লালনের প্রেমে সব শ্রেণির মানুষ একাকার।
পয়লা কার্তিক। ছাতিমফুলের গন্ধে হেমন্তের প্রকৃতি মাতোয়ারা। কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ার কালিন্দীর নদীর তীরে মানুষের ঢল। নারী-পুরুষের কোন ভেদাভেদনেই। বাউল সম্রাট লালন শাহের ১২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে ৫ দিনব্যাপী লালন মেলার। দেশি-বিদেশি লালন ভক্তরা এবং সংস্কৃতি প্রেমিক সাধারণ মানুষ প্রাণের টানেই যেন ছুটে এসেছে। বিকাল ৪ টায় আমরাও মেলার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। বাসে গান শুনেই যে কেউ বুঝতে পারবেন এর গন্তব্য কুষ্টিয়া। গানের তালে তালে যাত্রীরা মাতাল। এমন ভাবে বাউলগানে নিজেকে বিলিয়ে দিই মনে হয় আমি বাউল সাধক । শুধু সাধক নয় সাধক সম্্রাট বটে, ঢাকা থেকে যাচ্ছি বলে কথা। ইট-পাথরের ঢাকা ছেড়ে গ্রামের পথে যেতে কার না ভালো লাগে। সাথে যদি থাকে মন মাতানো বৃষ্টির গান । যাত্রাপথে সারাক্ষণ বৃষ্টির শুভেচ্ছা নিতে নিতে গন্তব্যে যেতে বেশ দেরী হয়। ৫ ঘন্টার ভ্রমণ শেষে রাত ৯ টার দিকে কুমারখালির দবির মোল্লা রেলগেটে নির্মিত লালন গেটে বাস থেকে নামি। চায়ের দোকানের বিভিন্ন চ্যানেলের নানা ধরণের গানের সুরকে পরাস্থ করে এক নারী বাউল শিল্পীর গানে হৃদয় ভরে যায়। দুয়েক পা সামনে যেতেই রেল লাইনের ধারে একটি গানের আসর দেখে দর্শক হয়ে যাই। মন ব্যস্ত লালনের কথার যাদুতে। এটা নাকি মেলার বাইরের অংশ। আর থাকা হলো না। তিন চাকার ভ্যানে চড়ে ৫ মিনিটেই হাজির হলাম লালন মাজার গেটে। ঝাকড়া চুলের দুই পাগল প্রবেশমুখে তাদের পাগলামিতেই জানিয়ে দিলেন লালন মেলার স্বাগত বার্তা। মেলার সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় দিকগুলো পুরো দু‘দিনধরে ঘুরে ঘুরে দেখে নিলাম।