং সাওবান রা. এভাবেই আযান দিতেন যা লা-মাজহাবীদের 'ইমাম' শাওকানী র. দ্বারা ভেরিফাইড। হাদিস বর্ণিত নায়লুল আতহার এ।

মাথা ঢাকা/টুপি পড়া

উবনে উমার রা. বর্ণিত, রাসূল দ. সাদা টুপিতে মাথা ঢেকে নামাজে দাঁড়াতেন। (ইমাম সুয়ূতি র. বর্ণনা, নির্ভরযোগ্য হাদীস, সিরাজুম মুনীর গ্রন্থ) আহলে হাদীসের ফাতওয়া সুনাইয়া তে বর্ণিত, রাসূল দ. সর্বদা পবিত্র মাথা ঢেকে নামাজে দাঁড়াতেন।

কানের লতি/শেষ অংশ পর্যন্ত হাত তোলা

কাতাদা রা.- রাসূল দ. কে নামাজ পড়তে দেখেছি, কানের লতির সমান উচ্চতা পর্যন্ত হাত তুলতে দেখেছি। (মুসলিম)

নাভীতে হাত বাঁধা

সাইয়্যিদুনা আলী রা. যুক্ত করেন, রাসূল দ. নাভির উপরে এক হাত এবং নাভির নিচে আরেক হাত এভাবে নাভিতে হাত বাঁধতেন। (আবু দাঊদ, ৭৫৬)

মৃদু/শ্রবণসীমার নিচে/মনে মনে বিসমিল্লাহ পড়া

আনাস রা., আমি জীবনভর নামাজ পড়েছি রাসূল দ., তারপর আবু বকর, উমার এবং উসমান রাদ্বিআল্লাহু আনহুমের নেতৃত্বে। তাঁদের কাউকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়তে শুনিনি। (মুসলিম)

ইমাম ছাড়া অন্য নামাজীরা (মুক্তাদি) নিশ্চুপ থাকেন

যখন কুরআন পড়া হয়, নিশ্চুপ থাকো, শোনো। তোমাদের উপর করুণা বর্ষিত হবে। - কুরআন।

সাইয়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, আবু হুরাইরা, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস এবং আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রাদ্বিআল্লাহু আনহুম বর্ণনা করেন, এই আয়াত দুই নির্দিষ্ট বিষয়ে নির্দেশ করে, ১. বক্তব্যের সময় কুরআন পড়া, ২. নামাজের সময় কুরআন পড়া। (তাফসীর ইবনে কাসীর)

রাসূল দ. থেকে বর্ণিত, সারণি/কাতার সোজা করো, ইমাম তাকবীর বললে বলো, নিশ্চুপ থাকো, ওয়ালাদ্ দ্বল্লিন বললে আমিন বলো। (মুসলিম)

কিন্তু, ইমাম তাকবীর বললে সবাই যেমন মনে মনে তাকবীর বলেন, তেমনি ইমাম ওয়ালাদ্ দ্বল্লিন বললে সবাই নিশ্চুপভাবে আমিন বলবেন। একটা মনে মনে আরেকটা জোরে, এটা হতে পারে না একই বর্ণনার আলোকে।

সমবেত নামাজরত অবশ্যই সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন না

আতা ইবনে ইয়াসার রা.'র প্রশ্নের জবাবে জাইদ বিন সাবিত রাদ্বিআল্লাহু আনহু বলেন, ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজীর কোন সূরা পড়া নেই। (মুসলিম)

আবদুল্লাহ ইবনে উমার রা., যে-ই ইমামের পিছনে দাঁড়াবে, ইমামের সূরা পড়া তার জন্য/তার পক্ষ থেকে পড়া হয়ে যায়। (বায়হাক্বী) + একা পড়লে তাকে নিজে পড়তে হবে। (আতহারুস সুনান, ৮৯ পৃ., হাদীস সহীহ্ শ্রেণীভুক্ত)

জাবির রা., যে এক রাকাতেও সূরা ফাতিহা পড়ল না, তার নামাজ ব্যর্থ। ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা নিজে পড়া অপ্রযোজ্য। (তিরমিযী, হাসান সূত্র, ইমামের পিছনে সূরা পাঠ না করা বিষয়ক অধ্যায়)

ইমাম বুখারী র.'র শিক্ষক ইমাম হাম্বল র. সূত্রে ইমাম তিরমিযী র. বলেন, একা নামাজ পড়লে সূরা ফাতিহা পাঠ্য। ইমামের পিছনে অপাঠ্য।

আমীন অবশ্যই অশ্রবণীয়/অনুচ্চ/মনে মনে পড়তে হবে

রাসূল দ. যে হাদীসে আমিন পড়তে বলেছেন, সেই হাদিসেই আল্লাহু আকবর পড়তে বলেছেন এবং রুকুর পর উঠলে আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ পড়তে বলেছেন। (মুসলিম)
অর্থাৎ, রাব্বানা লাকাল হামদ এবং আল্লাহু আকবার যেমন মুক্তাদি মনে মনে পড়েন, সেভাবে আমিন পড়তে হবে। অন্যথায় তিনটাই জোরে পড়ার কথা।

