এখন জ্ঞান যুগ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবাদে, সমগ্র বিশ্ব একটি গ্রামে পরিণত হচ্ছে। মানুষ আজ অনেক বেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্র নির্ভর। মানুষের জীবন এখন বৈষয়িক এবং আনন্দ উচ্ছ্বাস ও ভোগ বিলাসিতার দিকে ক্রমধাবিত। সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মানুষকে চলতে হয় আর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সুফল ভোগে ইসলাম কষনও বাঁধা দেয় না। একদিকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ইত্যাদি বহুবিধ সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও অন্যদিকে শূণ্যতা, অভিযোগ ও অভিমানের প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয় মানুষের চোখে, মুখে ও আচরণে। শক্তি, সামর্থ ও শিার বৈষম্য এবং মতা ও পদ্ধতির অপব্যবহার, ইত্যাদির ঘোরপাকে চাওয়া পাওয়ার অসামঞ্জস্যতায় অতৃপ্ত ও বেদনাক্রান্ত মানুষ পথহারা, বিভ্রান্ত। নানাভাবেই বিকৃতি, অশান্তি ও অতৃপ্তি গ্রাস করছে মানুষের অন্তরকে। ইতিহাস স্বাী, যুগে যুগে যে সকল মানুষ ইসলাম হতে দূরে সরে গেছে, তারাই তিগ্রস্ত।
আল্লাহ বলেন, (অনুবাদ) ‘‘যারা সত্বীসাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্য রয়েছে গুরুতর শাস্তি।’’ (সুরা ২৪, আন নূর, আয়াত ২৩) আমি অবশ্যই ইভ টিজিং এর বিপ।ে আমার মা বাবা, ভাই বোন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব এবং সহকর্মী ও প্রতিবেশিসহ স্ত্রী পুত্র ও কণ্যা বা অন্য যে কেউ টিজিং এর শিকার হোক, এমনটা আমি কখনও চাই না। আইণ ও শালিস কেন্দ্রের (মানবাধিকার সংস্থা) তথ্য অনুযায়ী বিগত ৪ মাসের মধ্যে সারাদেশে ১৪ জন নারী টিজিং এর শিকার হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। ঘটনাগুলো অনাঙ্খিত এবং মর্মান্তিক। এ অবস্থার উত্তরণ হোক এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।
আল্লাহ আরও বলেন, (অনুবাদ) ‘‘ঈমানদার পূরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে, এতে তাদের জন্য আছে পবিত্রতা। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।’’ (সুরা ২৪, আন নূর, আয়াত ৩০) ইভ টিজিং কে কেন্দ্র করে বর্তমানে যে সকল টিভি ‘টক শো’ গুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে তার অধিকাংশই প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘটনা ও তথ্য বহুল। তারপরও প্রশ্ন থাকে, ঐ ‘টক শো’ গুলো কতটা মানসম্পন্ন এবং ফলপ্রসু?
আল্লাহ বলেন, (অনুবাদ) ‘‘হে নবী আপনি আপনার পতœীগণকে ও কণ্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়, এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ মাশীল, পরম দয়ালু।’’ (সুরা ৩৩, আল আহযাব, আয়াত ৫৯) ইভ টিজিং প্রতিরোধে বর্তমানে নারীদের পে যে আইণটি প্রণয়ন করা হয়েছে তা যে কোন টিজিং প্রতিরোধ আইণ নয় কেন? ইভ টিজিং আইণটির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাব, প্রতিক্রিয়া এবং ভারসাম্য ও অপপ্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিশেষ বিবেচ্য মনেকরি। নরনারী উভয়ের প্রোপটেই টিজিং আইণ প্রযোজ্য হওয়া উত্তম।
আল্লাহ বলেন, (অনুবাদ) ‘‘ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে, তারা যেন সাধারণত যা প্রকাশমান, তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার কাপড় বদেশে ফেলে রাখে . .।’’ (সুরা ২৪, আন নূর, আয়াত ৩১) কোন ভাবে কি একজন নারী, অন্য একজন পূরুষকে প্রলুদ্ধ করতে পারে বা এমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, যে কারণে কখনও ইভ টিজিং এর পরিস্থিতি তৈরি হয় অথবা কেউ ইভ টিজিং এর জন্য দুঃসাহস পায়। যদি এমন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে ঐ সকল েেত্র ইভ টিজিং প্রতিরোধের ল্েয, একজন নারী বা পূরুষকে আপনি কি কি উপদেশ ও পরামর্শ দিচ্ছেন?
এছাড়ও সতর্কবাণী উচ্চারণে আল্লাহ বলেন, (অনুবাদ) ‘‘ব্যভিচারী পূরুষ কেবল ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণী নারীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পূরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্য হারাম করা হয়েছে।’’ (সুরা ২৪, আন নূর, আয়াত ০৩)
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দ্বীন ইসলামের অনেক মূল্যবোধ ক্রমান্বয়েই প্রতারিত ও বাধাগ্রস্ত এছাড়াও গভীর ও সূক্ষ্ম চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে কিছু মুসলিম দেশে দীর্ঘমেয়াদী ও সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের বীজ বপণকরা হচ্ছে। বল প্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে দিয়ে কোন কাজ করানো বা না করানো, ইসলাম সাধারণত অনুমোদন দেয় না। আপনি বিবেচনা করলে বুঝতে পারবেন যে, বোরকা পড়া বা না পড়া, একজন মানুষের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার অধীন। বাংলাদেশ প্রোপটে বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই প্রস্ফুটিত। ভাল কাজে আদেশ বা অনুপ্রেরণা এবং মন্দ কাজে নিষেধ বা বাঁধা দেয়া প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য।
মানুষের প্রতি আশার বাণী উচ্চারণে আল্লাহ বলেন, (অনুবাদ) ‘‘কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, নিশ্চয় আল্লাহ মাশীল, পরম দয়ালু।’’ (সুরা ২৪, আন নূর, আয়াত ০৫) আমি বিশ্বাসকরি, দ্বীন ইসলাম বিশ্বের সমগ্র মানুষের জন্য, মানবতা ও কল্যাণের জন্য এবং দ্বীন ইসলাম মানব জাতির পথ প্রদর্শক।
কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্রতা দূর করা, উপযুক্ত সময়ে নরনারীর বিবাহ দেয়া ও যথাযথ পর্দা রাকরাসহ নৈতিক, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধকরা এবং স্বামী স্ত্রী ও নরনারীর পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকরা, ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে সুফল পাওয়া যায়।
উত্যক্তকরণ বিরোধী কর্মশালা এবং তথ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য সচেতন পাঠকসহ সকল শ্রেণী ও পেশাজীবি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এছাড়াও উত্যক্তকরণের প্রতি আমার ব্যক্তিগত প্রতিবাদ জানাচ্ছি। (সুন্নাহ)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:৫৫