somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে হাসে

২৮ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৭১ এ গণহত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হত্যাযজ্ঞ। দেশে ঐক্যের প্রয়োজনে সরাসরি হত্যা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নয় এমন কোলাবরেটরদের বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করে দেন। কিন্তু সরাসরি মানবাধিকার লংঘনের সঙ্গে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি আদালতে ছিল

ফলে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধুর ঘরের বন্ধু বিভীষণদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাকিস্তান জোড়া লাগানোর জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন খুঁজতে হয়েছিল। ১৫ অগাস্ট ছিল সেরকম একটি সকাল,রাতের চেয়ে অন্ধকার।

৭২ থেকে ৭৫ নিয়ে কলতলা কাসুন্দিতে গিয়ে লাভ নাই। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশে ভারতবর্ষে যা ৪৭এর পরে বাঙ্গালী মুসলমান, পাকিস্তানী মুসলমান,ভারতীয় শিখ ও হিন্দুরা করেছিল, ৭২এর আওয়ামী মুসলমান তাই করেছে।দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মতো ইমোশোনালী ডিস অনেস্ট মানুষ আফ্রিকা ছাড়া আর কোথাও নাই।

আর পশ্চিমা ঐপনিবেশিক হেজিমনি যেহেতু এখনো চলছে,তাই ডিভাইড এন্ড রুল এখনো বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান চালানোর মূলমন্ত্র।

সিরাজ শিকদারের মৃত্যু আর পাশাপাশি কলতলার তিলকে তাল করা কেচ্ছা কাহিনী দিয়ে যে শেখ কামালের খলতাকে চিত্রায়িত করা হয়েছে, বা ডালিম আন্টিকে অপহরণের কাল্পনিক কাহিনী ছড়ানো হয়েছে, তাতে গুজব নির্ভর সমাজ মুহূর্তে পিতা থেকে স্টেপফাদারের মর্যাদাহীনতায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে বঙ্গবন্ধুকে। প্যাট্রিয়ট কবিতার দেশপ্রেমিক্ মুজিবকে প্রথমে ফুল দিয়ে বরণ ও পরে কুতসার পাথরে রিসালদারের মোসলেহ উদ্দীনের বুলেটে সিঁড়িতে রক্তমাখা লাশে আমরা একজন মানুষকে কি অভাবিত প্রতিদান দিয়েছি।

উনার ভাগ্নেদের কেউ কেউ দেশটাকে মামুর দেশ ভেবেছিলেন। এটি দক্ষিণ এশীয় চরিত্র। মামু জানতেই পারেন না ভাগ্নে রবীন্দ্র রচনাবলী বেচে ফেনসিডিল খেয়েছে।

একটা লোক যার জীবনের বড় অংশ জেলে কেটেছে, বাউল কখনো গৃহস্থ হয়না। গোটা দেশ তার সংসার। পাকিস্তানী রক্ত শোষক জোঁক ছাড়াতে কত ত্যাগ, কতো বঞ্চনা। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী গবেট সেপাইয়ের বাচ্চা বঙ্গবন্ধু কে তা না জেনে তার শরীরে হাত তুলেছে,বাংলাদেশের অনুরূপ গবেট সেপাই গুলি করেছে এই মুক্তির প্রতীককে। কারণ কাপুরুষ অফিসারদের সাহস হয়নি বাংলাদেশ পাহাড়ে গুলি ছুড়তে।

আর বুদ্ধিজীবী সমাজ বিড়ি ফুকে ফুকে বঙ্গবন্ধুর কুতসা রটিয়েছে। গিয়ে কখনো জানায়নি সত্যিই কোথায় কি হচ্ছে।তাজউদ্দীনকে মাইনাস করে বংগবন্ধুকে চোরস্য চোরেরা ঘিরে রাখতো। কিন্তু তখন চোরদেরো একটা স্ট্যান্ডার্ড ছিল। যে কোন মেধাবী তরুণের জন্য পিতার দরজা খোলা ছিল।লেহকরা চোখ গরম করতো কিন্তু ফিজিকাল হয়নি এখনকার মত।

আমাদের বাঙ্গালী মুসলপানের ইসলাম প্রাপ্তিতে যে আওরঙ্গজেব পাইওনিয়ার ছিলেন, তিনি তার পিতা শাহজাহানকে হত্যা করেছিলেন। সুতরাং নব্য মুসলমানরা জাতির পিতাকে হত্যা করে পাকিস্তানপন্থী হবে এতো জানা কথা।৯৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ পাকিস্তান পন্থী ছিল। এই সময় যুদ্ধাপরাধীদের ধর্মীয় বিভাজন ও ব্যবসা রমরমা হয়। ২০০১ সাল নাগাদ নিজামীর গাড়ীতে বাংলাদেশের পতাকাটি হাসতে শুরু করে। আমরা বুদ্ধিজীবী সমাজ গাজাখুরী গল্প বলে বাংলাছবি বাতিল করে হলিউডমুখী হলাম।
কারণ নিজামীর পতাকাবাহীগাড়ী হলিউডি ইনসেপশন। বড় উঁচু মাপের ডোপিং।

কেউ চাইলে তালিবানদের অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়, আবার পরে তালিবান্দের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে। তারা চাইলে নিজামী মন্ত্রী হন, গোলাম আজম ঢাকা এয়ারপোর্ট হয়ে হিথরোগামী হয়, বাংলাভাই সমাজসেবক হয়,দশট্রাক আম আসে ভারতের সাতবোন রাজ্যে পৌঁছাতে।

বৃটিশ শাসনের অবসান আমেরিকান ড্রিম কলোনী নিয়ে আসে ভারতবর্ষে।ভারতবর্ষের তারুণ্যের মনে মার্কিন খোয়াব তাদের টিশার্ট থেকে মনোজগতে।