আবু মাআম্মার এবং উমার রা., ইমাম তাআউজ, বিসমিল্লাহ, আমীন এবং রাব্বানা লাকাল হামদ মনে মনে পড়বেন। (আইনী)

জলসাতুল ইস্তিরাহা, তাশাহহুদ

সংক্ষেপে, জলসাতুল ইস্তিরাহা যা আমরা করি, তার বর্ণনা আবু দাঊদ, বাইহাক্বী, নাসবুর রায়াহ্ এ রয়েছে।

রাসূল দ. বসার সময় (আত্তাহিয়্যাতু/তাশাহহুদ) আল্লাহ এক এই ঘোষণা পাঠের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলির সাথে তর্জণী একত্র করে বৃত্ত তৈরি করে (শূণ্য) তর্জণী উঁচিয়ে বাকি হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে এক নির্দেশ করে আবার হাত স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতেন। (মুসলিম)

রাসূল দ. বলেছেন, নামাজে বসার পর এটা পড়ো (আত্তাহিয়্যাতু),

সকল মৌখিক, মানসিক ও শারীরিক উপাসনা শুধু আল্লাহর জন্য। আপনার প্রতি সালাত হে নবী দ., আপনার প্রতি আল্লাহর করুণা ও আশীষ। আমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, শান্তি হোক আল্লাহর সকল সত্যপথিক দাসদের প্রতি। আমি সাক্ষ্যদাতা যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ দ. তাঁর পক্ষ থেকে কর্মসম্পাদনকারী ও রাসূল দ.।
(বুখারী, মুসলিম)

রাসূল দ. বলেন, সর্বশ্রেষ্ঠ দরুদ (রাসূলের প্রতি সালাত) হচ্ছে এটা, আর তিনি নামাজেও সাহাবা রা. দের এটা পড়তে বলেন (দরুদে ইব্রাহীম),

হে আল্লাহ, আপনার সালাত (সাল্লি আলা=সালাত বর্ষিত হোক) বর্ষিত হোক সম্মানিত মুহাম্মাদ দ. এবং তাঁর বংশধরগণের উপর, যেমন করে আপনার সালাত বর্ষিত হয়েছিল সম্মানিত ইব্রাহিম আ.' এবং তাঁর বংশধরগণের উপর (রাসূল দ.'র পূর্বপুরুষগণের উপর),
হে আল্লাহ, আপনার করুণা বর্ষিত হোক সম্মানি মুহাম্মাদ দ. এবং তাঁর বংশধরগণের উপর, যেমনকরে আপনার করুণা (বরকত, বারিক) বর্ষিত হয়েছিল সম্মানিত ইব্রাহিম আ. এবং তাঁর বংশধরগণের উপর।

তুলি দুই হাত, করি মোনাজাত, হে রহীম রহমান!

আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা. এক ব্যক্তিকে নামাজের আগে হাত তুলে মুনাজাত করতে দেখে তাকে নামাজ শেষ করতে দিয়ে পরে বললেন, নিশ্চই রাসূল দ. নামাজের পর মুনাজাত করতেন হাত তুলে। (মাজমাউজ জাওয়ায়িদ অনুসারে এই হাদীসের বর্ণণাক্রমে বর্ণিত প্রত্যেক বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত এবং তাঁদের প্রত্যেকের হাদীস সহীহ্ ক্রমভুক্ত হয়েছে )

তারাবীহ্ এর অস্তিত্ব স্বীকার করে না 'আহলে হাদীস' রা

মাতা আয়িশা রা. বর্ণিত, রাসূল দ. রমজানে এবং রমজানের বাইরে রাতের নামাজ (রাতের নামাজ মানেই সালাতে তাহাজ্জুদ, ভোররাতে ফজরের অনেকটা আগে যেটা পড়া হয়) তা এগারো রাকাতের বেশি পড়েননি। শেষের তিন রাকাত ছিল বিতর, তাই আট রাকাত তাহাজ্জুদ।

এর মানে যে কোন একটা, হয় রাসূল দ. তারাবীহ্ পড়েননি, তবু উমার রা. তা আবিষ্কার করেছেন এবং উসমান রা. ও আলী রা. তা খুশি মনে মেনে নিয়েছেন (অসম্ভব কলঙ্ক) এবং তাঁর পরেও তা পালন করেছেন অথবা রাসূল দ. রমজানেও তারাবী পড়েও তারপর আবার ভোররাতে তাহাজ্জুদ পড়তেন।