বাংলাদেশের কৃষকেরা সাবসিডি দিয়ে যাদের দশটাকা বেতনে পড়িয়েছে, তারা এখন অভিবাসী হবার জন্য মরিয়া। এদিকে আওয়ামী ও বিএনপি মুসলমানো চায় কিছু মানুষ বাড়ীঘর ফেলে চলে যায়। ওরা সেনা জেনারেলদের মতো চোউকিদার হয়ে ঢুকে দেশের মালিক হয়ে বেরুবে।

সাতচল্লিশের পর আযাদ রবিরায়ের ভারত যাত্রার পরিবেশ তৈরী করেছে, ৭১ এর পর মুক্তি বিহারীর দালানে উঠে পড়েছে, আর এখন টেন্ডার হাসানেরা এয়ারপোর্টে হায় হোসেন কে সি অফ করে প্লেন টেক অফ করার পর রক্ষক হিসেবে টেক অভার করে।

বাঙ্গালী মুসলমানের অণুপ্রাণ সঙ্গীত তাই, পরের জায়গা পরের জমি ঘর বানাইয়া আমি রই,আমিতো ভাই ঘরের মালিক নই।

দখলদার বৌদ্ধরাজা,হিন্দুরাজা,মুসলমান বাদশা,বৃটিশরাজ,পাকিস্তান সেনারাজ, বাংলাদেশ সেনা রাজ, বিএনপি জঙ্গী রাজ, বর্তমানে আওয়ামী মুসলমান রাজ, বাঙ্গালীর জীবনচক্রে এতো বাধা বিপত্তির পরেও এবার একটা পরিবর্তনের আলো দেখা যাচ্ছে।

মনে হচ্ছে মানুষ জাগছে,ঘরে ঘরে। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে বর্তমান সময়ের বাপমা বাচ্চা মানুষ করছে।কোন কথায় কান না দিয়ে। ৭মার্চের ভাষণের প্রাসঙ্গিকতা এইখানে। মুজিব হাজার বছরের শৃংখল খুলে বাঙ্গালীকে বললেন যাও এই তোমাদের মুক্তির পতাকা।এবার এই মুক্তিকে আমরা স্ট্যাচু অব লিবার্টী বানাবো নাকি লালসবুজ ঘুড়ি বানাবো, না কি খেজুর গাছ রোপণ করবো সেটা আমজনতার কাজ।মুজিবের কাজ মুজিব করেছেন। তার সমালোচনা অপ্রাসঙ্গিক। বাপের কাসুন্দী ঘাঁটা বিকৃতি।
উনাকে ইতিহাস থেকে মুছে দিয়ে বিএনপির জলপাই চাষের প্রতিদান রূপগঞ্জের জামাল পেলো সর্বশেষ।

তাজউদ্দীনকে আওয়ামীলীগের হিংসুটিরা সরিয়ে দিয়ে যে রাজনৈতিক মূলা চাষ করেছিল,তার বাড়তি ফলন দল থেকে দেশে,পার্টি অফিস থেকে ডিসি অফিসে। এই তাজউদ্দীন বাঙ্গালীর শিক্ষার প্রতীক,মুজিব যেমন মুক্তির। সমাজ থেকে শিক্ষা ও শিক্ষকদের মর্যাদা তাজউদ্দীনের বিদায়লগ্ন থেকেই কমতে শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী তার শিক্ষক কে অধীনস্ত ডিজি হিসেবে পেয়ে যে দুর্ববহার করেছিলেন,তা দেখে অন্য এক শিক্ষক স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন।

আর আওয়ামী লীগের চাদাবাজ টেন্ডার ও চাকরী সন্ত্রাসীরা সিনেমার খলনায়কদের চেয়েও ভীতিপ্রদ মিডিয়ায়। বাচ্চাদের খবর দেখানো ঠিক হচ্ছে কীনা জানিনা। অবশ্য এধরণের জন্তু চিনে রাখা ভালো যাতে হঠাত দেখা হলে সামলাতে পারে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর দুর্নীতিবাজদের বিচারের কাজটি বোধ হয় ধরা প্রয়োজন। কারণ দুর্নীতির সাফল্যগাথা এতো উতকটভাবে চোখ ধাঁধায় ঢাকা শহরে যে শিক্ষক,বাবা,মা,অভিভাবকের উপদেশ বাণীচিরন্তনী হিসেবে নাকচ করে দেয় তরুণ সমাজ।

তাই দুর্নীতি দমন কমিশন কে সক্রিয় করে খলনায়কদের পরিণতি দেখাতে হবে মিডিয়ায়। জাতির জনক হত্যার খলনায়কদের একাংশের শাস্তি যেমন বাচ্চাদের দেখিয়েছে, অন্যায় করলে শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একি ভাবে শিশুদের উপদেশ গ্রন্থের যেমন কর্ম তেমন ফলের বাস্তবায়ন দেখাবে। তাজউদ্দীন-নজরুল-মনসুর-কামরুজ্জামান হত্যার নেপথ্য নায়কেরা শাস্তি পেলে বাচ্চারা শিখবে আদর্শ ভ্রষ্টের পরিণতি কি হয়।

মুদির দোকানে ঝুলানো সদা সত্য কথা বলিবে, বা নিউটনের তৃতীয় সূত্র প্রত্যেক ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে, এসব নির্বাহী ও বিচার বিভাগের লোকেরা শৈশবে শিখেছেন। তারা আশা করা যায় এবার তারা বাংলাদেশের শিশুদের সামনে প্রমাণ করবেন ওইসব নীতিবাক্য আজো আউটডেটেড হয়ে যায়নি।
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×