অসংখ্য অগুণতি সহীহ্ হাদিস দিয়ে প্রমাণিত যে, তারাবীর নামাজ রাসূল দ. জামাতে দুদিনের পর তৃতীয়দিন পড়াননি এই শংকায় যে, তা তাঁর সম্মানে ফরজ হয়ে যেতে পারে।

উমার রা.'র আগ পর্যন্ত তা একা একাই পড়া হত। তিনি সেই শঙ্কার সময় মুক্তির কারণে আবার জামাত শুরু করেন। তিনিই তারাবীতে খতমের প্রচলন করেন। তারাবী সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ , যা না পড়লে শাস্তিযোগ্য অপরাধ (পরকালে)। এর অস্তিত্ব অস্বীকার করা বা এর সাথে তাহাজ্জুদ গুলিয়ে নিয়ে আট রাকাত পড়া বা আট রাকাত তারাবী পড়াই সুন্নাত মনে করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ অস্বীকার করার প্রতিশব্দ। যে আমল না করলে গুনাহ হয়, সেই আমল নেই মনে করলে তা কিছু পরিমাণে হলেও কুফরি।

উমার রা.'র হাদীস সহীহ সব গ্রন্থেই আছে। উল্লেখ অপ্রয়োজনীয়।

এরপর রয়েছে সুন্নাত, কাজা, বিতর, কুনূত, ঈদের নামাজ প্রভৃতি বিষয়। সেগুলোও এমনভাবেই বর্ণিত। প্রমাণিত। তবে এক মাজহাবের নামাজের রীতির সময় অন্য মাজহাবের বা যে কোন বর্ণনার রীতি মিশানো যাবে না। তাই এমন ব্যক্তির কাছে জেনে নিতে হবে, যে হানাফী কিনা তা আমরা নিশ্চিত।

নানা পদ্ধতি মিশালে কার্বন এর মত ঘোসো একটা মৌল দিয়ে একই সাথে যেমন হীরাও তৈরি করা সম্ভব আবার কার্বন মনোক্সাইডের মত সাইলেন্ট কিলার গ্যাস বা পটাশিয়াম সায়ানাইডের মত সবচে ভয়ানক সিন্থেটিক বিষও তৈরি করা সম্ভব।

ক্রম:

হাদিসের শুদ্ধতা ও সাধারণ্যে এক ভুল ধারণা। Click This Link

নামাজ, শুদ্ধভাবে নামাজ এবং নামাজের পদ্ধতি নিয়ে ইদানীংকার অস্বস্তিকর অস্পষ্টতা
Click This Link

তিনি (ইমাম আবু হানিফার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি)
Click This Link

আমরা যেভাবে নামাজ পড়ি (প্রমাণ পর্ব: প্রাসঙ্গিক বিষয়)
Click This Link

নামাজের ক্রমকাল নির্ণয়ে ভবিষ্যত পোস্ট: ইসলামিক টাইমলাইন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৩
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্যতার কলঙ্ক ইজরাইল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৮

ইহুদিদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম তোরাহ। এটি ৫ টি পুস্তকের সমন্বয়ে গঠিত। ইহুদি এবং সকল একেশ্বরবাদীরা বিশ্বাস করে তোরাহ হচ্ছে প্রফেট Moses ( মুসা নবী ) এর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক থেকে ভালোবাসার পথে: আমার এবং মীমের গল্প

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ২:৩৭

## প্রথম অধ্যায়: অনলাইন থেকে অফলাইনে

ফেসবুকের পাতায় একটি সাধারণ দিন। আমি তখন নিউইয়র্কের ব্যস্ত শহরে বসে থাকি, চারপাশে মানুষের কোলাহল আর কাজের চাপ। হঠাৎ করেই ফেসবুকে একটি পোস্টে কমেন্ট করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে প্রায় প্রত্যেকেই স্ব স্ব স্হান থেকে সমস্যার সৃষ্টি করেন।

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩০ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮



শেখ সাহেব পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এসে ৩য় দিন ( ১/১২/১৯৭২) দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদটা তাজউদ্দিন সাহেব থেকে নিয়ে নিয়েছিলেন; ৯ মাস জেলের পর, উনার দরকার ছিলো কিছুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্যারিয়ার কথন: ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং সর্তকতা।

লিখেছেন জাদিদ, ৩০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৪

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং, পেশা হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্মানজনক সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ায় অনেকেই এই পেশায় যুক্ত হয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে একজন মানুষকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ মনটা কেমন যেন অনেক কিছু চিন্তা করছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



সকালের মৃদু আলোয় মোড়ানো একটি মনোরম দৃশ্য ধরা পড়েছে এই ছবিতে। এটি একটি খোলা জায়গা, যেখানে সবুজের সমারোহ এবং প্রকৃতির ছোঁয়া স্পষ্ট। ছবির বাম দিকে গাছের সারি এবং ডান... ...বাকিটুকু পড়ুন

×